Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.
Entertainment Image

যুদ্ধ শেষে দেশে ফিরলাম



অাজ ভোর চারটা-পাঁচটার দিকে বাসায় ফিরেছি। বাসায় এসেই ঘুমিয়েছি। সারাদিন না খাওয়া। মাথাটা মনে হচ্ছে ব্লক হয়ে আছে। থমথমে লাগছে সবকিছু। শারীরীকভাবে আমি সুস্থ থাকলেও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছি।

ভূমিকম্প শুরুর ঠিক সময়টা মেন নেই। তবে সেটা নেপালের সময় ১১টা বারটার দিকে হবে। আমরা তখন নাগরকোট এর হিমালয় রিসোর্টে শুটিং করছিলাম। আমার মনে হয় রিসোর্টে পৌছার পনের মিনিট পরেই ভূমিকম্প শুরু হয়। ভূমিকম্পের দৃশ্য পুরোটা আমাদের ক্যামেরায় ধারণ করা আছে। অার চোখের সামনেই রিসোর্টটা ধ্বংস হতে দেখি। ঐ রিসোর্টটা এখন আর নেই। রিসোর্টের ভেতর যারা ছিল তারা আহত হয়েছে। আমাদের ইউনিটের রুনা খান তখন ম্যাকআপ রুমে ছিলেন। তিনি বের হতে গিয়ে বেশ আহত হয়েছেন। আমরা অনেকক্ষণ রিসোর্টের উপর দাড়িয়ে ছিলাম পরে আশঙ্কা হওয়ায় নেমে পড়ি। টানা ২ ঘন্টা ধরে একটু পরপর ছোট ছোট ভূকম্পন হয়েছে। ফলে আতঙ্কে আমরা কোথায় যাই নি। এ সময় খোলা আকাশের নিচে সবাই দাড়িয়েছিলাম। এর দেড়ঘন্টা পরে আমরা ফেরার চেষ্টা করি। একটা রেস্টুরেন্ট গিয়ে সবার আগে ওয়াইফাই খুঁজে বের করে অনলাইনে সবাইকে বিষয়টি জানাই। পরে দেশ থেকে অ্যাম্বাসিকে ইনফর্ম করলে তারা আমাদের খুজে বের করে। পরে বাংলাদেশ অ্যাম্বাসির সহায়তায় আমরা কাঠমান্ডুতে ফিরি। এক ঘন্টার রাস্তা চার আসতে হয়েছে চার ঘন্টায়। এরপর গত দু দিন অ্যামআবাসির সামনে খোলা মাঠে অবস্থান নেই সবাই।


এখনো কল্যাণ ভুলতে পারছেন না । চোখের সামনে ভেসে আসছে ধ্বংসাবশেষের দৃশ্য। কল্যাণ বলেন, পুরো নেপাল এখন ধ্বংসস্তুপ। অকেজো হয়ে গেছে রাস্তা। বড় বড় হোটেল ক্যাসিনো সব ধ্বংস প্রায়। এয়ারপোর্ট এর অবস্থা্ও খুব খারাপ। পুরা দেশটায় এখন হাহাকার চলছে। নেপালের অবস্থা এখন খুবই ভয়াবহ। দু দিন ধরেই থেমে থেমে ভূমিকম্পের কাঁপুনি হচ্ছে। সবাই আতঙ্কে মনে হয় একটা যুদ্ধ চলছে। বাঁচার যুদ্ধ। সবাই যার যার মতো দৌঁড়াদৌঁড়ি করছিল। এ দুদিন আতঙ্কে কান্না করছি। এমনকি আমরা যখন ফেরার জন্য এয়াপোর্টে এলাম তখন দেখলাম সেখানে কোনো এমিগ্রেশন নেই শুধু সিল দিয়ে ছেড়ে দিচ্ছে।

এয়ারপোর্টে যখন বিমান ল্যান্ড করতে দেখি তখন মনে হয়েছে এবারের মতো বেঁচে গেলাম। দেশে ফেরার পর আমার মনে হচ্ছে আমি আরও বেশিদিন বাঁচবো। আর এখন মনে হচ্ছে যে একটা যুদ্ধ করে দেশে ফিরলাম।

মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে আসা এই তারকার মনের ভয় রয়েছে নিজের দেশ নিয়েও। তিনি বলেন আমাদের দেশে সবার সচেতন হওয়া দরকার। কারণ এখানে বিশেষ করে ঢাকায় যে অবস্থা তাতে এ ধরনের ভূমিকম্প হলে ব্যাপক ধরনের ক্ষতি হবে। কারো কোনো বাঁচার উপায় থাকবে না। কারণ বিল্ডিং আর ঘিঞ্জি পরিবেশের এই ঢাকা শহরে নেই কোনো খোলা জায়গা যেখানে মানুষ অন্তত দাড়াতে পারবে। ফলে এখনই সচেতন হয়ে যাওয়া উচিত সরকারকে।

উল্লেখ্য শাহ রিয়ার নাজিম জয় ও যুবরাজ খান পরিচালিত তিনটি নাটকের শুটিং করতে তারা সম্প্রতি নেপালে গিয়েছিলেন। নাটকগুলোর নাম ভালবাসাই পায় না, হলিডে এবং হেনা। তবে দুটি নাটকের কাজ প্রায় শেষ হলেও ভূমিকম্পের কারণে তৃতীয় নাটকের কাজ করতে পারেন নি তারা।