প্রতি বছর স্ট্রোক করে মৃত্যুবরণ করে থাকেন হাজার হাজার মানুষ। মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহে সমস্যা হওয়ার কারণেই মূলত স্ট্রোক হয়। স্ট্রোক প্রধানত দু ধরণের হয়ে থাকে। আইস্কেমিক স্ট্রোক, যার কারণে মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধে এবং রক্ত প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায় এবং হেমোরেজ স্ট্রোক, যার কারণে মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহকারী শিরা ফুটো হয়ে মস্তিষ্কে রক্ত ছড়িয়ে পড়ে। দুধরণের স্ট্রোকই মারাত্মক ক্ষতিকর। স্ট্রোকের কারণে মিনিটে ১.৯ মিলিয়ন মস্তিস্কের কোষ নষ্ট হয়। তাই শারীরিক এমন কোনো লক্ষণ যা স্ট্রোকের আভাস প্রদান করে তা মোটেও অবহেলা করবেন না। কিন্তু অনেকেই স্ট্রোকের মারাত্মক কিছু লক্ষণ একেবারেই পাত্তা না দিয়ে সমস্যায় পড়েন। আজকে জেনে নিন কোন লক্ষণগুলো অবহেলা করার কারণে মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়ছেন আপনি।
১) দৃষ্টিশক্তিতে সমস্যা
একটি জিনিসকে দুটি দেখতে পাওয়া, ঘোলাটে দৃষ্টি, এক চোখে রঙ দেখতে না পাওয়া ইত্যাদি চোখের সমস্যা, ক্লান্তি বা বয়স হয়ে যাওয়ার লক্ষণ নয়। মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়া বা রক্তপ্রবাহ কমে যাওয়ার কারণে এই ধরণের সমস্যা হতে পারে। সুতরাং সমস্যা মারাত্মক পর্যায়ে যাওয়ার আগেই সতর্ক হোন, অবহেলা করবেন না।
২) হাত পা অবশ বোধ হওয়া
আপনি যদি মনে করেন উল্টোপাল্টা হয়ে শোয়ার কারণে বা অতিরিক্ত দুর্বলতার জন্য হাত পা অবশ হয়ে আসছে তাহলে আপনি হয়তো ভুল ভাবছেন। ঘুম থেকে উঠার পর যদি হাত পা অনুভূতি শূন্য ও অবশ লাগতে থাকে তাহলে মোটেও অবহেলা করবেন না। ইউনিভার্সিটি অফ মায়ামি নর্থ স্কুল অফ মেডিসিনের নিউরোলজি প্রোফেসর রালফ বলেন, এই ধরণের হাত পা অনুভূতি শূন্য ও অবশ লাগতে থাকা মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ কমে যাওয়ার লক্ষণ যা মোটেই অবহেলার নয়।
৩) কথা বলতে অসুবিধা হওয়া
অনেকেই মনে করেন তাদের ব্যথানাশক ঔষধ বা অন্যান্য ঔষধের কারণে ঘুম জড়িত গলার স্বর বা কথা বলতে অসুবিধা হচ্ছে এবং অবহেলা করে পাশ কাটিয়ে যান। কিন্তু এটিও ব্রেইন স্ট্রোকের লক্ষণ হতে পারে, তাই অবহেলা নয়।
৪) পায়ের উপর ব্যাল্যান্স করে দাঁড়াতে বা হাঁটতে অসুবিধা হওয়া
কোনো ধরণের ঔষধের কারণে বা শারীরিক দুর্বলতার কারণে মাথা ঘোরানোর কারণে আপনার নিজের পায়ের উপর ব্যাল্যান্স করে দাঁড়াতে সমস্যা হচ্ছে না। নিউরোলজিস্টদের মতে এটি স্ট্রোকের অন্যতম প্রধান লক্ষণ। সুতরাং অবহেলা করবেন না।
৫) অতিরিক্ত মাথাব্যথা হওয়া
মাথাব্যথাকে কেউই তেমন পাত্তা দেন না। কারন অনেক সময় সামান্য কারণেই মাথাব্যথা হতে পারে। তাই মাথাব্যথার সমসসাকে গুরুত্ব না দিয়ে অনেকেই মাইগ্রেনের ব্যথা মনে করে চুপচাপ বসে থাকেন। কিন্তু হুট করে অতিরিক্ত মাথাব্যথা হওয়া এবং যে ব্যথা সহ্য করার মতো নয় এমন ব্যথা স্ট্রোকের সময় হেমোরেজের প্রধান লক্ষণ। তাই অবহেলা নয় মাথাব্যথাকেও।