কথায় আছে সকালের সূর্য দেখেই বোঝা যায় পুরো দিনটা কেমন যাবে। সত্যি বলতে কি আমাদের দিনের প্রথমটা ঠিকঠাক করে শুরু করতে পারার ভেতরেই লুকিয়ে থাকে পুরো দিনের সাফল্য। প্রত্যেকটি মানুষেরই নিজের একটা আলাদা ধরণ থাকে। অনেকে সকালে ঘুম থেকে উঠেই যেখানে বেরিয়ে পড়েন হাঁটতে, অন্যরা সেখানে প্রথমেই নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ঢুঁ মারেন বিছানায় শুয়েই। কিন্তু সফলেরা কি করেন? দিনের শুরুতেই কোন কাজটা করেন তারা? জানতে ইচ্ছে করছে তো! জেনে নিন আর মিলিয়ে নিন নিজের সাথে।
১. টনি রবিন্স-
বিখ্যাত এই লাইফ কোচ ও লেখক নিজের প্রতিটি সকাল কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের মাধ্যমে শুরু করেন। ঘুম থেকে উঠেই ১৫ মিনিট জীবনের ইতিবাচক দিকগুলো নিয়ে ভাবেন টনি। সেগুলোর জন্যে কৃতজ্ঞবোধ করেন। ভাবেন নিজের জীবন থেকে আর কি পেতে চান, কি করতে চান ভবিষ্যতে।
২. টিম কুক-
সাধারনত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো থেকে যতটা সম্ভব দুরত্ব বজায় রাখাকেই সফলতার রাস্তার একটি ছোট্ট ধাপ বলে মনে করা হলেও অ্যাপলের সিইও টিম কুক কিন্তু একেবারেই সেটা ভাবেননা। টিম সকাল ৪.৩০ এ ঘুম থেকে উঠে পড়েন। আর সাথে সাথেই নিজের দরকারি ইমেইল গুলো দেখে নেন। এতে করে পরবর্তীতে আফিস ও অন্যান্য কাজে সময় ও মনযোগ বেশি দেওয়া যায় বলে মনে করেন তিনি।
৩. মার্ক টোয়েন-
“ সকালে প্রথমেই একটি জীবন্ত ব্যাঙ খান এবং এরপর সারা দিনে এর চাইতে খারাপ কিছু আর ঘটবে না আপনার সাথে। “ অনেক বেশি অদ্ভূত শোনালেও মার্কের কথার অর্থটা কিন্তু আসলেই কাজের। দিনের প্রথমটা যদি অনেক কঠিন কাজ দিয়ে শুরু করা হয় তাহলে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাস, সহস আর প্রশান্তি পাওয়া যায়, যেটা কিনা বাকি দিনের কাজগুলো ভালো করে সম্পন্ন করতে সাহায্য করে।
৪. হাওয়ার্ড স্কাল্টজ-
স্টারবাকসের সিইও হাওয়ার্ড স্কাল্টজ প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই সারাদিনের কাজের একটা তালিকা করে নেন। কোন কাজটা আগে করতে হবে, কোনটা পরে সেটা সাজিয়ে ফেলেন তিনি। তবে সেই সাথে স্ত্রীর সাথে সাইকেল চালানো শেষ করে ৬ টার ভেতরে অফিসেও পৌঁছান তিনি।
৫. গেরাল্ডিন লেবার্ন-
কেবল বর্তমান নয়, ভবিষ্যত ও ভবিষ্যতের কারিগরদেরকে নিয়েও যথেষ্ট ভাবেন গেরাল্ডিন। আর তাই প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই অক্সিজেন চ্যানেলের এই সাবেক সিইও বেরিয়ে পড়েন হাঁটতে। আর এসময় তার সাথে থাকে বেশ কিছু তরুন-তরুনী।
৬. টিম আর্মস্ট্রং-
এওএল এর সিইও টিম সকালে প্রথমেই নিজের ইমেইলগুলোকে সাজিয়ে-গুছিয়ে পাঠিয়ে দেন। দেখে নেন দরকারি ইমেইলগুলোও। অফিসের ভেতরে সহকর্মীদের সাথে কথা বলতে, শুনতে ও শিখতেই বেশি আগ্রহী টিম। আর তাই অফিসের অনেকখানি ঝামেলাই সকাল সকাল শেষ করে ফেলেন তিনি। অফিসে পৌঁছানোর আগেই!
৭. বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন-
সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই নিজেকে যে প্রশ্নটি করতেন ফ্রাঙ্কলিন সেটা হচ্ছে- আজকে দিনে আমি কোন ভালো কাজটা করব? এভাবে দিনের শুরুতেই নিজেকে ইতিবাচকভাবে শুরু করতেন তিনি। চেষ্টা করতেন পুরোটা দিন মানুষের সাহায্য করে, তাদের পাশে থেকে দিনটাকে সফল করার।
৮. টড স্মিথ-
লিটল থিংস ম্যাটার বই এর লেখক ও সফল উদ্যোক্তা টড স্মিথ সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠেই সহকর্মীদেরকে সুপ্রভাত জানান। হয়তো সেটা সামনা সামনি নাও হতে পারে। তবে সরাসরি কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মাধ্যমে সবার খোঁজ-খবর নিয়ে তবেই দিনের শুরু করেন তিনি।
৯. জন গ্রিশাম-
বিখ্যাত এই লেখক প্রচন্ড রকম নিয়মানুবর্তী। প্রতিটি সকালেই ৫ টার ভেতরে ঘুম থেকে উঠে পড়েন তিনি। এরপর ৫.৩০ পর্যন্ত নিজে কফি উপভোগ করেন আর অফিসে চলে যান। তবে এর ভেতরেই তিনি এক পৃষ্ঠা লেখেন। সেটা আধাঘন্টা হোক কিংবা দুই ঘন্টা, এক পৃষ্ঠা লেখার পরেই ওকালতির কাজ শুরু করেন তিনি।
১০. লরা ভ্যান্ডারকম-
হোয়াট দ্যা মোস্ট সাকসেসফুল পিপল ডু বিফোর ব্রেকফাস্ট বই এর লেখক লরা ভ্যান্ডারকম বিশ্বাস করেন যে লেখালেখি অনেক বেশি মনযোগ আর নিষ্ঠার ব্যাপার। যেটা কিনা সকালের শান্ত পরিবেশেই একমাত্র করা সম্ভব। আর তাই সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রথমেই খানিকটা লিখে ফেলেন তিনি।