ঘুরতে যাবেন বাইরে কোথাও। অথচ পছন্দ হচ্ছেনা কোনো জায়গাই। ভাবছেন একটু যদি অন্যরকম কোথাও যাওয়া যেত। যেখানে ভীড় কম, অথচ সুন্দরের অভাব নেই! কিন্তু এমন কোনো স্থান কি আছে? সব পর্যটনস্থলেই তো সবসময়ে মানুষের সমারোহ লেগেই থাকে। আপনার জন্যেই দেওয়া হল এমন কিছু মন্দিরের কথা যেগুলোর অসাধারন সৌন্দর্য মোহিত করবে আপনাকে। পর্যটনস্থল হিসেবে আদর্শ যেগুলো। অথচ খুব কম মানুষই জানে এরকম জায়গাও আছে পৃথিবীর বুকে।
১. দেন্দুরের মন্দির
দেন্দুরের মন্দির এখন থেকে অনেক অনেক আগে ১৫ বি.সি.তে মিশরের বুকে তৈরি করেছিলেন অগাস্টাস সীজার। নীলের পাশে ছিল মন্দিরটি। মিশরের অন্যতম শহর তুতজিসের ঠিক কাছেই। দেবী আইসিস ও আরো দুজন দেব-দেবীর প্রতীক এই মন্দির রোমানদের যুদ্ধসময়ের সাহায্যকারী নিউবিয়ান প্রধানের দুই ছেলে পিটিস ও পিহোরকেও মনে করিয়ে দেয়। তবে এখন আর মিশরের মন্দিরটি নেই। হয়ে গিয়েছে আমেরিকার। ভাবছেন কি করে? অনেক বছরের পথ অতিক্রম করার পর একটা সময় দেন্দুরের মন্দিরসহ আরো অনেকগুলো মন্দিরের নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয় মিশরে। সেসময় সেগুলোকে আরো একটু সুরক্ষিত জায়গায় নেওয়ার জন্যে আমেরিকা সরকার সাহায্য করে মিশরকে। আর এই সাহায্যের প্রতিদান হিসেবেই আমেরিকাকে এই মন্দিরটি তুলে দিয়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে নিউ ইয়র্কে আছে এই দেন্দুরের মন্দির।
২. বরাহা গুহা মন্দির
সপ্তম শতকে ভারতের মহাবলিপুরামের এক পাহাড়ের পাশে নির্মান করা হয়েছিল এই গুহা মন্দির। বিষ্ণুর স্মরণে নির্মিত এই মন্দিরটির গায়ে রয়েছে ভারতের ও সারা বিশ্বের মাঝে অতুলনীয় কিছু পাথরের খোদাই। যা প্রচন্ড রকম মুগ্ধ করবে আপনাকে এক পলকেই। এখানে রয়েছে লক্ষ্মী, দূর্গা ও বরাহের খোদাইকৃত মূর্তিও। মন্দিরটির স্তম্ভগুলো সিংহের আকৃতিতে খোদাই করা এং বরাহের নানারকম মূর্তিতে পূর্ণ। এছাড়াও বিষ্ণুর পৃথিবীকে বাঁচানোর ছবি, দূর্গা ও লক্ষ্মীর কার্যক্রমের ছবিও খোদাই করা রয়েছে মন্দিরের গায়ে।
৩. গ্রেট প্লাজা মন্দির
মায়ান সভ্যতার অন্যতম নিদর্শন গুয়েতামালায় অবস্থিত এই মন্দিরটিতে রয়েছে দু' দুটো পৃথক মন্দির। একটির নাম গ্রেট জাগুয়ারের মন্দির। আর অন্যটি হচ্ছে মুখোশের মন্দির। প্রথমটি ১৫০ বছর আগে নির্মিত হয়েছিল জাসাউ চান কাওয়াই নামে পরিচিত আহ কাকোর দ্বারা। কাকো মারা গেলে তার কবরের ওপরে পরের মন্দিরটি নির্মান করা হয়। তবে আর যা্ই হোক না কেন, এক কথায় এটা অন্তত বলে দেওয়া যায় যে, ইতিহাসের দিক দিয়ে যতটা মহিমান্বিত এই মন্দির, ঠিক ততটাই সমৃদ্ধ সৌন্দর্যের দিক দিয়েও।
৪. ওয়াট ফ্রা সি সানফ্রেট
বুদ্ধ সি সানফ্রেট নামেও পরিচিত এই মন্দির নির্মান করা হয় ১৫ শতকের দিকে। থাইল্যান্ডের অন্য আরো সব মন্দিরের মতন এই মন্দিরের ভেতরেও কারো থাকার অনুমতি ছিল না। বরং রাজকীয় কাজ ও কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারেই কেবল ব্যবহার করা হত মন্দিরটি। ১৪৯১ সালে রাজা রামাথিবোধি মন্দিরটিতে ছেদী যোগ করেন। যেটা কিনা থাইল্যান্ডের সব মন্দিরের জন্যেই অত্যাবশ্যক। পরবর্তীতে এখানে বুদ্ধের একটি মূর্তি গড়া হয় যার পুরোটা ছিল সোনায় ঢাকা। সেখান থেকেই এই মন্দির তার আজকের নাম পায়। পরে অবশ্য সেই মূর্তির সোনা ডাকাতি হয়ে যায়।
৫. ওয়াট তিলক আরাম
৫০০ বছরের বেশি বয়স্ক ওয়াট তিলক আরাম মন্দিরটি ইতিহাসের গহ্বরে ডুবেই গিয়েছিল বলা চলে। মেঙ্গরাই রাজ্যের তিলোকানার্তের হাতে গড়া এই মন্দির সত্যিই একটা সময় ডুবে গিয়েছিল। তাও আবার এখন থেকে প্রায় ৬৮ বছর পূর্বে। মনে করা হয় ফাহায়ো লেক বানানোর সময় অনেকটা ইচ্ছা করেই এটাকে ডুবিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিছুদিন আগে এটাকে পুরোপুরি জাগিয়ে তোলার কথা ভাবলেও এখন আপাতত বন্ধ আছে কাজ। আর তাই খানিকটা জেগে আর খানিকটা ডুবে এখনো অব্দি টিকে আছে এই মন্দিরটি।