Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

সৌরভ শাওন

১০ বছর আগে

অনুগল্প (অস্তিত্ব)

 

 

মিথ্যা ও বুজরুকির এ শহরে মাটি কামড়ে পড়ে থাকা নামসর্বস্ব এক অস্তিত্ব প্রথম একবিন্দু আলোর সন্ধানে গ্রীবা উঁচু করে এগিয়ে এসেছিলো অনেকদিন আগে। এই শহরে বৃষ্টির হাজারো বিন্দু ধুইয়ে দিতে পারেনা দু'ফোটা চোখের জল, নেশায় চারপাশ বুদ করে দিয়ে টকটকে চোখে রম্যে মেতে ওঠে পারিভাষিক বোতল, সিগারের স্টিক উড়ে পুড়ে খাক হয়ে গেলেও ধোঁয়া রয়ে যায় যুগান্তর।

 

বরাবরের মতো বর্ষা সেদিন ও নির্লজ্জতার বৃত্ত ভরাট করে ডার্ট অ্যান্ড ফিলথ দূর করার চেষ্টা নিয়ে এসেছিলো মহিলা সমিতির ব্যার্থ ম্যানিফেস্টোর মতো। বোকা বর্ষা জানতো না যে রাস্তা ততদিনে পিচঢালা, তকতকে রাজপথের সমস্ত ধুলো এথনিক ক্লিঞ্জিং করে তখন হৃদয়ের নালায় বহমান। নৈরাশ্যের এই দুনিয়ায় একবিন্দু নোটিফিকেশনের অনবসরে বৃষ্টি আর মাটির যুগপৎ সোদা গন্ধ নেয় একটি নামহীন অস্তিত্ব। ট্রাফিকের ডেসিবেল লেভেলকে নির্দ্বিধায় পাশ কাটিয়ে যাওয়া একগাদা সৃষ্টির সেরা জীবের কাকসদৃশ হিউ এন্ড ক্রাই নতুন অস্তিত্বের মস্তিষ্ককে আপন করে নেয়ার খেলায় মেতে উঠে। কান এই অতি আচার মেনে নিলেও, চোখ বিদ্রোহ করে। অস্তিত্ব তখন জীবনের এক নতুন বাঁকে ক্রিং ক্রিং বেল বাজিয়ে একটা সাডেন মোড় নেয়। চোখের কোনে একবিন্দু রক্ত তাকে পরিচয় করিয়ে দেয় এক অপরিচিতা দেবীর সংগে। শরীরের দুঃসহ যন্ত্রনার কোটা পূরন করে সেই দেবী নবাগত জীবনকে সঞ্জিবনী পান করান। অথৈ নৈরাশ্যের মাঝে ও প্রথম আলো দেখে সেই বিবর্ন আত্মা।

 

তারপরের গল্পে অসাধারনত্বের ছিটেফোঁটা নেই। জন্ম, মৃত্যু আর ডিভোর্সের ম্যানেজিং ডিরেক্টরের হাত ধরে এগিয়ে যায় জীবন। কলমের সাথে অস্তিত্বের বৈধ প্রেমের শুরুটা বলি। ততক্ষনে বারো মাসে আঠেরোর অধিক পার্বন সয়ে নিয়েছে শরীর। ঘটনা বোধ করি ত্রয়োদশ মাসের। সেদিন ছিলো আরেকপার্বণের অপেক্ষা। পার্বনখানা আধা ডেমোক্রেটিক, আধা একনায়কি। থালাভরা উপাচার আসে অস্তিত্বের মুখোমুখি। দূর্বা, ঘণ্টা, কাঠ, জল এবং আরো কিছু। অস্তিত্ব অবলীলায় কলম তুলে নিয়ে কিছু ফ্যাকাশে মুখ দেখে মুখ টিপে হাসতে থাকে। "ল্যাখা, মরণ। তিন মাসে দশ টাকা প্রাপ্তিযোগের গ্যারান্টি নাই। রামরাম রাম"।

 

এরই মাঝে ভদ্রস্থ নাম দেয়া হয়, মুখে দু'দানা অন্ন ঢুকিয়ে দেয়া হয় গাল টিপে, হাতে গোটা কয়েক খড়ি আসে।কলপাড়ের মুচির পো বিকাশের সাথে লুকিয়ে লুকিয়ে ডাংগুলি খেলা, মুদির দোকানের পুচকে লক্ষনকে নিয়ে বিকেলের খয়েরী আলোয় কেঁচোর টোপ দিয়ে লেজে বিধিয়েহ্যাচকা টানে পুটি মাছ শিকার, রামধন ধোপার গাধাখানা দড়িছাড়া করে বেচারাকে মহামুশকিলে ফেলা এসব করেই ইম্যাচুরিটি এইজ পার করে দেয় সেই অস্তিত্ব। ত্যাদড় পুচকের অত্যাচারে পাড়া অতিষ্ট। মাস্টারমশাই স্কুল থেকে সরিষাক্ষেতের আইল ধরে ধুতির কাছা ধরে হেটে যাবার পথে গুলতির আঁচড়ে যখন একগাদা এসে তার হাফ হাতা পাঞ্জাবীর মানচিত্র বদলে দেয়, ইরিভার্সিবল এভিডেন্স হয়ে নালিশ যায় তখন পুঁচকের বাড়িতে। "বাবু, আপনার ছেলে তো দিন দিন ধর্মপুত্তুর হয়েযাচ্ছে। অধর্মের লিমিট ছোরা পার করে ফেলেছে আরো আগেই"

 

বেতেরবাড়ি একটাও আর মাটিতে পড়ে না। বাবু নিশ্চিন্ত। যতই মার পড়ুক, একখানা কলমআর পাতলা একটা গল্পের বই পেলেই ছেলে শান্ত। পোশাক-আশাকে ছোরার মতি নেই। স্রেফ বই। নারদ-প্রেত, এঞ্জেল-ডিমনের কোটা পার করে আসে সমাজ, বিপ্লব কিংবামুক্তি।

 

আর কাগজ পেলেই হাবিজাবি লিখে ফেলেপটাপট। ক লিখতে কলম ভাংগে, তো নতুন কলমে চলে খ লেখার আয়োজন। পার্বনের অদৃষ্টের বিশ্বাস কিংবা অবিশ্বাসে উদ্দম এগিয়ে চলে। অস্তিত্ব হাতে তুলে নেয়মসি। 'অসির চেয়ে মসি বড় বলে নয়',ভালোবেসে মসি, ভালোবেসে 'ল্যাখা' 

 

 

 

২ Likes ৯ Comments ০ Share ৯৮৮ Views

Comments (9)

  • - তৌফিক মাসুদ

    ভাল লাগা জানিয়ে গেলাম। 

    - জাহাঙ্গীর আলম

    দারুণ