খুব সহজ ও সাধারণ একটি পদ্ধতির মাধ্যমে পেতে পারেন সবসময়ের জন্য উজ্জ্বল ত্বক আর সেটা হচ্ছে ওয়াটার থেরাপি। যদিও নাম শুনে ব্যাপারটাকে অনেক কঠিন ও টেকনিক্যাল মনে হচ্ছে কিন্তু আসলে পদ্ধতিটি খুবই সহজ ও সাধারণ। পদ্ধতিটি হচ্ছে একটি নির্দিষ্ট বিরতিতে পানি পান করা। এই ওয়াটার থেরাপি দেহের ৭০% পানির উপর নির্ভর করে তৈরি করা।সঠিক ভাবে এই থেরাপি অনুসরণ করার মাধ্যমে আপনি পেতে পারেন স্থায়ীভাবে উজ্জ্বল ও দীপ্ত ত্বক।
ওয়াটার থেরাপির উপকারিতা গুলো এখানে উল্লেখ করা হলো-
ভেতরের বিষাক্ত পদার্থ দেহ থেকে বের করে দেয়
প্রচুর পরিমান পানি পান করলে তা দেহের ভেতর থেকে খারাপ বিষাক্ত পদার্থ দেহের বাইরে বের করে দিয়ে ত্বককে করে তোলে সতেজ এবং উজ্জ্বল। এটি কোলনকে পরিষ্কার করতে সাহায্য করে যার ফলে খাবারের মাধ্যমে গৃহীত পুষ্টি উপাদান দেহে খুব সহজে শোষিত হতে পারে। এজন্য প্রথমেই যা করতে হবে তা হলো সকালে ঘুম থেকে উঠেই ২ গ্লাস পানি পান করতে হবে এর ফলে এটি নতুন রক্ত ও পেশীকোষ তৈরিতে সাহায্য করবে। ওয়াটার থেরাপির মাধ্যমে লসিকাতন্ত্র সম্পূর্ণ ভাবে পরিষ্কার হওয়ার ফলে তা দেহের প্রদাহের বিরুদ্ধে কাজ করতে পারে। যত বেশি পানি পান করবেন তত বেশি ঘামবেন। এই প্রক্রিয়ার ফলে দেহের সকল ময়লা এবং মরা কোষ ঘামের মাধ্যমে দেহ থেকে বের হয়ে যাবে। দেহের বিষাক্ততা বের হয়ে যাওয়য় কোষ্ঠকাঠিন্যও দূর করতে সাহায্য করে। এইসব উপকারিতাগুলো সরাসরি ত্বকের উপর প্রভাব ফেলে এবং ত্বক উজ্জ্বল করে।
রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে
প্রতিদিন ৬-৭ গ্লাস পানি পান করার ফলে তা ধীরে ধীরে দেহের বিপাক ক্রিয়াকে উন্নত করে। রক্তে যখন বেশি পরিমান অক্সিজেন থাকবে তখন স্বাভাবিকভাবেই ত্বক সতেজ এবং উজ্জ্বল হবে। তারপর আস্তে আস্তে পানি পানের পরিমান ১০-১২ গ্লাস করতে হবে।এর ফলে তা দেহে অক্সিজেন এবং পুষ্টি উপাদানের পরিমান বাড়াতে সাহায্য করবে যার প্রভাবে ত্বকও উজ্জ্বল হবে। শুধু পানি আসলে বেশি পান করা যায় না। সেক্ষেত্রে রসালো পানি যুক্ত ফলও খেতে পারেন প্রচুর পরিমানে। যেমন তরমুজ, কিউয়ি, কমলা, আঙ্গুর এবং এরকম আরো পানি সমৃদ্ধ ফলগুলো।
ত্বকের তারুণ্য বাড়াতে
ওয়াটার থেরাপির ফলে ত্বক সহজে ঝুলে পড়বে না এবং তারুণ্যদীপ্ত থাকবে। ত্বক শুষ্ক থাকলে বলিরেখা পরে খুব সহজেই। কিন্তু নিয়মিত ভাবে বেশি করে পানি পান করলে এই সমস্যা থেকে দূরে থাকা যায় এবং ত্বকও আর্দ্র থাকে। চোখের নিচের কালো দাগ সঠিক বিশ্রামের অভাব ও কম পানি পান করার কারণেই হয়ে থাকে। তাই বেশি করে পানি পান করলে তা চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতে সাহায্য করে এবং চোখের উজ্জলতা বাড়াতেও সাহায্য করে। ত্বকের ব্রণ বা ফুসকুড়ি থাকলেও তা খুব সহজেই ভাল হয়ে যায় কোন ধরনের দাগও সৃষ্টি করে না। এই পদ্ধতি অনুসরণ করলে ত্বকের ইলাস্টিসিটিও নিয়ন্ত্রনে থাকে।
আর্দ্রতা বজায় থাকে
পানি পান করার পরিমান বাড়ালে তা দেহ ও ত্বকের তরলের ঘনত্ব কমাতে সাহায্য করে। এর ফলে অকালে বুড়িয়ে যাওয়া বা ত্বকের ব্রণের সমস্যা থেকে দূরে থাকা যায়। তাই সুন্দর ও সুস্থ ত্বক পেতে ওয়াটার থেরাপি হচ্ছে একটি উৎকৃষ্ট ঘরোয়া উপায়। যদি কারো ত্বক শুষ্ক থাকে তবে এই পদ্ধতি অনুসরণ করে খুব ভাল ফল পেতে পারেন।ত্বকের ব্রণের সমস্যায় কুসুম গরম পানি বেশ ভাল কাজ করে।
ত্বকের নিচে জমা চর্বি থেকে মুক্ত থাকতে
প্রয়োজনের অনুপাতে দেহে যদি পানির পরিমান ঠিক থাকে তাহলে দেহের আভ্যন্তরীণ কার্যক্রম সঠিক ভাবে হয়ে থাকে। প্রতিদিন প্রচুর পরিমান পানি পান করলে তা বিভিন্ন ধরনের অসুস্থতা এবং ত্বকের নিচে চর্বি জমে থাকা প্রতিরোধ করে। যদি পানি সাথে লেবুর রস বা আপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে পান করা যায় তাহলে তা ত্বকের নিচে জমে থাকা চর্বি কমাতে সাহায্য করে।
এখানে উল্লেখিত বিস্ময়কর উপকারিতাসহ ত্বকের সমস্যার সবচেয়ে ভাল সমাধান হলো ওয়াটার থেরাপি। এটি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ত্বকের সুস্থতার সাথে সাথে আমাদের দেহের সার্বিক সুস্থতাকেই নিয়ন্ত্রণ করে। তাই এই পদ্ধতিকে যদি আমরা আমাদের প্রতিদিনের অভ্যাসে পরিনত করি তাহলে সুস্থ থাকার জন্য খুব বেশি কিছুর প্রয়োজন হবেনা।