Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

মুক আলম খান

১০ বছর আগে

জাতীয় পতাকা বিষয়ক জটিলতা...

ভুমিকাঃ নিচের লেখাটি একান্তই ব্যাক্তিগত একটি উপলব্ধি। আমাদের জাতীয় পতাকা বা আমাদের মাতৃভূমিকে আপমান করার জন্য লেখা নয়। তবুও যদি মনে হয়, তাহলে আমি শুরুতেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি আমার দেশের কাছে, আমার জাতীয় পতাকার কাছে এবং গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান এর কাছে। আমি মনে প্রানে একজন বাংলাদেশী। এবং এতে আমি গর্বিত।

 

হটাত একটা চিন্তা মাথায় আসল।

কোন দেশের জাতীয় পতাকা যদি কখনও আনুভুমিক দিক ঠিক রেখে সরাসরি উলম্বভাবে উলটা করে উড়ান হয়, তার মানে হচ্ছে তাদের সাহায্য প্রয়োজন। তাহলে আনুভুমিক আকৃতি ঠিক রেখে সরাসরি উলম্বভাবে উলটা করে উড়ানো জাতীয় পতকা” চিহ্নের মানে হচ্ছে “আমাদের সাহায্য প্রয়োজন”।

এখন একটা প্রশ্ন করি...

যদি আমাদের মানে আমরা যারা বাংলাদেশী এবং অভিবাসী মানুষের কখনোও সেইধরনের সাহায্যের প্রয়োজন হয় তখন এইরুপ কোন পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। সেটা কি সম্ভব?

আর একটু চিন্তা করতেই মাথায় এলো, আমাদের বর্তমান জাতীয় পতাকার যে নকশা, তাতে এইরূপ কিছুই সম্ভব নয়। যদি আমরা সাহায্যের প্রয়োজনে উল্টিয়ে লাগালে কাজ হবে না। মানে আমাদের পতাকার নকশা উলম্ব এবং আনুভুমিক ভাবে একই রকম। তাই যদি আনুভুমিক দিক ঠিক রেখে সরাসরি উলম্ব ভাবে উড়ালে কেউ বুঝবেই না, আমাদের সংকেত। সবাই ভাববে আমরা ঠিকই আছি। আদতে কি আছি আমরা? নিজেকে প্রশ্নটা করুন।

 

এখন একটা কথা বলুন,

আপনাদের মধ্যে হয়তো অনেকেই মনে রেখেছেন ১৭ই এপ্রিল, ১৯৭১ সালে প্রতিষ্ঠিত স্বাধীন বাংলার প্রথম জাতীয় পতাকার নকশা। কিন্তু কতজন জানেন তার প্রথম জাতীয় পতাকার গঠনের ইতিহাস? তাদের জন্য,

“আদি পতাকাটি এঁকেছিলেন স্বভাব আঁকিয়ে ছাত্রনেতা শিবনারায়ণ দাশ। ঢাকা নিউ মার্কেটে অবস্থিত অ্যাপোলো টেইলরের মালিকবজলুর রহমান লসকর এই পতাকা তৈরীর জন্য কাপড় দিয়েছিলেন। ১৯৭১ সালের ২রা মার্চে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছিলেন ছাত্র নেতাআ.স.ম. আব্দুর রব। তিনি সেই সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইউনিয়নের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন।পূর্ব পাকিস্তানের চিহ্ন চাঁদ তারা ব্যবহার না করার জন্য নতুন এই প্রতীক তৈরী করা হয়েছিল। সিআইএ ওয়ার্ল্ড ফ্যক্টবুক অনুযায়ী বাংলাদেশের সবুজ প্রকৃতি বুঝাতে পতাকায় সবুজ রং ব্যবহার করা হয়েছিল”।

-      Source: উইকিপিডিয়া

-      reference link:http://bn.wikipedia.org/wiki/বাংলাদেশের_জাতীয়_পতাকা

 

একটু চিন্তা করে দেখুন, সে পতাকার নকশাতে কি সাহায্যের আবেদন দেওয়া করা যেত। আমার মনে হয় যেত। কারন ছিল শুধুমাত্র আমাদের মাতৃভূমির মানচিত্র। যা পৃথিবীর মানচিত্রের বুকে আমাদের এক খন্ড স্বাধীন ভুমি অর্জনকেই নির্দেশ করত।আর হলুদ রঙ ব্যাবহারের কারন ছিল, সাহসিকাতার চিহ্নরূপে।

 

তখনই মাথায় এলো, তাহলে সেটা বাদ দেওয়া হল কেন?

প্রশ্নের উত্তরটা পাবার জন্য কিছু গুগলিং, কিছু পড়াশোনা করতেই একটা মনগড়া উত্তর খুজে পাই। এখানে শুধূ একটাই বর্ননা করব,

“শেখ মুজিবর রহমান মার্চ ২৩ তারিখে তাঁর বাসভবনে, স্বাধীনতা ঘোষণার প্রাক্কালে পতাকা উত্তোলন করেছিলেন। পরবর্তীতে ১৯৭২ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের সরকার শিবনারায়ণ দাশের ডিজাইনকৃত পতাকার মাঝে মানচিত্রটি বাদ দিয়ে পতাকার মাপ, রঙ ও তার ব্যাখ্যা সম্বলিত একটি প্রতিবেদন দিতে বলে পটূয়া কামরুল হাসানকে। কামরুল হাসান দ্বারা পরিমার্জিত রূপটিই বর্তমানে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা”।

-      Source: উইকিপিডিয়া

-      reference link:http://bn.wikipedia.org/wiki/বাংলাদেশের_জাতীয়_পতাকা

 

এছাড়াও,

-      দৈনিক আমাদের সময়, ডিসেম্বর ১৮, ২০০৭; কামরুল হাসান-বাংলাপিডিয়া ফেব্রুয়ারি, ২০০৭;  "Lonely Planet: Bangladesh", 4th Edition, Lonely Planet Publications,(December 2000), ISBN 0-86442-667-4; "Flag description"(reff Link: https://www.cia.gov/library/publications/the-world-factbook/fields/2081.html). The world fact book। CIA USA।

 

লেখাগুলোতে একই কথা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে লেখা আছে। কিন্তু শুধুমাত্র সহজিকী করনের কারনেই মানচিত্রটি বাদ দেওয়া হল। হাস্যকর। এর ফলে আমরা আরো অসহায় হয়ে পড়লাম, শেষ সাহায্যের আবেদনের জন্য আমরা নিজেদের পতাকাকেও ব্যাবহার করতে পারব না। সর্বদাই আমাদের অন্যের উপরেই নির্ভর করতে হবে কখন সে আমাদের আবেদন পৌছে দেবে।

 

আমরা এক যুদ্ধ থেকে মুক্তি পেলেও আমরা আবার বন্দি হয়ে গেলাম তাদের হাতের মুঠোর পুতুল হিসেবে তাদের গড়ে তোলা দুর্গে। আমাদের শাসন কর্তার কাছে। তারা চেয়েছিল আমরা তাদের দয়ায় হয়ে বেচে থাকি। তাদের তৈরী দুর্গে আমরা বন্দি।

 

যখন আমরা আমাদের দেশের শাসনকর্তাদের কাদা ছোড়া-ছুড়ির খেলার মাঝে পড়ে আমাদের স্বত্তাই কালো হয়। তারা আমাদের এই দুর্দশা দেখেও না দেখার ভান করে চা খায়। যখন আমাদের জীবিকা কংক্রিটের নিচে চাপা পড়ে আর্তনাদ করে। তাদের রোষে পিস্ট হয়ে আমাদের মত মানুষেরাই আগুনে ঝলসে মারা যায়। তখন চোখে স্টীলে চশমা পড়ে কানে তুলো গুঁজে তারা সংবাদ মাধ্যমের কাছে লজ্জা ঢাকতে ব্যাস্ত হয়ে আমাদের উপরেই সব দোষ ঢেলে দেয়। তখন আমরা কিভাবে সাহায্য পাবো? তাদের ভয় ছিল, হয়তোবা আমরা তাদের আসলরূপ পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেব। যাতে পৃথিবীর মানুষ না জানতে পারে আমাদের দুর্দশার কথা।

আমি এও জানি আমাদের বাইরের সাহায্য না হলেও চলবে। আমাদের লক্ষ্যে পৌছাতে একটু দেরী হবে হয়তোবা কিন্তু আমরা নিজেরাই জয়ী হতে পারব। কিন্তু আমাদের এই অর্জনটাকে এবং তাদের ব্যার্থতাকে দেখানোর জন্য হলেও একটা চিহ্ন দরকার, আর সেটা জাতীয় পতাকা ছাড়া আর মুল্যবান কিইবা হতে পারে?

এত কথা বললাম কারন শুধুমাত্র এই না যে আমাদের সাহায্যের জন্যই আমাদের জাতীয় পতাকা পাল্টিয়ে লাল বৃত্তের মাঝে হলুদ রঙ্গে আকা আমাদের মাতৃভূমির মানচিত্র সংযোজন করা উচিত। আমাদের গর্বিত অর্জন, আমাদের সাহসিকতা, আমাদের বিরত্বের ফলে অর্জিত ভুখন্ডের চিহ্ন আমাদের জাতীয় পতাকায় সংযোজন করা উচিত। যাতে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের কাছে পৌছে যায় আমাদের অর্জন।

এখন হয়ত বুঝতেই পারছেন আমি কি বলতে চাচ্ছি। আমি চাই শুধুমাত্র আমাদের জাতীয় পতাকায় মানচিত্রটিকে স্থান দিতে। এটাই আমার চাওয়া।

কারন আমরা এখন আমাদের অস্ত্বিতের যুদ্ধে উপনীত হয়েছি। এই যুদ্ধ আমাদের সকলের, এই যুদ্ধ অন্যায়ের বিরুদ্ধে। এ যুদ্ধ মানুষ হত্যার বিচারের। আমরা এই মাটির সন্তান। আমরা সেই বীরদের প্রজন্ম। আমাদের প্রত্যেকের মাঝেই সেই বীর সেনারা আবিষ্ট আছেন। আমরা সবাই সৈনিক। কোন একজন বলেছিলেনঃ

“You tell your men, You’re a soldiers. That’s our flag. You tell them, nobody takes our flag. Raise your flag so it flies high where everyone can see it. Now you have got yourself a castle”.

 

বাকিটা আপনাদের উপরে ন্যাস্ত।

০ Likes ৪ Comments ০ Share ৬৭২ Views