অফিসে একজন কর্মী হিসেবে আপনাকে বেশ কিছু নিয়মকানুন মেনে চলতে হবে। এগুলো লিখিত আকারে পেতে পারেন অথবা অঘোষিত কানুনও হতে পারে। মূলত সাধারণ জ্ঞান-বুদ্ধি থেকেই আপনার এ সম্পর্কে সজাগ থাকা উচিত। এখানে জেনে নিন এমনই পাঁচটি কাজের কথা, যা কর্মক্ষেত্রে ভালো চোখে দেখেন না কেউ।
১. কাছের বন্ধু খুঁজতে যাবেন না
ব্যক্তিগত ও পেশাদার সম্পর্ক সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়। জীবনের নানা স্তরে বন্ধুমহল যেভাবে গড়ে উঠেছে, সেভাবে কর্মজীবনে বন্ধুত্ব গড়ে উঠবে না। এখানে সবাই সহকর্মী। তাঁদের মধ্যে অনেকেই আপনার কাছের কেউ হতে পারেন, যাঁর সঙ্গে দারুণ বোঝাপড়া গড়ে উঠবে। কিন্তু অন্তরঙ্গ বন্ধু খুঁজতে গেলেই বিপদ। তাই ব্যক্তিগত জীবনের গোপন আলাপ যেমন সহকর্মীদের সঙ্গে করতে নেই, তেমনি অফিসের কাউকে নিয়ে একান্ত মতামত কারো কাছে খোলাসা করতে নেই। পেশাজীবনে অনেক কিছুই পেশাদার মনোভাব নিয়ে মেনে চলতে হয়।
২. অন্যের কাজে গোপনে চোখ দেওয়া
সহকর্মী কম্পিউটারে কী করছেন, তা আড়চোখে দেখাটা রীতিমতো অনধিকারচর্চা। এর চেয়ে বিরক্তিকর কাজ আর হয় না। একইভাবে কেউ ই-মেইলে কী লিখছেন বা কারো সঙ্গে চ্যাটিংয়ে কী বলছেন, এসব দেখতে যাওয়াটা আপনার জন্য সম্মানহানিকর হয়ে উঠতে পারে। এভাবে অন্যের ব্যক্তিগত বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে গেলে আপনিও ব্যক্তিস্বাধীনতা ভোগ করতে পারবেন না। প্রত্যেকের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা তার মতো করে রক্ষা করার অধিকার খর্ব করতে যাবেন না।
৩. বেতন নিয়ে আলোচনা নয়
কেউই নিজের বেতন নিয়ে আলোচনা করতে চান না। কেউ বেশি পান বা কম, এ নিয়ে আলোচনার কিছু নেই। কোনো অভিযোগ থাকলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে পারেন। অন্য কারো বা নিজের বেতন নিয়ে কোনো বাজে মন্তব্য করা কর্মীদের সাজে না। এককথায় বলা যায়, অফিসে এই কাজ আপনার নয়। কাজেই এসব করতে গিয়ে কোনো কটু মন্তব্যের শিকার হলে এর দায় আপনারই। এমন অপেশাদার আচরণ থেকে নিজেকে দূরে রাখুন।
৪. বসের পোষা প্রাণী বনে যাবেন না
সবাই তার বিভাগীয় বসের প্রিয়পাত্র হতে চান। এ জন্য সব সময় বসের গুণগান করা বা বসের অপেশাদার আচরণ নিয়ে কেউ মন্তব্য করলে তার পেছনে লেগে যাওয়া কর্মীসুলভ আচরণ নয়। আপনি যদি বসের পোষা প্রাণী বনে যান, তবে সহকর্মীদের চোখে আপনার অবস্থান কী দাঁড়াচ্ছে তা ভেবে দেখুন। নিজের পুরনো অভিজ্ঞতা থেকেই শিক্ষা নিতে পারেন। স্কুলে রাগী শিক্ষকের একনিষ্ঠ ভক্ত হয়ে যারা আপনাকে বেতের বাড়ি খাওয়াত, তাদের প্রতি কেমন মানসিকতা রাখতেন তা ভেবে দেখুন।
৫. উচ্চ স্বরে কথা বলবেন না
এটা সাধারণ ভদ্রতাসূচক আচরণ। মোবাইল ফোনে বা অফিসের ফোনে পুরনো বন্ধুর সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে পরিবেশ-পরিস্থিতি ভুলে গেলে চলবে না। অফিসে উচ্চ স্বরে কখনো কথা বলতে নেই। এতে অন্যের বিরক্তির কারণ হচ্ছেন আপনি। আবার তাদের কাছে জ্ঞানবুদ্ধিহীন ও অভদ্র বলে বিবেচিত হতে বেশি সময় লাগবে না। কোনো সহকর্মীর সঙ্গে আলাপচারিতার ক্ষেত্রে একই বিষয় মনে রাখতে হবে।