সাম্প্রতিক সময়ে টেলিভিশন, ক্যামেরা, ল্যাপটপ ও স্মার্টফোনে যে প্রযুক্তিটি ব্যাপক আলোচনা ও কৌতুহলের জন্ম দিয়েছে, তা হচ্ছে ফোরকে প্রযুক্তি। প্রায়ই শোনা যাচ্ছে, অমুক ব্র্যান্ড বিশ্বে প্রথমবারের মতো নিয়ে এসেছে ফোরকে প্রযুক্তির টেলিভিশন, তমুক ব্র্যান্ড নিয়ে এসেছে ফোরকে প্রযুক্তির স্মার্টফোন, কিংবা ল্যাপটপ বা ক্যামেরা।
সুতরাং আপনার যদি জানা না থাকে যে, ফোরকে প্রযুক্তি আসলে কী এবং এই প্রযুক্তির পণ্য এখন-ই আপনি ব্যবহার করবেন কিনা, তাহলে আপনার জন্যই প্রতিবেদন।
ফোরকে প্রযুক্তি কী?
ফোরকে প্রযুক্তির ছবি, ভিডিও, ডিসপ্লে নিয়ে মাতামাতি চলছে। ফোরকে হচ্ছে, বর্তমানের সর্বোচ্চ পিক্সেল রেজুলেশন। আধুনিক ফুল এইচডি ছবিতে যে পরিমাণ পিক্সেলের রেজুলেশন রয়েছে, তার চার গুণ বেশি হচ্ছে, ফোরকে। ফোরকে প্রযুক্তিকে ইউএইচডি (আল্ট্রা এইচডি) প্রযুক্তি হিসেবেও পরিচিত অভিহিত করা হয়ে থাকে।
কী সুবিধা পাওয়া যাবে?
ফোরকে প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে, এর ছবির লেআউট ৩৮৪০ বাই ২১৬০ পিক্সেল রেজুলেশনের, যা ফুল এইচডির ১৯২০ বাই ১০৮০ পিক্সেল রেজুলেশনের তুলনায় অনেক বেশি। তাই সোজা কথায় বলা যায়, ফোরকে প্রযুক্তির ছবিতে উচ্চতর গুনগত মান বজায় থাকে, ভালোভাবে বোঝা যায় এবং অনেক বেশি স্বচ্ছ, রঙিন, পরিস্কার ও বাস্তব। উদাহারণস্বরুপ বলা যায়, সিনেমাটোগ্রাফিতে অনেক দৃশ্য হারাতে বা ছেটে ফেলতে হতো রেজ্যুলেশন কম হওয়ার কারণে কিন্তু ফোরকে রেজ্যুলেশনের ফলে সে সকল দৃশ্য মুছে ফেলতে হয় না। ফলে দৃশ্যগুলো অনেক বেশি বাস্তব মনে হয়।
যা মনে রাখা দরকার
টিভি থেকে শুরু করে প্রজেক্টর, ক্যামেরা, কম্পিউটার মনিটরসহ বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন ডিভাইস রয়েছে, যেগুলো ফোরকে রেজ্যুলেশন সমর্থন করে। তবে মনে রাখা দরকার যে, ফোরকে রেজুলেশনের ডিভাইস কেনা মানে এই নয় যে, এর ভেতরের সব কনটেন্টগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফোরকে প্রযুক্তিতে রুপান্তরিত হবে। এটা নির্ভর করবে কনটেন্টের কোয়ালিটির ওপর। এছাড়া অনলাইনে ফোরকে বিষয়বস্তুর স্ট্রিমিং সেবার জন্য উচ্চগতির ইন্টারনেটের প্রয়োজন হবে।
এখনই ফোরকে প্রযুক্তিতে যাওয়াটা কতটা ঠিক হবে?
আরো বেশি সুযোগ সুবিধার জন্য পুরনো প্রযুক্তি ছেড়ে নতুন প্রযুক্তিকে বরণ করতে হবে, এটাই ট্রেন্ড। যেমন আমরা এসডি থেকে যতটা না দ্রুতগতিতে এইচডি প্রযুক্তিতে চলে গেছি, তার চেয়ে বেশি দ্রুতগতিতে ব্যবহার শুরু করেছি এইচডি থেকে ফুল এইচডি প্রযুক্তিকে। তবে ফোরকে প্রযুক্তি যেহেতু খুবই নতুন, সেহেতু এই প্রযুক্তির ডিভাইসের প্রয়োজনীয় কনটেন্ট কতটা রয়েছে সেটাও বিবেচনা করতে হবে। টেলিভিশনের ক্ষেত্রে চ্যানেলগুলো ফোরকে রেজল্যুশন সমর্থিত কিনা কিংবা কোন ব্লুরে প্লেয়ারগুলো এই প্রযুক্তি সমর্থিত, ফোরকে প্রযুক্তি সমর্থিত কী কী কনটেন্ট রয়েছে, এ বিষয়গুলো প্রাধান্য দিতে হবে। উদাহরণস্বরুপ বলা যায়, ফোরকে প্রযুক্তির কম্পিউটার মনিটরে গেম খেলার জন্য ফোরকে গেমিং কনটেন্ট কি পরিমান রয়েছে। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে খুব দ্রুত যে ফোরকে প্রযুক্তির কনটেন্ট বৃদ্ধি পাবে, সেটা নির্ধিধায় বলাই যায়।
ফোরকে প্রযুক্তির ভবিষ্যত
বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে, ফোরকে প্রযুক্তি টেলিভিশন, ফটো এবং ইমাজিং ইন্ডাস্ট্রিকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে, কিন্তু যেহেতু প্রযুক্তিটি খুবই নতুন, তাই এর উপযুক্ত সকল ধরনের কনটেন্ট ডেভেলপমেন্ট ও আয়ত্বে কিছুটা সময় লাগবে।
সুপেরিয়ার পিকচার কোয়ালিটির এই প্রযুক্তি অবিশ্বাস্য চিত্তাকর্ষক। ব্যবহারকারীরদেরকে খুবই উন্নত অভিজ্ঞতা দেবে। আর তাই মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট প্রদর্শনের সর্বাধুনিক রেজ্যুলেশন মান হিসেবে বর্তমানে ফোরকে রেজ্যুলেশন বিশ্বব্যাপী আলোচিত। তবে সর্বসাধারণের কাছে পৌঁছাতে বাঁধা হয়ে দাড়াবে ফোরকে প্রযুক্তি পণ্যের মূল্য। কেননা স্বাভাবিকভাবেই উচ্চ প্রযুক্তি উচ্চ মূল্যের হবে।