আলু খেলে ওজন বাড়ে বলে প্রচলিত ধারণা থাকলেও বিজ্ঞানীরা বলছেন তার উল্টো কথা। কানাডার ম্যাকগিল ইউনিভার্সিটির একদল বিজ্ঞানীর দাবি- আইরিশ আলুতে থাকা পলিফেনল শরীরের বাড়তি চর্বি ও পরিশোধিত শর্করা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
সম্প্রতি টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে একই কথা বলা হয়েছে, গবেষণার ফলাফল এতোটাই চমকপ্রদ ছিল যে বিজ্ঞানীরা বিষয়টি পুরোপুরি নিশ্চিত হতে দ্বিতীয়বার একই পরীক্ষা চালান। প্রতিবেদনে বলা হয়, এই গবেষণার অংশ হিসেবে বিজ্ঞানীরা কয়েকটি ইঁদুরকে টানা ১০ সপ্তাহ ধরে এমন খাবার দেন যা শরীরে বাড়তি মেদ যোগ করতে ভূমিকা রাখে। ১০ সপ্তাহ পর দেখা যায়, গড়ে ২৫ গ্রাম ওজনের ইঁদুরগুলোর ওজন ১৬ গ্রাম করে বেড়ে গেছে।
পরীক্ষার দ্বিতীয় ধাপে বিজ্ঞানীরা ২৫ গ্রাম ওজনের কয়েকটি ইঁদুরকে ১০ সপ্তাহ ধরে একই ধরনের খাবারের সঙ্গে আলুর তৈরি কিছু খাবারও খেতে দেন। এতে দেখা যায়, ইঁদুরগুলোর ওজন গড়ে ৭ গ্রামের মতো বেড়েছে। গবেষকদের একজন অধ্যাপক লুইস অ্যাগেলন বলেন, 'গবেষণার ফলাফলে আমরা রীতিমতো বিস্মিত। প্রথমে আমরা ভেবেছিলাম ফলাফলটি সঠিক নয়। তাই নিশ্চিত হতে আমরা ভিন্ন ঋতুতে উৎপাদিত আলু নিয়ে আবারও একই পরীক্ষা চালাই এবং তাতেও একই ফলাফল আসে।'
এ গবেষণার ফলাফল বলছে, আলুতে থাকা রাসায়নিক উপাদান পলিফেনল শরীরের অতিরিক্ত স্থূলতা ও টাইপ-টু ডায়াবেটিস প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ সমাধান হয়ে উঠতে পারে। গবেষক দলের প্রধান স্ট্যান কুবাও বলেন, 'আলু অনেক সস্তায় উৎপাদন করা যায় এবং বিশ্বের অনেক দেশেই প্রাথমিক খাদ্য তালিকায় এটি রয়েছে। তবে আমরা আলুর একটি জাত নির্বাচন করেছি, যা উচ্চমাত্রায় পলিফেনল সমৃদ্ধ এবং কানাডায় খাওয়া হয়।'
তিনি জানান, যদিও মানুষ ও ইঁদুরের বিপাক প্রক্রিয়া একই ধরনের, তা সত্ত্বেও এই গবেষণার ফলাফল মানুষের ক্ষেত্রেই একইভাবে প্রযোজ্য হবে কিনা তা জানার জন্য মানুষের ওপরেও একই ধরনের গবেষণা চালানোর প্রয়োজন রয়েছে।