নতুন তারা কিভাবে সৃষ্টি হচ্ছে? বস্তু গঠিত হয় পরমানু দিয়ে,আর পরমানু গঠিত হয় গোটাকতক ভিন্ন ভিন্ন মৌলিক কনিকা দিয়ে। তারার প্রধান উপাদান হলো হাইড্রোজেন ও কিছু হিলিয়াম গ্যাস।এই গ্যাস যখন এক জায়গায় জড়ো হতে হতে একটি পিন্ডের আকার নিলে তখন শুরু হয় অভিকর্ষের খেলা।এই অভিকর্ষের টানে প্রকান্ড গ্যাসীয় পিন্ড সংকুচিত হতে থাকে।
যতই সংকুচিত হয় সংকোচনের মাত্রা ও বাড়তে থাকে।এই পর্যায়ে সৃস্টি হয় প্রোটোস্টার (Protostar)। এই অবস্থা এমন একটি পর্যায়ে চলে আসে, তখন পরমানুর ভিতরকার কনিকাগুলো কাছাকাছি এসে পরস্পরের সাথে ধাক্কা ধাক্কি শুরু করে দেয়।এর ফলে তৈরী হয় তাপ এবং এভাবে চলতে চলতে অভ্যন্তরের তাপমাএা যখন ১৫ মিলিয়ন ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড ছাড়িয়ে যায় তখনই তৈরী হয় একটি দীপ্তিশালী তারার।এই পদ্ধতিকে বলা হয় নিউক্লিয়ার ফিউসন (Nuclear Fusion) বা পারমানবিক একীভবন।
তারাদের কেন্দ্রে এই বিক্রিয়া ঘটার ফলেই আলো বিকরিত হয়। এই প্রক্রিয়া অনুযায়ী প্রতি সেকেন্ডে একটি তারার কেন্দ্রে ৪টি হাইড্রোজেন পরমানু মিলে একটি হিলিয়াম পরমানুর সৃস্টি হচ্ছে এই রুপান্তরের পরেও কিছু পরিমান ভর বাকী থেকে যায়,বাড়তি এই ভর (Mass) শক্তিতে পরিনত হয়।এবং অন্য সব তারাদের মতই আমাদের সূর্য ও এভাবেই সৃস্টি হয়েছিল। এবং সূর্যের দেহ থেকে প্রতি সেকেন্ডে ৪০,০০,০০০ টনের মতো হাইড্রোজেন শক্তি বা বিকিরনের আকারে শেষ হচ্ছে। আর এর জন্যই সূর্যের আলো এবং তাপের এত প্রচন্ডতা। মহাকাশে সূর্যের চেয়ে হাজার গুন বড় নক্ষত্র আছে, যেমন বানরাজ (Rigel) এর ব্যাস সূর্যের ব্যাসের ৩৩ গুন।
মহাকাশে এই রকম অগুনিত তারার জন্ম হচ্ছে আবার অগুনিত তারার মৃত্যু হচ্ছে।
একটি তারা জ্বলতে জ্বলতে এক সময় তার অভ্যন্তরের সমস্ত হাইড্রোজেন যখন নিঃশেষ যায় তখন সেই তারাটির মৃত্যু ঘন্টা বেজে ওঠে,এবং এটি কয়েকটি পর্যায়ে শেষ হয়।
তারার জীবনের প্রথম পর্ব: একে বলে মেন সিকোয়েন্স (Main sequence) বা প্রধান পর্যায়। একটি তারা যখন জ্বলে ওঠে তখন সেই তারাটির মাঝে দুটি বল কাজ করে, একটি বল হলো মহাকর্ষ বল (Gravitational Force) এই বল বাইরের সব বস্তুকে কেন্দ্রের দিকে সংকুচিত করার চেষ্টা করে। অন্যটি বিকিরন জনিত চাপ (Radiation Pressure) যা তারাটির কেন্দ্র থেকে বাইরে এসে এই একমুখি টানকে প্রতিহত করার চেস্টা করে।এই বল দুটি যখন সমান হয় তখন তারাটি একটি স্হিতিশীল অবস্হায় পৌছে,একে বলে তারাটির প্রধান পর্যায়।আমাদের সূর্য বর্তমানে এই পর্যায়ে আছে,এবং বিজ্ঞানীদের ধারনা সূর্য আরো প্রায় ১০ বিলিয়ন বছর এইভাবে থাকবে।