পেট, পরিবার তাঁকে বাধ্য করে লাইনে নামতে। টেনে আনে নিষিদ্ধ জীবনের অন্ধকারে। পড়াশোনা না-জানা সেই মেয়েই একদিন হয়ে ওঠেন মুখমন্ত্রী! নিষিদ্ধপল্লির লক্ষণরেখা মুছে বেরিয়ে আসেন।মুখ্যমন্ত্রী! ভাবনাতেই ছিল না কোনও দিন। ভাববেনই বা কী করে, দিন-আনা দিন-খাওয়া পরিবারের মেয়েটি! ঘটনাচক্রে নিষিদ্ধজীবনে প্রবেশ করেও কখনো নিজের মর্যাদাকে ভূলুণ্ঠিত হতে দেননি। দু’শো টাকার বিনিময়ে দেহ বিক্রি করেছেন। এক টাকা বেশিও নয়, কমও নয়।সে মেয়েই একদিন জড়িয়ে পড়েন রাজনীতিতে। বা, রাজনীতিই তাঁকে জড়িয়ে নেয়। কিন্তু, রাজনীতিক হওয়ার কথা ছিল না তাঁর। এভাবে সময়ই শেষ অবধি শেষকথা বলে এসেছে। কাকে নিয়ে কোথায় যে ফেলে!কুন্দন শাহ-র ‘পি সে পিএম তক’ এভাবেই বদলে দিয়েছে মীনাক্ষী দীক্ষিতের জীবনকে।
সেই অর্থে বলিউডে মীনাক্ষীর প্রথম ছবি। গত চার-পাঁচ বছরে বেশ কয়েকটি দক্ষিণি ছবিতে তাঁকে দেখা গেলেও, বলিউডে প্রথম মুখ দেখাতে চলেছেন।
ছবিটি এখন মুক্তির অপেক্ষায়।পদবি দীক্ষিত হলেও মাধুরীর কেউ নন মীনাক্ষী, কিন্তু রুপোলি পর্দায় তাঁকে দেখে মাধুরীকে মনে পড়তেই পারে। সুন্দর নাচেন। এই নাচই তাঁকে সুযোগ করে দেয় দক্ষিণি ছবিতে।
তবে, কখনও কারও কাছে প্রথাগত তালিম নেননি উত্তরপ্রদেশের জমিদারি বাড়ির এই তরুণী। রক্ষণশীল পরিবার বলে কথা। সিনেমায় মেয়ের অভিনয় করা নিয়ে বাবার আপত্তি থাকাটাই স্বাভাবিক। সেই আপত্তি এসেও ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাবাকে রাজি করাতে পেরেছেন মীনাক্ষী। এমন একটি পরিবারের মেয়ের প্রথম বলিউড ছবিতেই যৌনকর্মীর ভূমিকা; এ নিয়ে অস্বস্তি হয়নি? মীনাক্ষীর কথায়, অস্বস্তি হয়নি বললে ভুল হবে। কিন্তু, কুন্দনজির সঙ্গে বার কয়েক কথা বলে, কয়েক দিন ধরে ওয়ার্কশপ করে, মনের সেই বাধো বাধো ভাবটা কাটিয়ে ফেলেছেন। নবাগত এই নায়িকার কথায়, মিস ইউনিভার্স হোক বা যৌনকর্মী, যখন যে চরিত্রেই অভিনয় করি সেটা মন দিয়ে করতে হবে। আর এ জন্যই ছুটেছেন নিষিদ্ধ পল্লিতে।যৌনকর্মীর চরিত্রকে ফুটিয়ে তুলতে, যৌনকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁদের কথা বলা থেকে, হাঁটাচলা, আদব-কায়দা আত্মস্থ করে নিজের চরিত্রে ফুটিয়ে তুলেছেন।
ছবিতে কোনও মেসেজ? মীনাক্ষী জানালেন, সেভাবে সরাসরি কোনও মেসেজ নয়। নির্মম বাস্তবতাকে তুলে ধরেছেন কুন্দন শাহ। ছবিতে তিনি যৌনকর্মীকে দেখিয়েছেন প্রতীক হিসেবে।