নাটকের মানুষ তারা। টিভি খুললেই দর্শক তাদের দেখতে পান। দর্শক ঘন্টার পর ঘন্টা তাদের নাটক দেখলেও মজার ব্যাপার হচ্ছে তারকারা নিজেই নিজের নাটক দেখতে পারেন না। কারণ আর কিছুই নয়, ব্যস্ততা। বেশকিছু তারকার সঙ্গে কথা বলে এমনটাই জানা গেল।
সারাবছর ব্যস্ততার কারণে নাটক দেখার সময়ই পান না তারকারা। এমনকি ঈদ বা ছুটির দিনগুলোতেও মেলে না ফুরসত। কারণ এদিন সময় দিতে হয় পরিবার আর আত্মীয় স্বজনকে। তবে একেবারেই যে দেখেন না তা কিন্তু নয়, সময় পেলেই কেউ কেউ বসে যান রিমোট হাতে। তবে সেটা সংখ্যায় খুবই কম।
ছোটপর্দার জনপ্রিয় নায়ক মাহফুজ আহমেদ এখন বড়পর্দাতেও নিজেকে মেলে ধরছেন। নিজের নাটক দেখা হয় কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'সেভাবে আয়োজন করে টিভির সামনে বসে নাটক দেখার সময় হয় না। তবে কখনো কখনো বেকার বসে থাকার সময় হয়তো দেখা হয়। অার নিজের পরিচালিত কাজ হলে প্যানেলে বেশ কয়েকবার দেখা হয়। আর উৎসব পার্বণে তো ফ্যামিল আর আত্মীয়-স্বজনদেরই সময় দিতে হয়। তবে এটা ঠিক অবসর পেলে আমি নিজের নাটকসহ অন্যদের নাটকও দেখার চেষ্টা করি। তবে ইদানিং মোটামোটি মানের নাটকই বেশি চোখে পড়েছে। তবে চূড়ান্ত মূল্যায়ণ দর্শকের উপরই। দর্শকই মূল্যায়ণ করবেন নাটক ভাল না মন্দ।'
এই সময়ের সবচেয়ে ব্যস্ততম অভিনেতার নাম মোশাররফ করিম । তিনি বলেন, 'কাজের চাপে আমার এমন অবস্থা যে আমি কোনও নাটকই দেখার সময় পাই না। এমনকি নিজের অভিনীত নাটকও না। অনেক ভাল ভাল নাটক প্রচারিত হলেও দেখতে পারি না। আফসোস লাগে।'
মোশাররফ করিমের মতোই ব্যস্ত চঞ্চল চৌধুরীও। শ্যুটিং শেষ করেই ফিরেন বাসায়। কখনো চেষ্টা করেন নিজের নাটক দেখার। কিন্তু খুব একটা দেখা হয় না তারও। তবে যথাসাধ্য চেষ্টা করেন। নিজের নাটক দেখার পাশাপাশি অন্যদের নাটকও দেখেন তিনি। চঞ্চল বলেন, 'নাটক দেখার খুব একটা সময় পাই না। তবে চেষ্টা করি দেখার জন্য। আর নিজের নাটক দেখতে গেলে অন্যদের গুলো খুব একটা দেখা হয়ে ওঠে না। তারপরও চেষ্টা করেছি অন্যদের নাটক দেখার। তবে ডে বাই ডে নাটকের মান নিচে নেমে যাচ্ছে। অনেক চ্যানেল হওয়ায় প্রচুর নাটক নির্মিত হচ্ছে। কিন্তু মান কমে যাচ্ছে। কারণ ডিরেক্টররা দর্শকদের শুধু হাসাতে চান। এটা একটা সমস্যা। তবে যাই হোক মুগ্ধ হওয়ার মতো নাটক ইদানিং আমি দেখতে পাই না।'
নাচ আর অভিনয় দুই মাধ্যমেই সমান ব্যস্ত নাদিয়া। ব্যস্ততার কারণে তিনিও খুব একটা সময় পান না নাটক দেখার। নাদিয়া বলেন, 'নিজের অভিনীত নাটক, টেলিফিল্ম বা অনুষ্ঠান দেখতে কার না ভালো লাগে কিন্তু ব্যস্ততার কারণে বেশিরভাগ সময়ই দেখতে পারি না। এটা অনেক আফসোসের একটা বিষয়।'
টিনএজ দর্শকদের কাছে মেহজাবিনের জনপ্রিয়তা তুঙ্গস্পর্শি। নিজের নাটক, টেলিফিল্ম দেখা হয় কি না জানতে চাইলে মেহজাবিন বলেন, 'সবসময় দেখার সময় পাই না। কারণ শ্যুটিংয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। আবার অনেক সময় কোন নাটক কোথায় প্রচারিত হচ্ছে সেটাও জানতে পারি না এটাও একটা কারণ। তবে বাসায় থাকলে টিভি শিডিউল ধরে ধরে নাটক দেখি। নিজের নাটক দেখার সঙ্গে সঙ্গে অন্যদেরটাও দেখি। আর ছুটি বা উৎসবের অবসরেও খুব একটা দেখতে পারি না। কারণ তখন বন্ধু বান্ধব আত্মীয় স্বজনদের সময় দিতে হয়। যেমন গত বছর ঈদে আমার ১৫টি নাটক প্রচারিত হলেও আমি দেখতে পেরেছি মাত্র একটা।
আরেক অভিনেতা সজলের নাকি টেলিভিশনের সামনে বসারই সময় হয় না। তিনি বলেন, 'নরমালি টেলিভিশনের সামনে বসে নাটক দেখার সুযোগ হয় না। তবে প্রচারিত হওয়ার পর বেশিরভাগ নাটকই সিডিতে দেখি।'
তবে লাক্স তারকা অর্ষা একটু ব্যতিক্রম। তিনি নিজের নাটক দেখার জন্য সময় বের করে রাখেন। অর্ষা বলেন, 'প্রচারিত নাটকগুলো শিডিউল অনুযায়ী দেখার চেষ্টা করি। তবে সব সময় যে পারি তা কিন্তু নয়। আর নাটক দেখতে বসলে অন্যদের নাটকও দেখি। তবে ইদানিং নাটক দেখে আর আগের মজা পাচ্ছি না।'
নতুন প্রজন্মের জনপ্রিয় তারকা মিশু সাব্বির। ব্যস্ততার কারণে খুব একটা নাটক দেখার সময় পান না তিনি। তবে বাসায় থাকলে শিডিউল অনুযায়ী নিজের সব নাটক দেখার চেষ্টা করেন । মিশু বলেন, 'সারা বছরই তো নাটকের শুটিং নিয়ে ব্যস্ত থাকি। খুব একটা দেখতে পাই না। তবে বাসায় থাকলে টিভির শিডিউল বের করে নিজের নাটকগুলো দেখার চেষ্টা করি। ।পাশাপাশি অন্যদের নাটকও দেখি।