“উদ্যোক্তা” শব্দটিকে নারী কিংবা পুরুষ দিয়ে বিশেষায়িত করাটা খুব একটা গৌরবের কিংবা মহিমান্বিত বোধ করার বিষয় নয়। নারী, পুরুষ কিংবা তৃতীয় লিঙ্গের সবাইকে “মানুষ” হিসেবে চিন্তা করে কাজ করলেই যেকোন ধরণের কাজই সহজ হয়ে যায়। কিন্তু, বাংলাদেশ তথা পুরো বিশ্বেই বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সামাজিক কিংবা পারিপার্শ্বিক নানা কারণে “নারী” শব্দটি দ্বারা বিশেষায়িত করা হয় খুব বেশি। আর শুরু থেকেই এমন বিভাজনের কারণেই নারীরা নিজের পছন্দের ক্ষেত্রে বিচরণ করতে অস্বস্তির মুখে পরতেন, বাঁধা পেতেন প্রতি পদেই।
তবে সময় পাল্টেছে, একটু একটু করে বদলাতে শুরু করেছে সবার মানসিকতাই। ঠিক এই কারণেই নারীর স্বচ্ছন্দ্য বিচরণ আমরা দেখতে পাই চারিদিকে। অনেক নারীই নিজেদের ইচ্ছে ও চেষ্টার একাগ্রতায় হয়ে উঠেছে সফল উদ্যোক্তা। কেউবা আবার সেই পথেই হাঁটার স্বপ্ন দেখছেন। যারা সেই স্বপ্নের পথে হাঁটার ইচ্ছে পোষন করছেন তাঁদের সাহস ও সম্মান জানিয়েই কিছু টিপস জানিয়ে দিচ্ছি আজ:
১। নারী হওয়াকে অসুবিধা হিসেবে দেখা বন্ধ করুন
সবার আগে নিজেকে বদলানো, নিজেকে নিজে মানসিক সাহায্য করাটা জরুরী। তাই নিজেকে নারী হিসেবে দেখে তাকে “অসুবিধা” মনে করে বন্ধ করুন। বরং “নারী দশভুজা” এই মন্ত্রে দীক্ষিত করুন নিজেকে। নিজেকে কোন অংশে মানসিকভাবে পিছিয়ে রাখবেন না আগে থেকেই।
২। অনুপ্রেরণা নিন সফলদের জীবনগাঁথা থেকে
বেগম রোকেয়া থী হাল আমলের শেরিল স্যান্ডবার্গ যেকেউ হতে পারে আপনার অনুপ্রেরণা। কিংবা বেছে নিতে পারেন কাছের কোন সফল মানুষকে। বেশি বেশি সফল মানুষের বই পড়ুন, তাঁদের জীবন সম্পর্কে জানুন। এতে নিজের প্রতি আত্নবিশ্বাস বাড়বে বহুগুণে।
৩। নিজের সামর্থ সম্পর্কে জানুন
কোন দিকটিকে আপনি সবাইকে ছাপিয়ে সেরা হতে পারেন, কোন দিকটিতে আপনি নিজেকে বেশি সামর্থবান ও স্বচ্ছন্দ্য মনে করেন সেদিকে নজর দিন। এই বিষয়ে প্রতিনিয়ত অনুশীলন করতে থাকুন।
৪। অন্যের সাথে নিজেকে পরিমাপ করবেন না
প্রত্যেকেরই নিজস্ব পছন্দ, অপছন্দ ও ভালোলাগা রয়েছে। সেদিক থেকেই কাজের জায়গাটিও ভিন্ন সবার। আবার প্রত্যকেরই কাজ করার ধরন আলাদাও হতে পারে। তাই নিজের সাথে অন্যের কাজের দিক চুলচেরা বিশ্লেষণে সময় না দিয়ে বরং সময় দিন নিজের উন্নতির দিকে। এছাড়া একেক ব্যবসায়ীর কৌশন একেক রকম হতে পারে। তাই এসব দিক ভাবা উচিৎ নয় একজন উদ্যোক্তার।
৫। নিজেকে জানুন
নিজেকে জানুন প্রতিনিয়ত। ফোকাসড থাকুন নিজের কাজে। নিজেকে ভালোবাসুন। আত্নবিশ্বাস বাড়াতে নিজের ভালো ও খারাপ দিকগুলো পর্যালোচনা করুন। দিন যাওয়ার সাথে সাথে কতটা উন্নতি বা অবনতি হচ্ছে সেগুলো নোট রাখুন।
৬। পুরুষ গ্রাহক কিংবা অধিনস্তদের সাথে স্বাচ্ছন্দ্য হোন
অনেক নারীকেই নিজেকে নারী গ্রাহক কিংবা নারী অধিনস্তদের মধ্যেই বন্দী থাকতে দেখা যায়। এটি খুব একটা ভালোদিক হতে পারে না একজন উদ্যোক্তার জন্য। বরং চারিদিকে নিজেকে ছড়িয়ে দিন। সবার সাথেই ধীরে ধীরে স্বাচ্ছন্দ্য হতে চেষ্টা করুন। এতে নিজের ব্যবসায়ের পরিধি বাড়ার সাথে সাথে অনেক সুযোগও আসতে পারে হাতের মুঠোয়।
৭। বিশ্বাস রাখুন
“আমি পারবো” এই বিশ্বাস মনেপ্রানে ধরে রাখাটা খুব জরুরী। তানাহলে হয়তো প্রতিপদেই পিছিয়ে পরতে হবে। তাই শেষকথা হলো, নিজেকে বিশ্বাস করুন, নিজের ক্ষমতার সর্বোচ্চ ব্যবহার করুন।