ফেব্রুয়ারীরটা নিঃসন্দেহেই এ জাতির গর্বের মুকুট, কথাটি স্বীকারোক্তির প্রশ্নে নির্দ্বিধায় আমারও কল্লানামক জোড়াকানসমেত অনুর্বর মস্তিস্কটা বারদুয়েক উপরে নিচে উঠানামা করে স্বায় দেয়। রকমারী দিবসের আনাগোনায় প্রায় মাসজুরেই থাকে পুরাতন সহ চমকপ্রদ, চটক্দার, লোভনীয়, প্রশংসনীয় অসংখ্য নতুন নতুন আয়োজনের বাহার। ফেব্রুয়ারীর ০৭ থেকে আরম্ভ করে ২১ পর্যন্ত দিবস সমুহের নামকরন শুনলে আমি মোটামুটি ভাবে নিশ্চিত অতি মাত্রায় বদরাগী, খিট্খিটে মেজাজের লোকটিও তাঁর অধরজুগল ঠেলে কর্ণ পর্যন্ত পৌছিয়ে ৩০/৩১ টা বা যা আছে তার সবকটি-ই বের করে ক্লোস-আপের বিজ্ঞাপন দিবেন। আপনাদের অবগতির জন্য নিচে সেগুলো দিয়ে দিলাম, যারা জানেন না তারা একবার চোখবুলালেই বুঝে যাবেন কারনটা। ফেব্রু ০৭= গোলাপ দিবস, ফেব্রু ০৮= প্রস্তাব দিবস, ফেব্রু ০৯ = চকোলেট দিবস, ফেব্রু ১০= টেডি দিবস, ফেব্রু ১১= প্রতিশ্রুতি দিবস, ফেব্রু ১২ = চুম্বন দিবস, ফেব্রু ১৩= আলিঙ্গন দিবস, ফেব্রু ১৪ = ভালবাসা দিবস, ফেব্রু ১৫= থাপ্পর মারা দিবস, ফেব্রু ১৬= লাত্থি মারা দিবস, ফেব্রু ১৭= সুগন্ধী দিবস, ফেব্রু ১৮= প্রতারণা দিবস। ফেব্রু ১৯= স্বীকারোক্তি দিবস, ফেব্রু ২০= অনুপস্থিতি অনুভব দিবস, ফেব্রু ২১ = পৃথক দিবস! রেফারেন্সঃ http://society-politics.blurtit.com/2372730/what-are-the-dates-of-rose-day-chocolate-day-slap-day-hug-day-kiss-day-and-valentines-day । ব্যাপারটি আজব হলেও, যে ভদ্রলোকের মাথা থেকে উক্ত দিবস সমূহ বের হয়েছিল প্রথম, ওনাকে পেলে আমি অন্তত একটা স্যালুট করতাম। খেয়াল করলে দেখবেন, গোলাপ দিয়ে প্রস্তাব পরে চকোলেট ও টেডি বিয়ার উপহার, তারপর প্রতিশ্রুতির লেনদেন, তারপর চোখ বুজে নাকদুটো আড়াআড়ি করে চুমু দিয়ে আলিঙ্গন। ব্যস ভালবাসা পর্যন্ত আপনি অনায়াসেই পৌঁছে গেলেন এই দৌড়ে। তারপর আর কি; ভুল বুঝে থাপ্পর, লাত্থি, প্রতারণা পরবর্তীতে অবশ্য নিস্ফল নীরব স্বীকারোক্তি। ধীরে ধীরে অনুপস্থিতি অনুভব করা অবশেষে সরব পৃথক! কি মহৎ(!) আবিস্কার, কি বলেন? বাঙ্গালী হিসেবে আমরা তো আর ঘটা করে সব গুলো পালন করতে পারি না। তাই বেছে নেই দু-চারটা। তার মধ্যে বেহায়াপনা দিবসটা (ভালবাসা দিবস) অন্যতম। আমি লজ্জিত, ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি জাতির কাছে যে ভালবাসার মত পবিত্র একটা শব্দের এইরকম একটা অনাকাঙ্খিত অপব্যবহারের জন্য। এই দিনটাতে আসলে কি হওয়া উচিৎ, কিন্তু ইদানিং কালে কি হয় না হয় তার উদাহরনের ভান্ডার এতটাই বিশদ যে রামায়ণ কিংবা মহাভারতও লজ্জায়, অবনত মস্তকে মুখ লুকাবে। কাউকে দোষারোপ করার জন্য প্রতিমাস ইন্টারনেটের বিল কার্তিক বাবু (অধমের জন্মদাতা) আমাকে দেয় না। তাই আমি কাউকে দোষারোপও করব না, শুধু অনুরোধ করব সবাইকে ফেব্রুয়ারীটা অসীম গর্বের, শৌর্যের, অহংকারের, শ্রদ্ধার, বষন্ত বরণের, হলুদে রাঙ্গানোর, ভালবাসার, সর্বোপরি স্বাধীনভাবে বাংলা বলতে পারার উচ্ছাস ও আনন্দের। এবার যা হয়েছে হয়েছে, চলুন পরবর্তীতে মানষিকতাটিকে আরেকটু প্রশস্থ করি, নিজে বদলে যাই এবং অন্যকেও বদলাতে সহায়তা করি।
Comments (1)
নারী দিবসের শুভেচ্ছা রইল দাদা
অনেক অনেক ধন্যবাদ ।
কবিকে বসন্ত ভালোবাসা,,,,,,,,,,,
মান্নান ভাই, আপনাকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা ।