সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমরা এতটাই ব্যস্ত হয়ে পড়েছি যে, সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও নিজের জন্য সময় বের করা মুশকিল। সপ্তাহের শুরু ও শেষ কীভাবে হয়, তা ভাবার মতোও সময় হয় না। একবার ভেবে দেখুন- ছাত্রজীবনে পরীক্ষার আগের দিন রাতেও একটা মুভি দেখা কোনো বিষয় ছিল না। আর কর্মজীবনে সেই মজার স্মৃতিগুলো খুব মনে পড়ে।
সময়টা পাল্টে গেলেও স্বল্প সময়ে সিনেমাপ্রেমীরা দেখে নিতে পারেন মজার কিছু চলচ্চিত্র। হোক না সেটা স্বল্পদৈর্ঘ্য। চাইলে দিনে একটা-দুটো দেখা কোনো বিষয়ই না।বলিউডের ১০ জনপ্রিয় স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নিয়ে সাজানো হয়েছে এ প্রতিবেদন।
১. বাইপাস
২০১৩ সালে এই স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেন অমিত কুমার। এতে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইরফান খান এবং নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকী। এর চিত্রধারণ করা হয়েছে ভারতের রাজস্থানে। নওয়াজ এবং ইরফান দুজনই তখন নিজেদের পরিচয় জানাতে ব্যস্ত ছিলেন বলিউড ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে। শর্ট ফিল্মটি মাত্র ১৫ মিনিট ৫১ সেকেন্ডের। বাইপাস চলচ্চিত্রের মূল আকর্ষণ হলো- এখানে কোনো সংলাপ ব্যবহার করা হয়নি। পুরোপুরি মুকাভিনয়ও নয়, কিন্তু এর কাছাকাছি। ঘটনার শুরু হয়- এক নবদম্পতির রাজস্থানের মরুভূমির পথ ধরে।
২. রাস্তা
এই ফিল্মের কাহিনিটা খুব সাধারণ। চলমান জীবনের নিত্যনৈমিত্যিক ঘটনা। দুটা পথশিশুর একটা সারা দিনের কার্যাবলী। তাদের বেঁচে থাকার সংগ্রাম ও সংঘর্ষ। চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন দিগ্বিজয় চৌহান। দৃশ্যধারণের কাজ হয়েছে মুম্বাইয়ের ব্যস্ততম রাস্তায়।
৩. দ্যাট ডে আফটার এভরি ডে
সামাজিক অবক্ষয় দিন দিন বেড়েই চলছে। ইভটিজিং তো এখন মহামারী আকার ধারণ করেছে। এসব থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য নারী জাগরণের গুরুত্ব যে কতটা জরুরি, তা এই শর্ট ফিল্ম দেখলে ভালোভাবে বোঝা যায়। দ্য ডে আফটার এভরি ডেতে মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন হচ্ছে রাধিকা আপ্তে। তাকে ঘিরেই কাহিনি আবর্তিত হতে থাকে। এটা পরিচালনা করেছেন অনুরাগ কাশ্যপ। প্রযোজনা করেছেন সঙ্কল্প এবং অমর হায়দার। পুরো চলচ্চিত্রের দৈর্ঘ্য হলো ২২ মিনিট। সিনেমাটি মুক্তি পায় ২০১৩ সালের ২৯ অক্টোবর।
৪. ব্ল্যাক মিরর
খুবই হৃদয়গ্রাহী চলচ্চিত্র এটা। দেখার সময় একটু সতর্ক থাকাই ভালো। এখানে একটা এতিম শিশুর জীবনচিত্র তুলে ধরা হয়েছে। পরিচালক আদি বর্মণ অত্যন্ত নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন বোমা বিস্ফোরণে মা-বাবা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাওয়া রানুর জীবনকাহিনি। নাগরিক জীবনের খারাপ দিকগুলো উঠে এসেছে আদি বর্মণের ব্ল্যাক মিরর চলচ্চিত্রে।
৫. লিটল টেরোরিস্ট
ছোটবেলায় ক্রিকেট খেলতে খেলতে বল এমন সব জায়গায় যেত, সেখান থেকে বল ফেরত আনাটা রীতিমতো একটা যুদ্ধের সামিল ছিল। কত প্ল্যান, আরো কত কী। হয়ত খেয়ালও করতাম না, বল আনতে গিয়ে চলে গেছি খারুস চাচার বাড়ি। কিন্তু লিটল টেরোরিস্ট স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমার কাহিনিটা আমাদের সেই বল কুড়িয়ে আনার কাহিনির সাথে অনেখানি মিললেও তফাৎটা হলো- বলটা পাকিস্তানের সীমান্ত পেরিয়ে ইন্ডিয়ার সীমানায় ঢুকে যায়। বাকিটা বলা যাবে না। দেখে নিন আসভিন কুমারের লিটল টেরোরিস্ট শর্ট ফিল্মে। আরেকটু না বললেই নয়, এই চলচ্চিত্রটি ইন্ডিয়ার একাডেমি অ্যাওয়ার্ড ২০১৫ এর মনোনয়নপ্রাপ্ত।
৬। টিউব লাইট কে চান্দ
অসাধারণ আবহ সংগীত এই চলচ্চিত্রের একটি বিশেষ দিক। পরিচালনা করেছেন শ্লোক শর্মা। এই ফিল্মের মাধ্যমে ছেলেবেলার অনেক সোনালি স্মৃতি সবার সামনে তুলে ধরা হয়েছে।ছবির অন্যতম প্রধান অভিনেতা মাস্টার মাহমুদ শরিকের একটা বিশেষ পারফর্মেন্স ফিল্মে একটা আলাদা মাত্রা যোগ করেছে।
৭। মাইগ্রেশন
এই চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেছেন জনপ্রিয় চলচ্চিত্র নির্মাতা মিরা নায়ার। এর কাহিনি লিখেছেন জয়া আখতার এবং বিশাল ভরদ্বাজ। মাইগ্রেশন সমাজ সচেতনতাধর্মী ফিল্ম। এই ফিল্মটা এইডস বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নির্মিত হয়। প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন রাইমা সেন, শাইনি আহুজা এবং ইরফান খান।
৮। আফটারগ্লো
ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড জয়ী স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র আফটারগ্লো। আফটারগ্লো পারিবারিক মূল্যবোধ নিয়ে নির্মিত হয়েছে। এখানে একজন পারসিয়ান বিধবা নারী এবং আগন্তুককে নিয়ে বানানো অসাধারণ ট্র্যাজিক কমেডি। নির্মাণ করেছেন কুশল ওঝার।
৯। অহল্যা
পরিচালক সুজয় ঘোষের অনবদ্য সৃষ্টি অহল্যা। এটা ১৪ মিনিটের একটা এপিক থ্রিলার। এর কনসেপ্ট নেওয়া হয়েছে রামায়ণ থেকে। অসাধারণ অভিনয় করেছেন- সৌমিত্র চট্টপাধ্যায়, আধিকা আপ্তে এবং টোটা চৌধুরী। এই ছোট চলচ্চিত্রটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল।
১০। ছাই
গীতাঞ্জলি রাও নির্মিত ছাই চলচ্চিত্রে চারটি ভিন্ন ভিন্ন প্রদেশের মানুষের কাহিনি তুলে ধরা হয়েছে। এখানে মুম্বাই শহরের ব্যস্ত জীবনের ভিন্ন ভিন্ন দিক ফুটিয়ে তোলা হয়েছে সুন্দরভাবে। সিক্যুয়ালি চারটি মানুষের কাহিনি একত্রে চিত্রায়িত হয়েছে।