আবহাওয়া পরিবর্তনের সাথে সাথে শিশুদের ত্বকে নানারকম সমস্যা দেখা যায়। র্যা শ, চুলকানি, ত্বকের লাল হয়ে যাওয়া এরকম বিভিন্ন ত্বকের সমস্যা আপনার শিশুকে কষ্ট দিতে পারে। তবে চিন্তার কিছু নেই। সঠিক চিকিত্সাে এবং সামান্য সচেতনতা আপনার শিশুকে রাখতে পারে সুস্থ।
ইনফ্যানটাইল সেবোরিক ডার্মাটাইটিস
ছোট শিশুদের বিশেষ করে যাদের বয়স এক বছরেরও কম সময় তাদের ক্ষেত্রে এই রোগ বেশি হয়। প্রায় ১০-১২% শিশুদের মধ্যে এই সমস্যা দেখা দেয়।
লক্ষণ
শিশুদের মাথায় খুব খুশকি হয়।
গলায়, বগলে, থাইয়ের খাঁজে, ন্যাপি এরিয়ায় লাল লাল দাগ হয়, চামড়া উঠতে শুরু করে। মাঝে মাঝে রস বের হয়।
চোখের পাতায়, চোখের পলকে স্কেলস হতে পারে।
কী করবেন
নিয়মিত নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল বাচ্চার চুলে লাগান। দুই থেকে তিন মাস মাথায় তেল লাগানো প্রয়োজন।
কিটোকোনিজল বা জিংক পাইরেথিওন সমৃদ্ধ শ্যাম্পু দিয়ে সপ্তাহে দুই থেকে তিন বার শিশুর চুল পরিষ্কার করুন। দুই থেকে তিন মাস এই চিকিত্সা় করতে হবে।
যেহেতু ত্বকে ইরিটেশন হয় তাই শিশুরা প্রায়ই এই জায়গাগুলো চুলকে ফেলে। ফলে চামড়া উঠে যাওয়াটা স্বাভাবিক। তাই ডাক্তারের পরামর্শে কোনো মলমজাতীয় ওষুধ লাগান।
শিশুর গায়ে ভালো করে তেল মাখান। নারকেল তেল, অলিভ অয়েল বা আমন্ড অয়েল দিয়ে ভালো করে মাসাজ করে সাবান ব্যবহার করুন। বাচ্চার জন্য লিকুইড সোপ সবচেয়ে ভালো। সাবানের পিএইচ মাত্রা শিশুর ত্বকের পিএইচ মাত্রার সমান সেরকম সাবান শিশুর ত্বকের জন্য উপযোগী।
অ্যাটপিক প্রবলেম
আবহাওয়ার কারণে শিশুদের ত্বক অনেক সময় অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে যায়। তার সঙ্গে এগজিমার মতো সমস্যাও হতে পারে। বারবার হাঁচি হতে পারে, যাকে বলা হয় অ্যালার্জিক রাইনাইটিস। পরিবারে কারো যদি এগজিমা বা অ্যাজমা থাকে, তাহলে তা বাড়ির শিশুদের মধ্যে বংশগতভাবে চলে আসতে পারে। তবে এসব সমস্যা সাধারণত শীতকালে বেশি হয়।
কী করবেন
শিশুকে নিয়মিত নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল দিয়ে মাসাজ করুন। ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা অত্যন্ত জরুরি। হোয়াইট সফট প্যারাফিন বা ফসপোলিপিড সমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজার শিশুর ত্বকের পক্ষে উপকারী।
শিশুকে নিয়মিত ঈষদুষ্ণ পানিতে গোসল করান। খেয়াল রাখবেন পানির তাপমাত্রা যেন ৩৭ ডিগ্রির বেশি না হয়। দ্রুত গোসল করানোর চেষ্টা করুন, পাঁচ মিনিটের বেশি গোসল না করানো ভালো। এতে ত্বকের কর্নিয়াল লেয়ার ফুলে গিয়ে প্রদাহ হতে পারে।
শিশুর সারা গায়ে যদি প্রচণ্ড চুলকানি হয় তাহলে দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন।
মনে রাখুন
শিশুকে সরিষার তেল মাখাবেন না। সরিষার তেল থেকে ফুসকুড়ি বা প্রদাহ হতে পারে। সরিষার তেল মাখিয়ে বাচ্চাকে রোদে রাখার যে প্রচলিত রীতি আছে তা একেবারেই অনুচিত। এতে ত্বকের পিগমেন্টেশন বেড়ে যায় এবং শিশু কালো হয়ে যায়।
শিশুর ব্যবহারের সাবান এবং শ্যাম্পু সম্বন্ধে সচেতন থাকুন। বিজ্ঞাপন ভালো লাগলেই শিশুর জিনিস কিনে ফেলবেন না। যেসব সাবান বা শ্যাম্পু কোয়ালিটি কন্ট্রোলের মাধ্যমে পরীক্ষিত, সেসব পণ্য ব্যবহার করুন।