অনেক গুলো দিন পরে আবার ব্লগে এলাম। কেমন আছেন সবাই?
এলাম তো, লিখবো কী? কিছু একটা লিখার জন্য হাতটা নিশপিশ করছে। অথচ মাথায় আসছে না কিছুই। যাক গতকাল বউ একটা অভিযোগ করেছিল, তার সুত্র ধরেই লিখি।
কী ছিল বউয়ের অভিযোগ? বিভিন্ন ধরনের ওষুধ খেতে খেতে সে নাকি শেষ। আর এর জন্য দায়ী আমি। আমিই নাকি তাকে ওষুধ খাওয়া শিখিয়েছি। সেদিন যদি আমি তাকে না শেখাতাম তাহলে আজ তাকে এত কাঁড়ি কাঁড়ি ওষুধ খেতে হতো না।
তাহলে খুলেই বলি।
সে অনেক বছর আগের কথা। সবে নূতন বিয়ে করেছি। (মনে হতেই মনটা আনন্দে ভরে যাচ্ছে। ) শ্বশুর বাড়িতে আনন্দ ভ্রমণ চলছে। খাওয়া দাওয়া আদর আপ্যায়ন কোন সমস্যা নাই। সমস্যা এসে দাঁড়ালো, যখন আমি তিনাকে বড়ি (contraceptive pills) খেতে বললাম। কেন??? না, তিনি পিল খেতে জানেন না। আকাশ থেকে পড়লাম! বলে কী!! এও কী সম্ভব?? এত বড় ডাঙর একটা মেয়ে যার ১৭ বছর চলছে, সে ট্যাবলেট খেতে জানে না!!! তার মানে কি সে জীবনে কখনো অসুস্থ হয়নি?? আমাকে অবাক করে দিয়ে জানালো, আসলেও জীবনে সে কখনো অসুস্থ হয়নি। বাজী ধরাধরি চললো। আমার শাশুড়ি মা জানালেন ছয় বছর বয়সে তার একবার জ্বর হয়েছিল। আর তখন তাকে হোমিওপ্যাথিক ওষুধ খাওয়ানো হয়েছিল। বাজীতে আমি হারিওনি জিতিওনি। (ওদের বাড়ি না? কিছুটা গা জুড়িও ছিল ) তবে আমি কম অবাক হইনি।
সে যাক, আমার তো তাকে ও জিনিস না খাওয়ালে চলবে না। যুক্তি তর্ক সাহস ভরসা কম দিলাম না। এতটুকু একটা জিনিস তুমি গিলতে পারবে না, এটা একটা কথা হলো? চেষ্টা কর। ইত্যাদি ইত্যাদি। চেষ্টা করতে করতে আধা পাতা শেষ, আর সেই সাথে পানি খেতে খেতে ওর পেট ফুলে ঢোল। ফোলা পেটে হাত দিয়ে সে বলে আর বড়ি খেতে হবে না এমনিতেই বাচ্চা হয়ে গেছে। তখনকার মত বিরতি।
এর পর আবার চেষ্টা করলাম, আবার চেষ্টা করলাম। কোন লাভ নেই। পানি গিলে ফেলে, পিল থেকে যায় মুখে। চেষ্টা করতে করতে পিলের পাতা প্রায় শেষ। কী মুশকিল!!
এবার শালাকে ডেকে এনে দোকানে পাঠালাম। যাও, বাদাম নিয়ে এসো। অতগুলো বাদাম ছিলে নিয়ে আধা টুকরা করে বাদাম বিচি নিয়ে চললো আবারো প্র্যাকটিস। কয়েক বারের চেষ্টাতেই সাফল্য এলো। গিলে ফেললো আধখানা বাদাম বিচি। কী আনন্দ! আনন্দের আতিশয্যে চেঁচিয়ে উঠলো সে। শালাটা বসেছিল পাশেই। তার আনন্দ আরো বেশি। (বাদাম গুলো খেতে পারবে, তার আনন্দিত হবার সেটাও একটা কারন ছিল।)
এর পর থেকে যখনই আমার স্ত্রীকে কোন ওষুধ খেতে হয়, আর তা যদি ট্যাবলেট (তার ভাষায় বড়ি) হয়, আমাকে কিছু কথা শুনতে হয়। আজও না হয় শুনলাম।
Comments (9)
সৃষ্টিকর্তার কাছে আমার প্রার্থনা, যেন উনি মানসিক বিকারগ্রস্থ এবং পাপিষ্ঠ কামের ধুম্রজালে আবদ্ধ এই মানুষগুলোকে হেদায়েত দান করেন। যদি উনারা হেদায়েত প্রাপ্তির অযোগ্য হন, তবে যেন সৃষ্টিকর্তা উনাদের ধ্বংস করিয়া দেন। কারন এই লোকগুলো সংক্রমিত করিয়া ফেলিবে পুরো সমাজ, দেশ, তথা জাতিকে।
মনের মধ্যে যখন পাপবোধ জন্ম নেয় তখন মানুষের চিন্তা ভাবনাগুলোও হয় পাপের অন্যতম কারণ। মানুষের মনের সমস্ত পাপ দূর হয়ে যাক, এই কামনা ছাড়া আর কীইবা করার আছে। ধন্যবাদ ইমরান ভাই।
সহমত।
/কারন এই লোকগুলো সংক্রমিত করিয়া ফেলিবে পুরো সমাজ, দেশ, তথা জাতিকে।/
আসলেই কিন্তু সত্যি কথা। কারণ একজন খারাপ মানুষের জন্য দশজন ভালো মানুষের ভুগান্তি হয়ে থাকে। আর আমার অবশ্য “মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়” এর লেখা তেমন পড়া হয়নি ভাই। আপনার এই পোষ্টটি থেকে “প্রাগৈতিহাসিক” এই গল্পটির কিছুটা জানা হলো। তাই অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ইমরান ভাই, লিখাটি শেয়ার করার জন্য। সতত ভালোলাগা রইলো।
ধন্যবাদ আপু।