Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.
Travel Image

বিনোদনস্পট বাঞ্ছারামপুর-আড়াইহাজারের ফেরিঘাট



ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার কড়িকান্দি এবং নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার উপজেলার বিষনন্দীতে মেঘনা নদীর উপর ফেরি চলাচল। ফেরী চলাচলের মধ্য দিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের এলাকার মানুষের যোগযোগ সহজ হয়েছে। অন্যদিকে ফেরি চালু হওয়ায় স্থানীয় সাধারণ মানুষের কাছে ফেরিঘাট এলাকাটি এখন ভ্রমণপিপাসুদের কাছে বেড়ানোর স্থান হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকা থেকে ফেরিঘাট ও সংলগ্ন নদী তীরে ঘুরতে আসছেন শত শত বিভিন্ন বয়সী নারী পুরুষ। প্রতিদিন সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ফেরিঘাটকে ঘিরে বিনোদনপ্রেমী শত শত মানুষ ভীড় চোখে পড়ে। মানুষের এমন উপস্থিতিতে ফেরিঘাটের দুই পাড়ে রাতারাতি গড়ে উঠেছে প্রায় অর্ধশত হোটেল-রেষ্টেুরেন্ট, ফাস্টফুডের দোকান ও শিশুদের খেলনার দোকান। ফেরিঘাটের উভয় পাশে শতাধিক নৌকার মাঝি ব্যস্ত সময় পার করছেন বিনোদন প্রেমীদের নৌকায় করে নদীতে ঘুরিয়ে। আয় বেড়েছে মাঝিদের। এলাকার লোকজন স্বপরিবারে বিকেল বেলায় ভিড় করে মেঘনার জলের স্পর্শ নিচ্ছেন। উপভোগ করছেন দক্ষিনা বিশুদ্ধ বাতাস। ফলে মাঝরাত পর্যন্ত উৎসুক মানুষের ভিড় থাকে এই ফেরিঘাটকে ঘিরে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সড়ক ও জনপথ বিভাগের তত্ত্বাবধানে এক কোটি ৯৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ফেরিঘাট নির্মাণ করা হয়। এরমধ্যে আড়াইহাজার অংশে এক কোটি ৩৮ লাখ টাকা এবং বাঞ্ছারামপুর অংশে ৫৮ লাখ টাকা ব্যয় হয়। জনসাধারণের চলাচলের জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগ ফেরিঘাটটি গত ২৭ আগস্ট খুলে দেয়। প্রথম দিন থেকেই এঘাট দিয়ে অসংখ্য ট্রাক, পিকআপ, মাইক্রো, প্রাইভেটকার, সিএনজি চালিত অটোরিকশা, মোটর সাইকেল পারাপার হচ্ছে।

অন্যদিকে ফেরিঘাটটি চালু হওয়ায় এলাকাবাসী মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। এর মাধ্যমে রাজধানী ঢাকার সাথে বাঞ্ছারামপুরের প্রায় ২৮ কিলোমিটার রাস্তার দূরত্ব কমে এসেছে। বাঞ্ছারামপুর থেকে হোমনা হয়ে গৌরিপুর-দাউদকান্দি দিয়ে ঢাকার দূরত্ব হচ্ছে ৮০ কিলোমিটার। বাঞ্ছারামপুর থেকে ফেরিপার হয়ে আড়াইহাজার-মদনপুর হয়ে ঢাকা ৫২ কিলোমিটার, অপরদিকে আড়াইহাজার-ভুলতা(গাউছিয়া) হয়ে ঢাকার দূরত্ব ৫৫ কিলোমিটার।

বিষনন্দী ফেরিঘাটে বেড়াতে আসা শিমু আক্তার বলেন, ফেরিঘাটে দোকানপাট গড়ে ওঠায় শত শত মানুষ এখানে বেড়াতে এসেছে। ঘাটের পাশেই নদীর তীরে বসে লোকজন নির্মল বাতাস খাচ্ছে। আবার কেউ কেউ নৌকায় চড়ে বেড়াচ্ছেন। এসবের মজাই আলাদা। এখানে ঘুরতে এসে অনেক ভালো লাগছে।

বাহেরচর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল করিম জানান, আগে এখানে সারাদিনে ৫০ জন মানুষও দেখা যেত না। কিন্তু ফেরি চলাচল শুরু করায় এখন প্রতিদিনই হাজার হাজার মানুষ আসা-যাওয়া করছে। ফেরিঘাট এলাকা এখন রীতিমত পর্যটন স্পটে পরিণত হয়েছে।
কড়িকান্দি ফেরিঘাটের ভ্রমনার্থী ও রাজনীতিবিদ মো.নুরুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অবঃ) এ বি তাজুল ইসলামের কারণে এই ফেরিঘাটের সৃষ্টি। এর মাধ্যমে বাঞ্ছারামপুরের চেহারাটাই বদলে গেছে। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষের আসা-যাওয়ার কারণে দুই পাড়েই ব্যবসা-বাণিজ্যও জমে উঠেছে।

কড়িকান্দি-বিশনন্দী ফেরিঘাটের রূপকার বাঞ্ছারামপুরের স্থানীয় সংসদ সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধ বিষষয় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অবঃ) এ বি তাজুল ইসলাম বলেন, বাঞ্ছারামপুরবাসী ঢাকায় যাতায়াত করতে অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হইত। দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল এই দুর্ভোগ থেকে এলাকার মানুষকে উদ্ধার করার। বাঞ্ছারামপুরের কড়িকান্দি এবং আড়াইহাজারের বিশনন্দীর মাঝে মেঘনা নদীতে ফেরি দিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করে ঢাকার সঙ্গে এলাকার দূরত্ব কমিয়ে আনার। সরকারের সহযোগিতায় সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিয়েছে। এটা সত্যিই আনন্দের।