সাধারণত দেশে- বিদেশে নানারকম ভূতুড়ে স্থান আর ঘটনার কথাই বলে থাকি আমরা নানা সময়ে। কিন্তু আজ অন্য কোন দেশ নয়, শোনাব আমাদের বাংলাদেশের ভেতরেই থাকা বেশ কিছু ভূত আর ভূতুড়ে স্থানের গল্প। হয়তো সেখানে ঘুরে এসেছেন আপনিও। একদম না জেনেই! তবে তাতে কি হয়েছে? জেনে নিন এবার। আর চোখ খুলে রাখুন সেসব স্থানে পরবর্তীতবার ভ্রমণ করবার সময়। কে জানে দুটো- একটা ভূতের সাথে হয়তো দেখা হয়ে যেতে পারে আপনারও! তালিকায় আছে লালবাগ কেল্লা, এয়ারপোর্ট রোডের মত অতি পরিচিত স্থানের ভূতুড়ে সব গল্প। হতে পারে গুজব, হতে পারে সত্যি। তবে যেসব কাহিনী প্রচলিত আছে, আমরা তুলে ধরলাম কেবল সেগুলোই।
১. ফয়'স লেক
চট্টগ্রামের বিনোদনের স্থানগুলোর ভেতরে ফয়'স লেক অন্যতম। চট্টগ্রামে গিয়েছেন অথচ ফয়'স লেকে যাননি এমন মানুষ খুব কমই আছে। শুনে আশ্চর্য হবেন যে এই লেকেও রয়েছে ভূতের আনাগোনা। দুজন মহিলাকে প্রায়ই দেখা যায় এখানে। লেকের পুরোন পাশটাতে বাস করছে তারা কয়েক শতাব্দী ধরে। নৌকা করে ওখানে গেলেই মাঝে মাঝে সামনে পড়তে হয় তাদের। স্থানীয়রা জানান, একজন সাদা শাড়ি পরা নারী আর একজন কালো নারী। এই দুজনকেই দেখা যায় ওখানে। তবে সাদা শাড়ি পরিহিত নারী কখনোই ভয় দেখায় না কাউকে। সে কাজটা কালো প্রেতাত্মার। কালো একধরনের নারী ছায়া ভেসে আসার আগেই সাদা শাড়ি পরা নারী ছায়া সাবধান করে দিয়ে যায় ভ্রমণকারীদেরকে। তবে এতকিছুর পরেও এখন অব্দি এই ভূতুড়ে কালো ছায়ার সম্মুখীন হতে হয়েছে অনেককেই!
২. লালবাগ কেল্লা
মুঘল শাসক ঔরঙ্গজেবের ছেলে সুবাহদার মোহাম্মদ আজম তার মেয়ে পরী বিবির মৃত্যুর পর এই কেল্লা ছেড়ে চলে যান। আর পেছনে ফেলে যান ছোট্ট মেয়েটির আত্মাকে। এখনো শুনশান রাতে পূর্ণ চাঁদ উঠলে কেল্লায় পরী বিবির হাসি আর ছোটাছুটির আওয়াজ পাওয়া যায়। কেবল তাই নয়, প্রায়ই রাত তিনটার দিকে কিছু মানুষকে কেল্লার ভেতরে নামাজ পড়তে শোনা যায়। যদিও আজ অব্দি কাউকে দেখা যায়নি। ব্যাপারটা কেবল এখানেই শেষ নয়। মাঝে মাঝে একজন মানুষকে মাথাকাটা ঘোড়ার পিঠেও চড়ে থাকতে দেখা যায় এখানে।
৩. ঢাকা বিমানবন্দর রাস্তা
শুনতে অদ্ভূত হলেও সত্যি যে অনেকেই ঢাকা বিমানবন্দরের রাস্তায় গাড়ি নিয়ে চলতে গিয়ে ভূতের সামনে পড়েছেন এবং দূর্ঘটনাও ঘটিয়েছেন। রাতের বেলা এই ভূতেদেরকে দেখতে পাওয়া যায় সেখানে। অনেকেই ব্যাপারটিকে বিশ্বাস করেন না। তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা বিম্বাস না করে পারেননি ভূতের উপস্থিতিকে। এ ব্যাপারে অনেকে বলেন যাদের মারা যাওয়ার কথা ছিল না অথচ দূর্ঘনায় হঠাৎ চলে যেতে হয়েছে সেই আত্মারাই অন্যদেরকেও নিজেদের মতন কষ্টের ভেতর দিয়ে নিয়ে যেতে চায়।
৪. সুন্দরবনের ভূত
সেবার একদল মানুষ ভ্রমণে গিয়েছিল সুন্দরবনে। সেখানেই রাতের বেলা গাছের পাশে দাড়িয়ে এক বন্ধু অন্য বন্ধুকে অনুরোধ করে তার ছবি তুলে দেওয়ার। ছবি তোলার সময় সবকিছু ঠিক ছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই এরপর চিত্কার করে পড়ে যায় ছবি তুলতে থাকা বন্ধুটি আর কয়েকদিন পর হাসপাতালে মারা যায়। পরবর্তীতে তার তোলা সেই ছবিটি থেকে পাওয়া যায় এক ছায়ামূর্তিকে! ব্যাপারটাকে অনেকে গুজব বলে মনে করলেও এখন অব্দি পৃথিবীর নানা প্রান্তে এই ঘটনার বর্ণনা হয়েছ। তাছাড়া আর কারো কাছে যেমনই হোকনা কেন স্থানীয়দের কাছে সেটা এখনো অনেকটাই সত্যি।
৫. চলন বিল
সিরাজগঞ্জের চলনবিলের পাশে তাড়াশ নামের এক থানায় তখন এক জমিদারের বাস ছিল। আত্মার সাথে কাজ করতেন বলে খ্যাতি ছিল তার। হঠাৎ একদিন এই জমিদার মারা যান। আর মৃত্যুর সাথে সাথেই তিনটি মন্দির মাটি ফুঁড়ে বেরিয়ে আসে। পরদিন যেটার শেষ মন্দিরটি ভেঙে যায়। এরপর থেকে বিল ও তার চারপাশের জায়গাতে জ্বীন কিংবা ভূত রয়েছে বলে মনে করেন অনেকে। এমনকি বিলের পাশ দিয়ে হেঁটে এলেও অনেকটা অপ্রকৃতিস্থ হয়ে পড়েন অনেকে।