বলিউডে শুধু ভারতেই ৩০০ কোটি রুপি আয় করা প্রথম ছবি হিসেবে নাম লিখিয়েছে পিকে। এখন শুধু ভারতেই নয়, পুরো বিশ্বেই এই ছবি এখন সমান আলোচিত। কিন্তু মুক্তির পর থেকেই হিন্দু বিশ্ব পরিষদ ও বজরং দল এই মুভি “পিকে” নিষিদ্ধ করার দাবি তুলেছে। তাদের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়েছে ভারতের মুসলিম পারসোনাল ল বোর্ড। তাদের একটাই দাবি, ছবিটি নিষিদ্ধ করতে হবে। যদি তা না হয় তবু কিছু কিছু আপত্তিকর দৃশ্য বাদ দেওয়ার জোর দাবি উঠেছে। এমনকি অনেকে ছবির পরিচালক ও প্রধান অভিনেতাকে গ্রেপ্তারের দাবি তুলেছে।
সাংবাদিকদের কাছে ছবিটির বিরুদ্ধে ওঠা বিতর্কিত পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন আমির।
প্রশ্ন : হিন্দুদের মন্দির থেকে পিকে টাকা চুরি করে। কিন্তু মসজিদ কিংবা সমাধি থেকে চাদর চুরি করেননি।
আমির খান : পৃথিবীতে টিকে থাকার জন্য মানুষের টাকা দরকার, চাদর নয়।
প্রশ্ন : একটি দৃশ্যে লর্ড শিবার দোষ ধরা হয়েছে। মহানবী কিংবা হোসেন নয় কেনো?
আমির : প্রথমত এ ছবিতে কোনো লর্ডকেই অবজ্ঞা করা হয়নি। দ্বিতীয়ত, মুসলিমরা মহানবী কিংবা হুসেনের (আ) কোনো ছবি ব্যবহার করে না। অতএব কোনোভাবেই তাদের ব্যক্তিত্ব মূর্ত করার সুযোগ নেই।
প্রশ্ন : লর্ডস ও হিন্দু দেবীদের পোস্টার হারিয়ে যাওয়া দেখানো হয়েছে এ ছবিতে। কেনো আল্লাহ নয়?
আমির : এ প্রশ্নের উত্তরেও একই কথা বলবো। আল্লাহ কিংবা তার ব্যক্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই কারও কারণ ইসলাম ধর্মে তার কোনো ছবি দেওয়া হয়নি।
প্রশ্ন : ছবিটিতে সরফরাজ মুসলিম হলেও তার প্রেমিকা জগ্গু হিন্দু। ছবিটির শেষে বলা হয়েছে মুসলিম কিংবা পাকিস্তানিরা প্রতারক নয়, বরং বিশ্বস্ত। আপনার কি মনে হয় না, এই প্রেম জিহাদেরই অংশ?
আমির : না, আমার তা মনে হয় না। ছবিটির শেষাংশে বার্তা দেওয়া হয়েছে, মুসলিম ও পাকিস্তানিদের নিয়ে আমরা যে ধারণা পোষণ করি আসলে তারা সবাই তা নয়। তারা বিশ্বস্ত ও কর্তব্যপরায়ণ। এর আগেও অনেক ছবিতে হিন্দু ছেলে ও মুসলিম মেয়ের প্রেম দেখানো হয়েছে। আমি কিংবা আমরা কেউই এ নিয়ে প্রশ্ন তুলিনি। ‘পিকে’র বেলায়ও এ নিয়ে কথা বলা উচিত হবে না।
প্রশ্ন : পুরো ছবিজুড়ে এক হিন্দু সাধুকে ধাওয়া করে পিকে। মুসলিম কোনো ইমামকে কেনো করেনি?
আমির : মুসলিম সমাজের কোনো ইমামই নিজেকে সৃষ্টিকর্তার দূত কিংবা আল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগ হয় এমন ব্যক্তি মনে করেন না। প্রত্যেকেই যত বয়সই হোক না কেনো, কোরআন পড়ে জ্ঞান আহরণ এবং এর প্রচার করেন।
বলিউডে নামীদামি সেলিব্রেটিরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারের মাধ্যমে পিকে সম্পর্কে তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করেছেনঃ
দিয়া মির্জা- পিকের জন্য এর থেকে ভাল সময় আর হতো না। এই ছবি ভারতের ‘মাইন্ডস্কেপ’ বদলে দিয়েছে। @রাজকুমার হিরানি @অনুষ্কা শর্মা @আমির_খান
দিব্যা দত্ত- স্যালুট রাজু হিরানি..আপনি আমাদের হাসিয়েছেন, কাঁদিয়েছেন, ভাবিয়েছেন!!! #পিকে. তুমি সেরা!!!!!
করণ জোহর- পিকে আবারও প্রমাণ করল রাজু হিরানি আমাদের দেশের সেরা পরিচালক…নিঃসন্দেহে আমিরের জীবনের সেরা
কূণাল কোহলি- পিকে অনুষ্কা শর্মা, অভিজিত্ জোশি, বিনোদ চোপড়া, রাজু হিরানি @আমির_খানের সেরা ছবি। অভূতপূর্ব, এই অজ্ঞিজ্ঞতা বার বরা হোক।
সোনম কাপুর- সত্যি কী সিনেমা! পিকে দেখে অভিভূত..ধন্যবাদ#রাজকুমার হিরানি! সকলের দেখা উচিত্ এই ছবি!!! @আমির খান ছাড়া কেউ পিকে করতে পারতেন না!!ছবি দেখতে দেখতে বহুবার তুমি আমাকে কাঁদিয়েছ, হাসিয়েছ আমির। যাই বলি তাই কম মনে হচ্ছে..রাজু হিরানির সঙ্গে একই ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করা সত্যিই সম্মানের…সবকিছু পিকেময় হয়ে রয়েছে
নীল নীতিন মুকেশ- পিকের স্ক্রিনিং দেখলাম। অভূতপূর্ব ছবি!!! আমির খান এক ইন্সটিটিউট। এখন থেকে রাজকুমার হিরানির আরও ভক্ত আমি। বিধু বিনোদ চোপড়াকে অভিবাদন।
অতুল কুলকার্নি- পিকে। ব্রাভো! অসাধারণ ভাবনা না থাকলে পিকে বানানো যায় না, খোলা মন না হলে পিকে দেখা যায় না। নিজেকে নিয়ে হাসো, সকলের জন্য ভাবো।
মনীশ পল- পিকে…অবশেষে!!!ছবির প্রেমে পড়ে গিয়েছি…আমির খান অনবদ্য!!!!অনুষ্কা শর্মা সেরা!!!রাজকুমার হিরানি আবারও নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করলেন।