Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.
Health Image

মরণব্যাধি এইডসের ওষুধ আবিষ্কার



অবশেষে মরণব্যাধী এইডসের ওষুধ আবিষ্কারের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছেন বিজ্ঞানীরা। এইডসের মতো প্রায় হুবহু মারাত্মক ভাইরাসে আক্রান্ত বেশ কয়েকটি বানরের ওপর পরীক্ষা চালিয়ে বিস্ময়কর সাফল্য পেয়েছেন তারা।

এটি এইচআইভি ভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কারের দীর্ঘদিনের গবেষণার পথে বড় ধরনের অর্জন বলে ধারণা করা হচ্ছে।সম্প্রতি নেচার সাময়িকীতে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে বুধবার বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, অতি প্রাচীন ম্যাকাকু প্রজাতির বানরের দৈহিক গঠনের সাথে মানব দেহের বেশ মিল রয়েছে। সে কারণে আক্রান্ত এসব বানরের দেহে মারাত্মক এই ভাইরাস ব্যাপকভাবে প্রতিরোধ করতে সক্ষম নতুন ধরনের ওষুধ প্রয়োগ করে দেখা হয়।

এতে এসআইভি (সিমিয়ান ইম্যুনোডিফেসিয়েন্সি ভাইরাস) ভার্সনের এ ওষুধগুলো বারবার উচ্চমাত্রায় ব্যবহার করা হয়।এর আগে ২০১৩ সালেও বানরের ‍উপর পরীক্ষা চালিয়ে এইচআইভি ভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কারের চেষ্টা চালিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা।

তবে তারা এবারের এ প্রচেষ্টা খুবই কার্যকর বলে অভিহিত করেছেন।যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার স্ক্রিপস রিসার্চ ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক ও এ গবেষণা প্রধান মিশেল ফারজান বলেন, ‘এইচআইভি-১ মানব দেহে বিস্তারিত ভাইরাসের প্রধান গ্রুপ।

আমরা এই এইচআইভি ১-কে প্রতিরোধ করার মতো একটি দীর্ঘমেয়াদি কার্যকর ভ্যাকসিন অর্জনের পন্থা দেখাই।’গবেষণায় এর মূল ওষুধকে ইসিডিফোর-এলজি বলা হয়। এতে একটি কোষের আস্তরে থাকা প্রোটিনের (যেটি নির্দিষ্ট মলিকিউলগুলোকে এই আস্তরে বেঁধে রাখে।

যাতে এসব বিশেষ ধরনের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণের ফলে কোষের ভেতরে শোষণ করা যেতে পারে।) দুধরনের অনুকৃত উপাদান রয়েছে। একইসাথে প্রোটিনের ঢোকা ও বের হওয়ার কিছু পয়েন্টও রয়েছে।

যেখানে রোগ প্রতিরোধকারী কোষগুলোর মূল দূর্গ সিডিফোর কোষগুলোও রয়েছে। এই দূর্গের মুখে এসে এইচআইভি ভাইরাসগুলো ব্যাপকভাবে বাধাপ্রাপ্ত হয়।

গবেষণায় এই ইসিডিফোর-এলজির অনুকরণেই এইডসের ভ্যাকসিন তৈরির চেষ্টা চালানো হয়। মূলত প্রোটিনের ঢোকা ও বের হওয়ার যে প্রক্রিয়া রয়েছে তা পাকাপাকিভাবে শুরু হওয়ার আগেই তাতে বিশেষ ধরনের প্রতিরোধকারী কৌশল হিসেবে কাজ করে এই ভ্যাকসিন। যাতে কোনোভাবেই ভাইরাস ছড়িয়ে না পড়ে।

মোটকথা এই ভ্যাকসিনে এমন সব উপাদান রয়েছে যা কার্যকরভাবেই ভাইরাস প্রবেশ করার দরোজাই বন্ধ করে দেয়। বিজ্ঞানীরা এই গবেষণাকে খুবই কার্যকর অর্জন হিসেবে দেখছেন।

তারা আশা প্রকাশ করেছেন, আরো পরীক্ষা নিরীক্ষার প্রয়োজন থাকলেও খুব শিগগিরই এইচআইভি আক্রান্ত মানুষের জন্যও বানরের ভ্যাকসিনের অনুকরণে নতুন ভ্যাকসিন তৈরি করা সম্ভব হবে।

এক প্রতিক্রিয়ায় মিশেল ফারজান বলেন, এই ওষুধ ‘খুবই শক্তিশালী প্রতিরোধ ক্ষমতা’ তৈরি করে।দীর্ঘ গবেষণার পর ৪০ সপ্তাহ ধরে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে এই গবেষণা প্রতিবেদন তৈরি করা হয়।

একটি বিশেষ কন্ট্রোল গ্রুপের মাধ্যমে আক্রান্ত বানরগুলোর দেহে অন্তত ৪ বার ইনজেকশন দিয়ে পরবর্তী পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়।

জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১৯৮১ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৭ কোটি ৮ লক্ষ মানুষ মরণব্যাধি এইচআইভি-তে আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৩ কোটি ৯০ লক্ষ আক্রান্ত রোগী মারা যায়।