!
ঠান্ডা একটা মানুষ, খুব বেশী কথাও বলেননা! জেন্টলম্যানদের গেম বলে খ্যাত ক্রিকেট নামের খেলাটার একজন সমার্থক বলা যায় যাকে। হাশিম আমলা, অসাধারন প্রতিভাবান এক ব্যাটসম্যান। “এক্সপ্লোসিভ” ধুমধাড়াক্কা ক্রিকেটের যুগে একজন পিউর ক্লাসিক্যাল খেলোয়াড়, যার কাধে ভর করে এবারের বিশ্বকাপের জয়ের স্বপ্ন দেখছে দক্ষিন আফ্রিকা।
দলের অন্য সবাই বিশ্বমঞ্চে পরিচিত বিগহিটার হিসেবে, তাদের আড়ালে নিজের কাজটা ঠিকই করে যাচ্ছেন নিয়মিতই। আর সেই কাজটাই বা কি! ১০০ এর চেয়ে কিছু বেশী ম্যাচ খেলে ১৯ টা শতক আর ঝুলিতে আছে ৫০০০ এর উপরের রান, যা কিনা করেছেন ৫৬.৪১ এর বেশী গড়ে!
একদিনের ক্রিকেটে তার চেয়ে কম ম্যাচ খেলে আর কোনো ব্যাটসম্যানই এক, দুই, তিন, চার ও পাঁচ হাজার রান করতে পারেন নি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৩০ টির বেশি শতক আছে এমন ব্যাটসম্যানদের মধ্যে ম্যাচ প্রতি শতক হঁকানোরে রেশিওটাও তার চেয়ে ভালো নেই আর কোনো ব্যাটসম্যানেররই। এক্ষেত্রে তিনি পেছনে ফেলেছেন স্যার ডন ব্র্যাডম্যান এবং শচীন টেন্ডুলকারকেও।
এবিডি ভিলিয়ার্স এক প্রান্তে দাড়িয়ে যখন নতুন করে লিখছেন ধুমধাড়াক্কা মারের বিশ্বরেকর্ড, তখনও অপর প্রান্তে অবিচল হাসিম আমলা! রেকর্ড দ্রুততম শতকের ম্যাচে তার রান ১৫৩, নিজেকে প্রমান করার কিছুই নেই, কিন্ত তার ১০ দিনের মাথায়ই ১৩৩, আবার। তাকে নিয়ে না ভাবার উপায় আছে প্রতিপক্ষের!
ফ্লাইটের ফর ফ্লাইট, একেক মাঠে, একেক দেশে খেলা। ক্রিকেটের এই যুগে এইতো নিয়ম। কিন্তু তা তাকে বিচলিত করে না একটুও। সব দেশে, মাঠে, একইরুপে তিনি! কুইন্টন ডি কক, ডেভিড মিলার আর রিলি রুশোর মত নতুনরা খেলতে যাচ্ছেন প্রথম বিশ্বকাপ, এক রোল মডেলকে সাথে নিয়ে! যার কাছ থেকে শেখার আছে অনেক কিছু, যার স্ট্রাটেজি ফেইল করেনা কখনোই!
আমলার কনসিস্টেনসি যেন রুপকথাকেও হার মানায়! দলের ভাইস ক্যাপ্টেন তিনি, লীডারদের কাছ থেকে যা চায় দল, কি নিষ্ঠার সাথেই না তিনি তা করে যাচ্ছেন!
বিশেষত “চোকারস” ট্যাগটা যখন মাথায়, বড় ম্যাচেই ভেঙ্গে পড়ার অভ্যাস যখন আগে থেকেই লেগে আছে দক্ষিন আফ্রিকা দলটার সাথে! তার “আনশেকেবল” ডিফেন্স, ফলপ্রসূ টেকনিক তখন আশার আলো পুরো দক্ষিন আফ্রিকার মানুষের। অন্যরা যদিও নার্ভ কন্ট্রোলে, প্রেশার কন্ট্রোলে হিমশিম খায় তখন অন্য দলের নয়, ইতিহাসের কোন ক্রিকেটারের নয়, হাসিম আমলার ব্যাটিংয়ে একবার তাকালেই যথেষ্ট!
কয়েকজন “নিজের দিনে জ্বলে ওঠা ক্রিকেটার আর একজন নিখুত টেকনিকের নির্ভরযোগ্য অগ্রপথিক, বিশ্বকাপ জয়ে এরচেয়ে বেশী কিইবা লাগে!