দেহ-মন সুস্থ রাখতে ঘুমের বিকল্প নেই বলে জানান বিজ্ঞানীরা। ঘুমের অভাব দূর করা তাই অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কিন্তু অতিরিক্ত ঘুমানো কী স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে? প্রতিদিন যেখানে ৭-৯ ঘণ্টার ঘুম জরুরি, সেখানে আরো বেশি সময় ঘুম হলে উল্টো সাত ধরনের স্বাস্থ্যহানি ঘটতে পারে। জেনে নিন বেশি ঘুমানোর ক্ষতিকর দিকগুলোর কথা।
বিষণ্নতার ঝুঁকি সৃষ্টি করে :
২০১৪ সালের এক গবেষণায় বলা হয়, বেশি সময় ধরে ঘুমানোর ফলে মানুষের মধ্যে বিষণ্নতার লক্ষণ প্রকাশ পায়। পরীক্ষায় দেখা যায়, যারা ৯ ঘণ্টা ও তার বেশি সময় ঘুমান, তাঁদের মধ্যে বিষণ্নতার লক্ষণ ৪৯ শতাংশ বেড়ে যায়।
মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা দুর্বল করে :
২০১২ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, খুব কম বা খুব বেশি সময়ের ঘুম মস্তিষ্কের কাজ করার ক্ষমতা হ্রাস করে। নারীরা পাঁচ ঘণ্টার কম অথবা ৯ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে নিয়মিত ঘুমালে দুই বছরের জন্য তাঁদের মগজের কর্মক্ষতা কমে যেতে পারে।
গর্ভধারণে সমস্যা করে :
কোরিয়ায় ২০১৩ সালের এক গবেষণায় দেখানো হয়, অতিরিক্ত ঘুমের কারণে নারীদের গর্ভধারণের ক্ষমতা হ্রাস পায়। প্রায় ৬৫০ জন নারীর ওপর এ গবেষণা পরিচালিত হয়। খ্যাতিমান অ্যান্ডোক্রাইনোলজিস্ট ড. ইভান রোজেনব্লাথ বলেন, ঘুমের সঙ্গে দেহের ২৪ ঘণ্টার জৈবিক চক্র, হরমোন ক্ষরণ এবং ঋতুস্রাবের বিষয়টি জড়িত। এসব আবার গর্ভধারণের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত।
ডায়াবেটিসের শঙ্কা বাড়ে:
কানাডার কুইবেক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় বলা হয়, রাতে আট ঘণ্টার বেশি ঘুমের কারণে রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা হারায় দেহ। এতে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের শঙ্কা বেড়ে যায়।
ওজন বৃদ্ধির শঙ্কা থাকে :
একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক গবেষণায় বলা হয়, খুব কম বা বেশি ঘুমের কারণে দেহের ওজন অস্বাভাবিক হারে বাড়তে থাকে। এসব মানুষের ওজন বৃদ্ধির হার ২৫ শতাংশ বেশি থাকে। অতিরিক্ত ঘুমের কারণে স্থূলতা দেখা দিতে পারে।
হৃদযন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে :
আমেরিকান কলেজ অব কার্ডিওলজি ২০১২ সালে এক গবেষণা চালায়। সেখানে বলা হয়, আট ঘণ্টার বেশি সময় নিয়মিত ঘুমালে হৃদযন্ত্রের সমস্যা বাড়তে থাকে। অতিরিক্ত ঘুমান এমন তিন হাজার মানুষের ওপর পরীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে, অন্যদের অপেক্ষা দ্বিগুণ পরিমাণ এনজিনা এবং দেড়গুণ করোনারি আর্টেরি রোগের ঝুঁকিতে ভোগেন তাঁরা।
আয়ু কমতে পারে :
২০১০ সালে ১৬টি ভিন্ন ভিন্ন গবেষণা নিয়ে একটি রিভিউ প্রকাশিত হয়। সেখানে বলা হয়, যাঁরা বেশি ঘুমান তাঁদের দ্রুত মৃত্যুর শঙ্কা অন্যদের চেয়ে ১ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি থাকে। ওই গবেষণাগুলো ১৩ লাখ ৮২ হাজার ৯৯৯ জন মানুষের ওপর পরিচালিত হয়।