আনারস আমাদের দেশের অতি পরিচিত একটি ফল। এটি যেমন সুস্বাদু তেমনি এর পুষ্টিগুণও অনেক বেশি। সবচেয়ে বড় ব্যাপার আনারস দেহের ওজন কমাতে নানাভাবে সাহায্য করে। আসুন ওজন কমাতে আনারসের ভূমিকা সম্পর্কে জেনে নেই।
আনারসে ব্রোমেলাইন নামে এক ধরনের এনজাইম থাকে যা প্রোটিনকে ভেঙে দেয়। ব্রোমেলাইন হজম প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে। বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত যে, এই এনজাইম ওজন কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। সত্যি কথা বলতে মানুষের হজম প্রক্রিয়া ঠিক থাকলে দেহের অন্যান্য অঙ্গও ঠিকভাবে কাজ করে এবং দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সর্বাত্মক সাহায্য করে।
Clayton College of Natural Health এর তথ্য অনুসারে, “তাজা আনারসের রস মানুষের শরীরের ফ্যাটকে ভাঙতে সাহায্য করে। আর এর মধ্যে থাকা ব্রোমেলাইন অন্য এনজাইমের সহায়ক হিসাবেও কাজ করে।”
Purdue University এর তথ্য অনুসারে, “আনারস একটা ক্যাটাবলিক খাবার। অর্থাৎ এতে যে পরিমাণ ক্যালরি আছে, এটি তার চেয়ে বেশি পরিমাণ ক্যালরি পরিপাকে সাহায্য করে। এর ফলে দেহের অপ্রয়োজনীয় ক্যালরি কমে যায়।”
মানব দেহে পানির ভুমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ । আর পানি দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। আনারসে প্রচুর পরিমাণ পানির উপস্থিতি থাকে, যা মানব দেহের জন্য খুবই উপকারী। আর যে ফলের মধ্যে বেশি পানির উপস্থিতি থাকে, তা ওজন কমাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
আনারসে আছে বিভিন্ন ধরণের মিনারেল যেমন ম্যাংগানিজ, এবং কপার। এগুলো ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য বেশ সহায়ক। এছাড়া ম্যাংগানিজ হাড়কে শক্ত রাখতেও সাহায্য করে।
এছাড়া আনারসে আছে ভিটামিন বি১ (থায়ামিন)। এটা শর্করাকে পরিপাকে সাহায্য করে। তাই ভিটামিন বি১ এর উপস্থিতির জন্য আনারস ওজন কমাতে সাহায্য করে।
কীভাবে খাবেন?
যদি আপনি স্ন্যাক বা নাস্তা করতে চান, কয়েক টুকরো আনারস কেটে ফেলুন। তারপর খাওয়া শুরু করুন। যেহেতু এটি ফাইবারে পূর্ণ, এটা আপনার পাকস্থলিকে বেশ খানিকটা সময় ভরিয়ে রাখবে। যা আপনার ওজন কমাতে সহায়ক হবে। এছাড়া ফাইবার আপনার ক্লোরেকট্যাল ক্যান্সারের ঝুঁকিকে কমিয়ে দেয়। ফাইবার একজন মানুষের রক্তের গ্লুকোজ কমিয়ে দেয় যা দেহের জন্য ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে।
আপনার বাচ্চার ওজন কমাতে পারছেন না। তাকে বেশি করে আনারস খেতে দিন। আর বাচ্চারা আনারসের জুস খেতে খুবই পছন্দ করে। এটি তার শরীরের জন্য যেমন উপকারী হবে, ঠিক তেমনি শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করবে।
দুপুরের ভাত বাদ দিয়ে খেতে পারেন আনারসের সালাদ খেতে পারেন। ব্যায়াম করার পর পান করতে পারেন আনারসের জুস। তবে হ্যাঁ, খালি পেটে আনারস খাওয়া কিন্ত একদম উচিত হবে না। আর হ্যাঁ, মাছ বা মাংস রান্নাতেও কিন্তু ব্যবহার করা যায় আনারস।