Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

সাইফুল বিন হানিফ

৬ বছর আগে লিখেছেন

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চ ঐতিহাসিক ভাষণের অজানা ইতিহাস...




৭ মার্চ।। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ ------------------------------------

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চ ঐতিহাসিক ভাষণের অজানা ইতিহাস...  

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম”কি করে যুক্ত হলো?   ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণের পেছনেও রয়েছে এক ঐতিহাসিক ঘটনা।   স্বাধীন জাতিরাষ্ট্র বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯৬২ সালের প্রথমার্ধে তৎকালীন ছাত্রনেতা সিরাজুল আলম খান, আবদুর রাজ্জাক এবং কাজী আরেফ আহমেদ (তিন জনই ছাত্রলীগ নেতা) এর সমন্বয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট গোপন সংগঠন ‘নিউক্লিয়াস’ বা ‘স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ’ গঠিত হয়। ঢাকার পল্টনের আউটার স্টেডিয়ামের দক্ষিণ প্রান্তে ভলিবল খেলার মাঠে দর্শকদের জন্য তৈরি কাঠের গ্যালারীতে রাতের পর রাত এমন কী গভীর রাত পর্যন্ত বহুবার বৈঠকে বসে বাঙালিদের জন্য স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যেই মূলত ‘নিউক্লিায়াস’ গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।   ১৯৬২ সাল থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত নিউক্লিয়াস’-এর সাংগঠনিক তত্ত্বাবধানে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে গোপনে প্রায় ৭০০০ (সাত হাজার) সদস্য সংগৃহীত হয়। ১৯৭০ সালের নভেম্বর মাসের প্রথমদিকে সিরাজুল আলম খান এবং আবদুর রাজ্জাক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের সাথে বৈঠক করেন। বৈঠকে নেতৃবৃন্দ ‘নিউক্লিয়াস’ ও ‘বিএলএফ’-এর গঠন এবং সাংগঠনিক বিস্তৃতি সম্পর্কে অবহিত করেন। ‘নিউক্লিায়াস’ সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু আগেভাগেই অবগত ছিলেন না। এ বৈঠকেই সিরাজুল আলম খান ও আবদুর রাজ্জাক বঙ্গবন্ধুকে আশ্বস্ত করেন যে, স্বাধীনতার বিষয়ে ‘নিউক্লিয়াস’ এবং ‘বিএলএফ’-এর কর্মী বাহিনী সাংগঠনিকভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও দক্ষ। দেশের সর্বত্র এমনকি প্রতিটি থানা পর্যায়ে সংগঠিত ও প্রশিক্ষিত সদস্যরা স্বাধীনতার সপক্ষে জনসমর্থন ও সাংগঠনিক কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। অভ্যন্তরীণ যে কোনো পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে রাজনৈতিক গণ-আন্দোলন গড়ে তুলতে সক্ষম।   বৈঠকে ‘নিউক্লিয়াস’/‘বিএলএফ’-এর' নেতৃবৃন্দ বলেন, এখন প্রয়োজন বিদেশের সঙ্গে বিশেষ করে প্রতিবেশি রাষ্ট্র ভারতের সাথে স্বাধীনতার বিষয়ে যোগাযোগ স্থাপন করা। ভবিষ্যতে বিদেশী সাহায্য সহযোগিতার জন্য বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা এবং প্রয়োজনবোধে সশস্ত্র সংগ্রামের জন্য অস্ত্র সংগ্রহ ও ট্রেনিং প্রদানের ব্যবস্থা করা।   এ বৈঠকের কয়েক দিন পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব লন্ডনে যান এবং সেখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর বিশেষ দূতের সাথে বাঙালির স্বাধীনতার বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করেন। লন্ডন থেকে দেশে ফিরে তিনি ‘নিউক্লিয়াস’ নেতৃবৃন্দকে ডেকে ভারতের সাথে যোগাযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। সে অনুযায়ী ‘নিউক্লিয়াস’ নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চলের দু’টি সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারত থেকে অস্ত্র সংগ্রহের ব্যবস্থা সম্পন্ন করে। এরপরই মার্চের ২৫ তারিখ পাকিস্তান বাহিনীর আক্রমণের মুখে ভারত থেকে অস্ত্র আনার বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত হয়; যা পরবর্তীতে স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র যুদ্ধের রূপ ধারণ করে।   ১৯৭০ সালের নভেম্বর মাসের শেষের দিকে বঙ্গবন্ধু ‘বিএলএফ’-এর চার নেতা সিরাজুল আলম খান, আবদুর রাজ্জাক, শেখ ফজলুল হক মণি, এবং তোফায়েল আহমেদকে ডেকে চিত্তরঞ্জন সূতার-এর সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। ঐদিন প্রথম সাক্ষাতেই চিত্তরঞ্জন সুতার ‘বিএলএফ নেতৃবৃন্দকে ২১, ড. রাজেন্দ্র রোড, নর্দান পার্ক, ভবানীপুর কলকাতা-৭০০০২১ ঠিকানাটি মনে রাখতে বলেন। ‘নিউক্লিয়াস’ নেতারা ঐ ঠিকানাটি ৩/৪ বার মুখে উচ্চারণ করে এবং মুখস্ত করেন। বঙ্গবন্ধু নিজেও কয়েকবার ঠিকানাটি আওড়ান।   ১৯৭১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ১৮/১৯ তারিখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিএলএফ-এর চারনেতাসহ সিরাজুল আলম খান, আবদুর রাজ্জাক, শেখ ফজলুল হক মনি ও তোফায়েল আহমেদ এবং আওয়ামীলীগ হাই কমান্ডের নেতা তাজউদ্দিন আহমেদকে নিয়ে বাংলাদেশে স্বাধীনতার বিষয়ে আলোচনায় বসেন। বৈঠকে বঙ্গবন্ধু তাজউদ্দিনকে স্বাধীনতার প্রশ্নে বিএলএফ-এর চার নেতা সম্পর্কে বিস্তারিত বিষয়ে অবগত করেন। বৈঠকে তিনি পরামর্শ দেন ভবিষ্যতে কখনো যদি ‘তার’ (বঙ্গবন্ধু) অনুপস্থিতি ঘটে তাহলে বিএলএফ-এর চার নেতা তাজউদ্দিন আহমদের সাথে শলা-পরামর্শ করেই স্বাধীনতার সমস্ত কৌশল নির্ধারণ করবেন। বৈঠকে ভারতের সাথে যোগাযোগের বিষয়টিও পুনরায় তিনি তাজউদ্দিন আহমেদ ও চার নেতাকে স্মরণ করিয়ে দেন এবং ২১, ড. রাজেন্দ্র রোড, নর্দান পার্ক, ভবানীপুর, কলকাতা-৭০০০২১ ঠিকানাটি তিনি তাদের মনে রাখতে বলেন।   ১৯৭১ সালের ১ মার্চ পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান বেতার ভাষণে ৩ মার্চ তারিখে গণপরিষদের অধিবেশন বাতিল করলে ছাত্র-জনতা বিক্ষুব্ধু হয়ে রাস্তায় নেমে পড়ে। এ সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব দিলকুশার হোটেল পূর্বাণীতে পার্লামেন্টারি দলের বৈঠক করছিলেন। বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা সেখানে গিয়ে উপস্থিত হলে তিনি (‘নিউক্লিয়াস’-এর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী) আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুকুম দেন। শুরু হয় স্বাধীনতার জন্য প্রত্যক্ষ আন্দোলন।‘নিউক্লিয়াস’ -এর পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২ মার্চ ডাকসুর ভিপি আ স ম আবদুর রব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সমাবেশে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন। ৩ মার্চ ঐতিহাসিক পল্টন ময়দানে স্বাধীনতাকামী ছাত্র-জনতার বিশাল সমাবেশে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাজাহান সিরাজ ‘স্বাধীনতার ইশতেহার’ পাঠ করেন। অনুষ্ঠানে স্বাধীনতার পক্ষে চার ছাত্র নেতা নূরে আলম সিদ্দিকী, সাজাহান সিরাজ, আ স ম আবদুর রব এবং আবদুল কুদ্দুস মাখন শপথ বাক্য পাঠ শেষে ‘জয়বাংলা বাহিনীর উপ প্রধান (ডেপুটি চীফ) কামরুল আলম খান খসরু আনুষ্ঠানিকভাবে ‘গান ফায়ার’করে সশস্ত্র যুদ্ধের ঘোষণা জানান।   মার্চের ৩ তারিখ রাত ১১/১২টার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিএলএফ-এর চার নেতাদের সাথে বৈঠক করেন। বৈঠকে স্বাধীনতা আন্দোলনের বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বিশেষ করে ৭ মার্চের ভাষণের বিষয় নিয়ে বঙ্গবন্ধুকে আওয়ামী লীগের একটি ‘হাইকমান্ড’ গঠনের প্রস্তাব দেন বিএলএফ’র চার ছাত্র নেতা। বঙ্গবন্ধু বললেন, তিনি নিজেও এরকমই ভেবেছেন।     মার্চের ৪ তারিখে বঙ্গবন্ধু ‘বিএলএফ’র চার নেতা সিরাজুল আলম খান, শেখ ফজলুল হক মণি, আবদুর রাজ্জাক এবং তোফায়েল আহমেদকে ডেকে আওয়ামী লীগের ‘হাইকমান্ড’ গঠন সম্পর্কে অবহিত করেন। তিনি জানান, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বেই আওয়ামী লীগের ‘হাইকমান্ড’ গঠন করা হয়েছে। ‘হাইকমান্ডে’ অন্য যারা সদস্য হয়েছেন তারা হলেন, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, খন্দকার মোস্তাক আহমেদ এবং ক্যাপ্টেন মনসুর আলী। আওয়ামী লীগের ‘হাইকমান্ড’ গঠনের পর থেকে বঙ্গবন্ধু প্রতি রাতেই আন্দোলনের সকল বিষয় নিয়ে আওয়ামী লীগের ‘হাইকমান্ড’-এর চার নেতা এবং বিএলএফ’র চার নেতার সঙ্গে আলোচনায় বসতেন।   ৫ মার্চ তারিখে ৭ মার্চের ভাষণের বিষয় নিয়ে প্রথমে বিএলএফ’র ‘হাইকমান্ড’ সিরাজুল আলম খানসহ চার নেতার সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর আলোচনা হয়। ওই দিনই তিনি আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডের সাথে ৭ মার্চের ভাষণের বিষয়াদি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে বিএলএফ’র প্রস্তাব সমূহ তাদেরকে অবহিত করেন।   বঙ্গবন্ধু ৫ মার্চ পৃথকভাবে পুনরায় ‘বিএলএফ’-এর হাইকমান্ডের সাথে ভাষণের বিষয়াদি নিয়ে আলোচনায় বসেন। সেদিন অধিক রাতে ৭ মার্চের ভাষণের বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। তা হলো, ভাষণটি খুবই আবেগময়ী হতে হবে এবং মূল ভাষণটিকে তিনটি ভাগে বিভক্ত করা হয়। যা পরের দিন ৬ মার্চ আওয়ামী লীগ হাইকমান্ডের কাছে বঙ্গবন্ধু তুলে ধরেন। আওয়ামী লীগ ‘হাইকমান্ড’-এর নেতৃবৃন্দ প্রস্তাবটি নীতিগতভাবে একমত পোষণ করেন এবং সেই সাথে অসহযোগ আন্দোলন অব্যাহত রাখার উপর গুরুত্বারোপ করেন। ‘অসহযোগ আন্দোলন’ ছাড়াও মূল ভাষণটিকে যে তিন ভাগে ভাগ করা হয় তা হলো-   ক. অতীত ইতিহাস (সংক্ষেপে) খ. নির্বাচনের ম্যান্ডেট অনুযায়ী ক্ষমতা হস্তান্তর করা গ. নতুবা ‘অসহযোগ আন্দোলন’-এর পাশাপাশি স্বাধীনতার আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া।   ৫ মার্চের গভীর রাতে ‘বিএলএফ’ হাইকমান্ড বঙ্গবন্ধুকে যে তিন বিষয়ের উপর গুরুত্ব দিয়ে বক্তৃতা দেয়ার পরামর্শ দেন তা হলো- Ø প্রথম-সংক্ষেপে অতীত ইতিহাসের বর্ণনা Ø দ্বিতীয়-অসহযোগ আন্দোলন অব্যাহতভাবে পরিচালনা করা Ø তৃতীয়-স্বাধীনতা আহ্বান উল্লেখ করে বক্তৃতা শেষ করা।   বঙ্গবন্ধু ৬ মার্চের সকাল থেকেই ‘বিএলএফ’ ও আওয়ামী লীগের ‘হাইকমান্ড’-এর নেতৃবৃন্দের সাথে বারবার বৈঠক করেন। বৈঠকের এক পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু বলেন, আওয়ামী লীগ হাইকমান্ড ‘মুক্তির সংগ্রাম’ শব্দটি দিয়ে বক্তৃতা শেষ করার কথা বলেছে। তখন ‘বিএলএফ’ হাইকমান্ড নেতৃবৃন্দ স্পষ্টভাবেই বলেন, ‘মুক্তির সংগ্রাম’ ও ‘স্বাধীনতার সংগ্রাম’ বক্তৃতার এক লাইনে থাকতে হবে এবং সে লাইন দিয়েই বক্তৃতা শেষ করতে হবে। তখন বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগ ‘হাইকমান্ড’-এর কাছে বিষয়টি তুলে ধরেন। ৬ তারিখ বিকাল নাগাদ ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম’ এভাবে বক্তৃতার লাইনটি ঘোষণা দেয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ‘হাইকমান্ড’ একমত হয়েছে বলে বঙ্গবন্ধু ‘বিএলএফ’ নেতৃবৃন্দকে জানালেন।   উল্লেখ্য, ৪, ৫ এবং ৬ মার্চ প্রতি ২/৩ ঘণ্টা অন্তর অন্তর আওয়ামী লীগ হাইকমান্ড ও ‘বিএলএফ’ হাইকমান্ডের সাথে পৃথক-পৃথকভাবে সভা অনুষ্ঠিত হতো। প্রতিটি সভার প্রসঙ্গে থাকতো ৭ মার্চের বক্তৃতায় বিষয়াদি। তবে ৬ মার্চ সন্ধ্যায় ‘বিএলএফ’ বঙ্গবন্ধুকে বলেন, উক্ত লাইনটি ঘুরিয়ে বলতে হবে-অর্থাৎ ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। এর কিছুক্ষণ পরে ‘বিএলএফ’ হাইকমান্ডকে বঙ্গবন্ধু জানালেন যে, আওয়ামী লীগ ‘হাইকমান্ড’ ‘বিএলএফ’ হাইকমান্ডের এ প্রস্তাবে একমত আছে। তখন ‘বিএলএফ’ হাইকমান্ড ৭ মার্চের বক্তৃতার জন্য বঙ্গবন্ধুকে পয়েন্টগুলো লিখে দেন। প্রায় দু’ঘণ্টা পরে বঙ্গবন্ধু প্রথবারের মতো ‘বিএলএফ’ হাইকমান্ডকে শোনালেন তিনি কীভাবে জনসভায় বক্তৃতা করবেন। ৬ মার্চ রাত ১২ টায় বিএলএফ ‘হাইকমান্ড’-এর সাথে বঙ্গবন্ধুর সাথে পুনরায় আলোচনা হয়। বঙ্গবন্ধু আবারো বক্তৃতাটি আওড়ালেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ বলে শেষ করেন এবং জিজ্ঞেস করলেন-কেমন হলো?   আলোচনার এ পর্বে ‘বিএলএফ’ হাইকমান্ড খুব সুক্ষ্ম একটি বিষয় বঙ্গবন্ধুর কাছে তুলে ধরলেন। তা হলো-‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম’ বলার পর জনসভা থেকে যে মর্হুমুহু করতালি ও গর্জন উঠবে সেই শব্দে ঐ লাইনের শেষ অংশ ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ ভালোভাবে শোনা যাবে না। সে কারণে জনতার গর্জন শেষ হওয়ার পর পুনরায় বঙ্গবন্ধু যেন ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম’, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ উল্লেখ করেন এবং জয়বাংলা বলে বক্তৃতা শেষ করেন।   বিষয়টি তুচ্ছ বলে মনে হলেও সে সময়ের জন্য এ লাইনটি ছিলো ঐশী বাণীর মতো। এখনো ঐ অসম্পাদিত (ভাষণ) বক্তৃতায় ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ দু’বার শোনা যায় এবং ঠিকই প্রথমবার জনতার জয়ধ্বনির কারণে ঐ লাইনের শেষাংশটি আড়ালে পরে গিয়েছিলো। পুনরাবৃত্তি করার কারণে বক্তৃতাটি সবার কাছে স্পষ্ট হয়ে ওঠে।   আজও বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের বক্তৃতা যখন মাঠে-ময়দানে বাজানো হয়, তখন দ্বিতীয়বারের কথাটি শোনা যায়। প্রথমবারের কথাটি সম্পাদনা করে বাদ দেয়া হয়েছে। রেডিও বাংলাদেশ-এর আর্কাইভে তার অসম্পাদিত বক্তৃতাটি এখনো সংরক্ষিত আছে।   মধ্যরাতের এ আলোচনা সভায় বঙ্গবন্ধু উপস্থিত বুদ্ধি দিয়ে বললেন, প্রথমবার ঐ ঘটনা ঘটলে তাকে যেন কোনো না কোনোভাবে মঞ্চ থেকেই মনে করে দেয়া হয়। তার সে কথার প্রসঙ্গে ধরে আ স ম আবদুর রবকে বঙ্গবন্ধুর জামা-পাজামায় একটু টান দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
Likes Comments
০ Share