দর্শকের ভিড় আগের ম্যাচের মতো না হলেও সিডনির ব্ল্যাকটাউন অলিম্পিক পার্ক ওভালে কালও জড়ো হয়েছিল শ পাঁচেক প্রবাসী বাংলাদেশি। কিন্তু তাদেরও ফিরতে হলো হতাশা নিয়েই এবং এবার আরও গভীর হতাশা। মূল বিশ্বকাপে যাওয়ার আগে নিজেদের শেষ প্রস্তুতি ম্যাচে যে আইসিসির সহযোগী সদস্য আয়ারল্যান্ডের কাছে বাংলাদেশ দল হেরে গেছে ৪ উইকেটে!
ব্রিসবেনে দুই সপ্তাহের পর সিডনিতেও সপ্তাহ খানেক কেটে গেল বাংলাদেশ দলের। অস্ট্রেলিয়ায় এত আগে গিয়ে থাকার উদ্দেশ্য ছিল সেখানকার কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া। সে কাজটা ক্রিকেটাররা কতটা করতে পেরেছেন সেটা তাঁরাই ভালো বলতে পারবেন, তবে পারফরম্যান্সে এখন পর্যন্ত ইতিবাচক কিছু ধরা পড়ছে না। আগের ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রতিরোধ গড়ায় মনে হচ্ছিল আসল টুর্নামেন্ট শুরুর আগে বুঝি তেতে উঠছে বাংলাদেশ দল! কালকের হার সেই ধারণাকে ভুল প্রমাণ করল। ব্রিসবেনে একাডেমি মানের দল ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার কাছে পর পর দুই ম্যাচে এবং কাল আয়ারল্যান্ডের কাছেও হারে বাংলাদেশ দল বিশ্বকাপ শুরুর আগে মনোবলটা চাঙা করে নিতে পারল না।
টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে ৪৮.২ ওভারে অলআউট ১৮৯ রানে। ৬ উইকেট হারিয়ে ৪৭তম ওভারেই সে রান টপকে গেছে আইরিশরা। স্কোরকার্ডের ‘হাইলাইটস’ই বলে দিচ্ছে বাংলাদেশের হারের কারণ ব্যাটিং-ব্যর্থতা। সিডনিতে যোগাযোগ করে দলসূত্রে জানা গেল ব্যাটিং-ব্যর্থতার কারণটাও—ব্যাটসম্যানদের অসহিষ্ণুতা। ধৈর্য নিয়ে উইকেটে থিতু হওয়ার চেষ্টা করেননি কেউই। বেশির ভাগ ব্যাটসম্যানই আউট হয়েছেন ভুল শট খেলে। ভালো কথা, ওপেনার এনামুলকে অবশ্য ‘ধৈর্যশীল’ বলতেই হয়। তবে ৭২ বল খেলে কোনো চার-ছক্কা ছাড়া মাত্র ২৫ রান করার ‘ধৈর্য’ এক দিনের ম্যাচের সঙ্গে যায় কি না, সে প্রশ্ন তাঁকে করাই যায়।
৩০ রানের মধ্যে ফিরে গেছেন তামিম, মুমিনুল। তৃতীয় উইকেটে ৫৮ রানের জুটি গড়েছেন এনামুল ও সৌম্য। সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রান ওই সৌম্যের ৫১ বলে ৪৫। বাংলাদেশ ইনিংস নিয়ে এরপর আর বলার মতো একটা কথাই আছে—শেষ ৫ উইকেট পড়েছে মাত্র ৩৫ রানে! দুই পেসার জন মুনি আর ম্যাক্স সরেনসেন ৩ উইকেট করে নিলেও আয়ারল্যান্ডের বোলিং নাকি ছিল খুবই সাদামাটা।
সে তুলনায় বাংলাদেশের বোলাররাই বরং ভালো শুরু করেছিলেন। ৭৮ রানের মধ্যে ফেলে দিয়েছিলেন আইরিশদের ৪ উইকেট। কিন্তু ১৮৯ রানের পুঁজি নিয়ে কতক্ষণই বা আর লড়াই করবেন বোলাররা! পঞ্চম উইকেটে জয়েস-বালবার্নির ৫৯ এবং ষষ্ঠ উইকেটে বালবার্নি-কেভিন ও’ব্রায়েনের ৪১ রানের দুটি জুটিতেই জয় দেখা শুরু করে আয়ারল্যান্ড।
ক্যানবেরার মানুকা ওভালে ১৮ ফেব্রুয়ারি আফগানিস্তানের বিপক্ষে বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। কিন্তু চারটি প্রস্তুতি ম্যাচেই হারের পর সে ম্যাচে কতটুকু আত্মবিশ্বাস নিয়ে যেতে পারবে বাংলাদেশ দল? বিশেষ করে শেষ প্রস্তুতি ম্যাচে যখন হারটা আয়ারল্যান্ডের মতো সহযোগী দেশের কাছে!