বিশ্বের প্রতিটি ক্রিকেট খেলুড়ে দেশের দিকে তাকালে দেখা যায় সে দলগুলোর উত্থানে বিশেষ ভুমিকা রেখেছিলো কিছু বিখ্যাত মানিকজোড়। এই যেমন জিম্বাবুয়ের অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার-গ্রান্ট ফ্লাওয়ার, অস্ট্রেলিয়ার স্টিভ ওয়াহ-মার্ক ওয়াহ, পাকিস্তানের ওয়াসিম আকরাম-ওয়াকার ইউনিস, শ্রীলঙ্কার মাহলো জয়বর্ধনে-সাঙ্গাকারা প্রমুখ। তেমনি বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসেও এসেছে সেরকম কিছু বিখ্যাত মানিকজোড়। দলে যাদের আগমনের পর থেকেই ইতিবাচক পরিবর্তনের হাওয়া দেখা গিয়েছে।
২০০০ সালে বাংলাদেশের টেস্ট স্ট্যাটাসের পর প্রথম মানিকজোড় হিসেবে আমরা পাই আশরাফুল ও মাশরাফিকে। সে সময় আমাদের ক্রিকেট খুবই নাজুক অবস্থায় ছিলো। আমাদের হারানোর কিছু নেই ধাচের ক্রিকেট যাকে বলে। দল খেলত সম্মান জনক স্কোরে জন্য। কিন্তু একসাথে দুই লড়াকু বাঘের আগমনে আস্তে আস্তে পুরো দলের চেহারাটাই পাল্টে গেল। টানা পাঁচ বছর জয়হীন থাকার পর এই দুইয়ের অনবদ্য নৈপূণ্যেই ২০০৪ সালে বাংলাদেশ দীর্ঘ ৪৭ ম্যাচ পর প্রথম জয়ের দেখা পায়। এর পর থেকে বাংলাদেশের জয় মানেই অ্যাশ-ম্যাশের কারিশমা।
দেখতে দেখতেই এসে গেল আরও একটি মানিক জোড়। ২০০৭ সালে সাকিব-তামিম দুজনই একসাথে বিশ্বকাপে খেলেন। তারপর থেকেই যেন দুজন নিজেদেরকে ছাড়িয়ে যাওয়ার মিশনে নামলেন। একদিকে আশরাফলের অফফর্ম আর অন্যদিকে মাশরাফির ইনজুরি। এর মাঝে দলের হাল ধরলেন এই দুই তরুন। আস্তে আস্তে নিজেকে মেলে ধরছেন সাকিব-তামিম। ২০০৯ সালে ব্যাটে বলে অসাধরণ নৈপূন্য দেখিয়ে সাকিব হলেন বিশ্বসেরা অল রাউন্ডার। আর তামিম ইকবাল গুড়িয়ে দিলেন ইংলিশ বোলিং লাইনআপ। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে নাম তুললেন লর্ডস এর অনার্স বোর্ডে। এখানেই থেমে না থেকে পরের ম্যাচেও হাঁকালেন আরও একটি দূর্দান্ত শতক। ২০১২ সালের এশিয়া কাপে বলতে গেলে এই দুই মানিকজোড়েরেোগল বন্দীতে ফাইনালেই চলে যায় বাংলাদেশ।
সময়ের সাথে সাথে সাকিব-তামিম জুটিরও পা্রয় সাত বছর পূর্ন হয়েছে। এখনই তো সময় আগামীর কোনো মানিকজোড়কে খুজে পাওয়া। হ্যা তাই। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ জাতীয় দলে দেখা যাচ্ছে আরও একটি মানিকক জোড়ের। বয়সভিত্তিক প্রায় সবগুলো দলেই একসাথে খেলেছেন। খেলার ধরন এবং ফ্যাশন স্টাইল দেখে যে কেউ বলবে সহদোর। ২০১১ সালে নাসিরের অভিষেক হলেও দলে সুযোগ পেতে সাব্বির এর একটু সময় লেগে যায়। অবশেষে ২০১৪ সালে এসে দলে জায়গা পান সাব্বির। অন্যদিকে অফফর্ম কাটিয়ে দলে নিজের হারানো জায়গা ফিরে পেয়েছেন নাসিরও। বিশ্বকাপের শেষ তিনিটিম্যাচ তো এক সাথেই খেললেন। পারফরম্যান্সও খারাপ ছিলো না। ধারণা করা হচ্ছে নাসির-সাব্বির এর যুগলবন্দীতে গড়া মানিকজোড়টা সামনের বেশ কয়েকটা বছর বাংলাদেশ দলকে সার্ভিস দেবে।