আমি অহংকারী। অহংকারের সোনালী বীজটা আমার ভেতরে রোপিত হয়েছিল শৈশবেই। গায়ের রঙ ফর্সা আর দেখতে খুব সুন্দর ছিলাম বলে শৈশব থেকে যে-ই আমাকে দেখতো, সে-ই আমার গাল টিপে আদর করে বলতো, ‘মেয়েটা কী সুন্দর ফুটফুটে’ ‘মেয়েটা কী কিউট’ ইত্যাদি! আমি কোনকিছুতে সাফল্য পেলেও আমার সৌন্ধর্যের প্রশংসার আড়ালে ঢাকা পড়ে যেতো সাফল্যের প্রশংসা। তাই কোনকিছুতে সাফল্য অর্জন করার চেয়ে আমি সেজেগুজে থাকাটাই শ্রেয় মনে করতাম। বালিকা বয়সে যখন আমার বুকের আকার পরিবর্তন হতে শুরু করলো এবং এক নতুন ধরণের চঞ্চলতা চলকে উঠলো আমার মধ্যে, তখন আমি নিজেও যেন মানুষের কথার যথার্থতা খুঁজতে শুরু করলাম আরো গভীরভাবে। খুঁজে দেখলাম স্কুলে আমি-ই সবচেয়ে সুন্দরী। আত্মীয়-স্বজনদের বাড়ির নানা অনুষ্ঠান আর পার্টিতেও তাই। রাস্তায় বের হলেও আমি আমার বয়সী মেয়েদের দেখলে তাকিয়ে থাকতাম, নিজের চেহারার সঙ্গে তাদের চেহারার তুলনা করতাম। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমার-ই জয় হতো। কখনও সুন্দর কোন মেয়েকে দেখলে আমার ভীষণ মন খারাপ হতো, ঈর্ষা হতো। মনে হতো আমি বুঝি হেরে গেলাম! ক্লাসের পরীক্ষায়, স্কুলের খেলাধুলায়, সমস্ত জায়গায় হেরে গেলেও আমার কিছু আসতো যেতো না। কিন্তু শারীরিক সৌন্ধর্যের তুলনায় আমাকে ছাড়িয়ে যাওয়া দূরে থাক, আমার সমতুল্য কাউকে দেখলেই ঈর্ষায় আমার গা জ্বলে যেতো। অন্যরা তার প্রশংসা করলে ঘরের দরজা বন্ধ করে আমি কাঁদতাম। মনে হতো যেন আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি! শৈশবে রোপিত অহংকারের সোনালী বীজটা বাল্যকালে অঙ্কুরিত হয়ে কৈশোরে মেলতে শুরু করলো ডালপালা। আমার মধ্যে জন্ম নিল এক দূর্বিনীত সত্ত্বা। সব সময় আমি অন্যদের চেয়ে নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করতাম। আশপাশের সবাইকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করতাম। প্রভুত্বসুলভ আচরণ আমাকে গ্রাস করে ফেললো। বাহুল্য টাকা-পয়সা খরচ করে বন্ধুদেরকে আমার অনুগত করে রাখতাম। বাবা-মায়ের কাছেও যখন যা চেয়েছি,...
continue reading
Comments (2)
খুব ভাবার বিষয়
তবে আমি মনে করি সমাধান এর জন্য শিক্ষার দিকে নজর আবশ্যক
শুভেচ্ছা রইল
সমাধান কি?
খুব সুন্দর একটি বিষয়ের অবতারণা করেছেন। ধন্যবাদ