আবারও বড় ধরনের সাইবার আক্রমণের ঝুঁকিতে পড়েছে অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহারকারীরা। একটি সাইবার নিরাপত্তা সংস্থার এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টেক্সট মেসেজের মাধ্যমে মাত্র একটি ছবি রিসিভ করেই আক্রমণের শিকার হতে পারেন যেকোনো অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস ব্যবহারকারী।
এটিই এখন পর্যন্ত শনাক্ত করা স্মার্টফোনের সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা রুটি। আর এই নিরাপত্তার ত্রুটির কারণে সাইবার আক্রমণের ঝুঁকিতে আছে বিশ্বের প্রায় ৯৫ কোটি অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস যা বর্তমানে ব্যবহৃত অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসের ৯৫ শতাংশ।
এই ত্রুটিটি সবার সামনে তুলে ধরেছে জিম্পেরিয়াম নামক একটি সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান। তাদের দেওয়া তথ্য থেকে জানা যায়, এই সমস্যাটির উদ্ভব হয়েছে মূলত অ্যান্ড্রয়েড ফোনের ইনকামিং ম্যাসেজ বিশ্লেষণের ধরণ থেকেই। একটি ম্যাসেজ আসার পর সেটি খুলে দেখার আগেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে তার সাথে থাকা মিডিয়া ফাইল (অডিও, ভিডিও, ছবি) প্রসেস করে ফেলে। এর অর্থ হল একটি ম্যালওয়্যার সমৃদ্ধ ফাইল আসা মাত্রই ফোন সয়ংক্রিয়ভাবে সেটিকে আক্রমণের সুযোগ করে দেয়।
এই ত্রুটির কথা স্বীকার করেছে গুগল। সিএনএন-কে দেওয়া এক বিবৃতিতে গুগল জানায়, অ্যান্ড্রয়েড ফোনের বিভিন্ন অ্যাপ এবং ফোনের বিভিন্ন ফাংশন হ্যাকারদের আক্রমণ প্রতিরোধের ক্ষমতা রাখে।
গত পাঁচ বছরের মধ্যে তৈরি করা হয়েছে, অ্যান্ড্রয়েড চালিত এমন স্মার্টফোনগুলো রয়েছে আক্রমণের ঝুঁকিতে। অ্যান্ড্রয়েড ফ্রোয়ো, জিঞ্জারব্রেড, আইসক্রিম স্যান্ডউইচ, হানিকম্ব, জেলিবিন, কিটক্যাট এবং ললিপপ, এ সবগুলো সংস্করণই আক্রমণের ঝুঁকিতে আছে।
জিম্পেরিয়াম জানায়, এ বছরের ৯ই এপ্রিল গুগলকে এ ত্রুটির বিষয়ে জানাও হয়েছে। একইসাথে এই ত্রুটি দূর করার জন্য একটি সমাধানও দেওয়া হয়েছে তাদের পক্ষ থেকে। তার ঠিক পরের দিনই গুগল তাদের নিশ্চিত করে জানায়, দ্রুতই অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের জন্য একটি প্যাচ উন্মুক্ত করা হবে।
সাধারণত কোন নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান অন্য কোন প্রতিষ্ঠানের সফটওয়্যার কিংবা অন্য পণ্যে কোন ধরণের নিরাপত্তা ত্রুটি খুঁজে পেলে তাদের ৯০ দিনের সময় বেধে দেয় ত্রুটিটি সারাতে। আর এই সময়ের মধ্যে ত্রুটির ব্যাপারে তাদের পক্ষ থেকে জনসম্মুখে কিছু প্রকাশ করা হয় না। কিন্তু ১০৯ দিন পার হয়ে গেলেও গুগল এখনও এই ত্রুটি দূর করার কোন উদ্যোগ নেয়নি। আর তাই নিয়ম অনুসারে বিষয়টি প্রকাশ করে জিম্পেরিয়াম।
এখন দেখার বিষয় গুগল কত দ্রুত এর সমাধান দেয়।