নিসর্গ ভরা নেপালের পোখারা শহরে অবস্থিত ফেওয়া লেক। ফেওয়া লেক পানি সরবরাহ পায় পাশে দাড়িয়ে থাকা অন্নপূর্ণা রেঞ্জ, ফিশটেইলসহ অন্যন্য সুউচ্চ পাহাড়গুলো থেকে। সেই ফেওয়া লেক যখন কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় তখন কিছু পানি উপচে পড়ে একটা নালার মতো অংশ দিয়ে। ফেওয়ার উপচে পড়া দুধ সাদা পানি যেখানে এসে তীব্র গতিতে নিচে পড়ে একটা গুহায় হারিয়ে যায় সেই জায়গাটাকেই বলে ডেভিস ফল। নেপালি ভাষায় একে ডাকা হয় ‘পাতালে চাংগো’, মানে ‘নরকের প্রপাত’। এক সময় এটি ‘দেবীর প্রপাত’ নামেও প্রচলিত ছিল। মাতা ভগবতী দেবীর একটা মন্দিরও আছে এখানে।
ডেভিস ফল নিয়ে একটা গল্প প্রচলিত আছে “১৯৬১ সালের ৩১ জুলাই দুপুরবেলা মিসেস ডেভিস নামক এক সুইস তরুণী তার স্বামীর সঙ্গে এই জলপ্রপাতের একটু উপরের অংশে গোসল করতে নেমে নিখোঁজ হয়ে যান। প্রপাতের স্রোত তাকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। অনেক কষ্টে এই মহিলার লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল। সেই থেকে ডেভিস সাহেবের স্ত্রীর স্মরণে এর নাম রাখা হয়েছে “ডেভিস ফল”। কিংবা গল্পটি এমন “১৯৯৬ সালে সুইজারল্যান্ডের প্রেমিক-প্রেমিকা এই জলপ্রপাতে বেড়াতে এসেছিলো। নির্জন স্থানে তারা ঘনিষ্ট হয়েছিলো। পবিত্র স্থানকে অপবিত্র করার জন্য জলপ্রপাতের গভীর জলের নিচে পড়ে যায় ডেভিস নামের প্রেমিকা। তাকে আর পাওয়া যায়নি। সেই থেকে এর নাম ডেভিস ফল”।
এ কাহিনী শুনে অনেকেই বলাবলি করছিলো- এটা বানানো গল্প। পা পিছলে পড়ে গিয়েছিলো মেয়েটি। ওরা পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে গল্প ফেঁদেছে। তো কাহিনী যাই হোক আসুন আমরা “ডেভিস ফল” থেকে ঘুরে আসি।
(২) তো আসুন ঢুকে পড়ি ডেভিস ফলের গেইটের ভেতর।
(৩) গেইট দিয়া ঢুকেই ডান পাশে এমন চুনা পাথরের তৈরী এভারেস্টের ডামি।
(৪) আর একটু এগিয়ে গেলেই সেই কাঙ্খিত ঝর্ণা।
(৫/৬) প্রচন্ড গর্জন করে দুগ্ধ সাদা পানিগুলো একটা গুহায় পড়ে হারিয়ে যাচ্ছে অজানা কোন স্থানে।
(৭) পানিটা গুহায় পড়ার পর দ্বিতীয় ধাপটাও দেখা যায়, তারপর পানিগুলোকে আর দেখা যায়না, গুহা থেকে থেকে শন শন বাতাস আমাদের জন্য ফিরিয়ে আনে কিছু কাব্যিক শব্দ আর একরাশ কন কনে ঠান্ডা জলকণা।
(৮) উড়ে আসা জলকণায় ক্ষণে ক্ষণেই ফুটে উঠে এমন রঙধনু।
(৯) পাশেই দেখতে পাওয়া যায় এমন খয়েরি রঙের ফুলেদের আগমন বার্তা।
(১০) তিনি কোন নেপালী পুজারী নন, তিনি আমার ভ্রমণ সঙ্গী। নেপালী টুপি পড়ে পূজারীর ভাব ধরে ছবিটাই তুলেছেন শুধু।
(১১/১২) মনো কামনা পূরণের জন্য পানির নিচে থাকা দেবীর মূর্তির কাছে কয়েন ফেলছে অনেকে, কয়েন না থাকলেও চিন্তা নাই, পাশেই এক মহিলাকে দেখলাম ১০ রুপীর বদলে ৯ রুপির কয়েন দিচ্ছে।
(১৩/১৪) একটা খাচা আকৃতির ছোট্ট ঘরে রয়েছে বুদ্ধ ভগবানের মূর্তি।
(১৫) ডেভিস ফলের লোক কাহিনীটা যেখানে লিপিবদ্ধ আছে।
(১৬) এটা পোখরার বিখ্যাত ফেওয়া লেক, যেখান থেকে ডেভিস ফলের পানি সরবরাহ হচ্ছে নিরন্তর।
(১৭) এটা অন্নপূর্না রেঞ্জের বরফ ঢাকা কোন একটা পাহাড়, যা থেকে ফেওয়া লেক পানি পাচ্ছে সর্বদা।
(১৮/১৯) যে কোন জায়গায় গেলে স্যুভেনিরের দোকানগুলোতে আমি সব সময় ঢু মেরে কিছুনা কিছু নিয়ে আসি, বলা তো যায় না আর কখনো যাওয়া হবে কিনা।
(২০) সব শেষে আমি যে ডেভিস ফলে পা হড়কাইনি তার একটা প্রমাণ।
Comments (7)
ভাললাগা জানালাম...