Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

মিশু মিলন

৯ বছর আগে লিখেছেন

জীবন এমনই! (প্রতিযোগিতা-১৫)

আমি অহংকারী। অহংকারের সোনালী বীজটা আমার ভেতরে রোপিত হয়েছিল শৈশবেই। গায়ের রঙ ফর্সা আর দেখতে খুব সুন্দর ছিলাম বলে শৈশব থেকে যে-ই আমাকে দেখতো, সে-ই আমার গাল টিপে আদর করে বলতো, ‘মেয়েটা কী সুন্দর ফুটফুটে’ ‘মেয়েটা কী কিউট’ ইত্যাদি! আমি কোনকিছুতে সাফল্য পেলেও আমার সৌন্ধর্যের প্রশংসার আড়ালে ঢাকা পড়ে যেতো সাফল্যের প্রশংসা। তাই কোনকিছুতে সাফল্য অর্জন করার চেয়ে আমি সেজেগুজে থাকাটাই শ্রেয় মনে করতাম। বালিকা বয়সে যখন আমার বুকের আকার পরিবর্তন হতে শুরু করলো এবং এক নতুন ধরণের চঞ্চলতা চলকে উঠলো আমার মধ্যে, তখন আমি নিজেও যেন মানুষের কথার যথার্থতা খুঁজতে শুরু করলাম আরো গভীরভাবে। খুঁজে দেখলাম স্কুলে আমি-ই সবচেয়ে সুন্দরী। আত্মীয়-স্বজনদের বাড়ির নানা অনুষ্ঠান আর পার্টিতেও তাই। রাস্তায় বের হলেও আমি আমার বয়সী মেয়েদের দেখলে তাকিয়ে থাকতাম, নিজের চেহারার সঙ্গে তাদের চেহারার তুলনা করতাম। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমার-ই জয় হতো। কখনও সুন্দর কোন মেয়েকে দেখলে আমার ভীষণ মন খারাপ হতো, ঈর্ষা হতো। মনে হতো আমি বুঝি হেরে গেলাম! ক্লাসের পরীক্ষায়, স্কুলের খেলাধুলায়, সমস্ত জায়গায় হেরে গেলেও আমার কিছু আসতো যেতো না। কিন্তু শারীরিক সৌন্ধর্যের তুলনায় আমাকে ছাড়িয়ে যাওয়া দূরে থাক, আমার সমতুল্য কাউকে দেখলেই ঈর্ষায় আমার গা জ্বলে যেতো। অন্যরা তার প্রশংসা করলে ঘরের দরজা বন্ধ করে আমি কাঁদতাম। মনে হতো যেন আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি!      শৈশবে রোপিত অহংকারের সোনালী বীজটা বাল্যকালে অঙ্কুরিত হয়ে কৈশোরে মেলতে শুরু করলো ডালপালা। আমার মধ্যে জন্ম নিল এক দূর্বিনীত সত্ত্বা। সব সময় আমি অন্যদের চেয়ে নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করতাম। আশপাশের সবাইকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করতাম। প্রভুত্বসুলভ আচরণ আমাকে গ্রাস করে ফেললো। বাহুল্য টাকা-পয়সা খরচ করে বন্ধুদেরকে আমার অনুগত করে রাখতাম। বাবা-মায়ের কাছেও যখন যা চেয়েছি,... continue reading
Likes Comments
০ Shares

মিশু মিলন

৯ বছর আগে লিখেছেন

একগুচ্ছ শীতাতুর কবিতা

অপেক্ষায় কেটেছে গুচ্ছ গুচ্ছ শীতাতুর শীতকাল.....  
খেয়ালের বশে শিশির মাখা গমের শিষে অনন্বিত লোলুপ লেহন নয়, পুষ্পের পেলব পাপড়ি চুইয়ে পড়া একফোঁটা শিশিরের জন্য অপেক্ষা সারারাত্রি.....মেঘের উৎপীড়নে সহসাই পাইনি নক্ষত্র সঙ্গ, দূরাগত আলোর অহংকার ব্যথার নিনাদ তুলেছে বুকে! জোনাকির মায়াজ্যোতি চোখে বুলিয়ে আদর ভুলিয়েছে কিছু ব্যথা, অন্ধকারে ঝিঁঝির বাগেশ্রী শুনে শুনে অপেক্ষায় কেটেছে প্রহর, শ্বাসক্ষেত্রে পড়েছে হিমালয়ের জঙ্ঘা ছিঁড়ে আসা কুয়াশার বিষম পলি!     
অপেক্ষায় কেটেছে গুচ্ছ গুচ্ছ শীতাতুর শীতরাত.....
অপেক্ষায় কেটেছে গুচ্ছ গুচ্ছ শীতাতুর শীতকাল.....
অপেক্ষা আরো....      
ঢাকা। ০৪
জানুয়ারি, ২০১৫     
শীত সহবাস  
পৌষের রাতে বালিশে ছড়িয়ে কেশদাম, নিরর্গল সর্বস্ব বিছিয়ে বিছানায় শুয়ে থাকে শীত! কখনও মাঝরাতে, কখনও শেষরাতে বিছানায় যাই, মশারি খাটাই। বিছানায় শুতেই অপেক্ষারত শীত ক্ষ্যাপা পাগলীর মতো জাপটে ধরে। নখ বিঁধে যায় পিঠে! কম্বল টেনে উষ্ণতার ভয় দেখাই, তবু এখানে সেখানে শীত ঘাপটি মেরে থাকে। পাশ ফিরলেই জড়িয়ে ধরে।  
সারারাত্রি কাটে কামনার গন্ধহীন গুচ্ছ গুচ্ছ শীত সহবাসে!    
ঢাকা।
০৩ জানুয়ারি, ২০১৫     
প্রনষ্ট হয়েছে আমার নিরন্তর নিবিড় পর্যটন!
মাতৃস্নেহের মতো পৌষের বিকেলের রোদ্দুর যত্নে মাখি মাথায়, বুকে-পিঠে আর মানুষের ভেতরে খুঁজতে গিয়ে পৌষের রোদ্দুর থমকে যাই, চমকে যাই!  শরীরের প্রবাহে গ্রীষ্মের উদ্ধত দুপুরের স্পর্ধা আর ছলনাময় ভাদ্রের রূপ দেখে মানুষের ভেতরে-বাহিরে, নিজেকে নিয়েছি গুটিয়ে শামুকের মতো।   
তবু মানুষ ভালবাসি মানুষের মতো...  
প্রেয়সীর প্রেমময় আঁচলের মতো হলুদ শর্ষের ক্ষেত, শিশির ধোয়া স্বচ্ছ নদী আর পৌষ সংক্রান্তির উঠোনের আলপনা খুঁজতে গিয়ে তার হৃদয়ে....খুঁজে পেয়েছি ছায়াময় সন্ধ্যা, আরো গভীরে গহীন অন্ধকার, কালো পাথর...  
প্রনষ্ট হয়েছে আমার নিরন্তর নিবিড় পর্যটন!          
ঢাকা।
০৩... continue reading
Likes Comments
০ Shares

মিশু মিলন

৯ বছর আগে লিখেছেন

দহনকালের পদাবলী

১   দুঃখলতা বাউ  গিরিমাটির গহীন অরণ্যে- আলোকলতার মতো ছড়াও; বিষাদের বিষম নুড়িপাথর তাকেও জড়াও।   ২   স্মৃতিপাখি ঠোকরাও একা গাছটিরে কাঠঠোকরার মতো অবিরত ঠোকরাও বক্ষঃস্থলে কোটর খুঁড়ে পিপীলিকার আবাস বানাও।    ৩   দুঃখ কী কাগুজে নোট? জনে জনে করবো বিলি! দুঃখ তো আমার একান্ত গহীন গুহার কৃষ্ণপাথর আমি সে পাথর খোদাই ক’রে গড়ি- দুঃখপ্রতিমা!   ৪   কষ্ট কী অর্ধ অনাবৃত লাস্যময়ী পণ্যদূত? ছবি ক’রে সেটে রাখবো বিলবোর্ডে! কষ্ট তো আমার একান্ত গহীন গুহার দেয়াল আমি দিবারাত্রি সে দেয়াল খুদে লিখে রাখি কষ্টনামা!       দমদম, কলকাতা। ১২.০১.১৪  continue reading
Likes Comments
০ Shares

Comments (2)

  • - বিষ পিঁপড়ে / <u>তাইবুল ইসলাম</u>

    খুব ভাবার বিষয় 

    তবে আমি মনে করি সমাধান এর জন্য শিক্ষার দিকে নজর আবশ্যক 

    শুভেচ্ছা রইল 

    - ডাস্টবিনে কাক

    সমাধান কি? 

    • - মোকসেদুল ইসলাম

      খুব সুন্দর একটি বিষয়ের অবতারণা করেছেন। ধন্যবাদ

    - টোকাই

    emoticons

মিশু মিলন

৯ বছর আগে লিখেছেন

অবিশ্বস্ত হলুদ আর বিশ্বাসের লাল টিপ

হলুদ দেখলেই আকৃষ্ট হই
হলুদ দেখলেই ফুল ভাবি;
মুগ্ধ হ’য়ে ছুঁতে যাই
দগ্ধ হ’য়ে পুড়ে যাই!
ভুলে যাই হলুদ মানে অগ্নিশিখা,
হলুদ মানে অবিশ্বাসে পোড়া
লাল-নীল হাজার কবিতা!
বারবার ঠকে যাই
তবু আমি হলুদ ছুঁতে চাই!
ঠকতে ঠকতে, পুড়তে পুড়তে, যদি
কখনও পারি পরাতে অবিশ্বস্ত হলুদের কপালে
বিশ্বাসের লাল টিপ!
বিশ্বাসের লাল টিপ নিয়ে ঘুরি-
বুকের সবুজপত্রে
যদি পারি কখনও হলুদের কলঙ্ক ঘোচাতে!
১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৪।
continue reading
Likes Comments
০ Shares

Comments (0)

  • - জাকিয়া জেসমিন যূথী

    ঠিক বলেছেন। নিজের মনের মধ্যে কষ্ট থাকলেও অন্যের হাসিমুখ দেখলেও নিজের মনে কিছুটা হলেও প্রফুল্লতা ফিরে আসে। 

মিশু মিলন

৯ বছর আগে লিখেছেন

গর্ভকানড়

আমি যখন দুঃসংবাদটা শুনলাম, আমার পায়ের নিচে তখন ভূ-কম্পন! বারোয়ারি মেলার ছেঁড়া-ফোঁড়া তাঁবুর মতো দুলছে আকাশটা! সবে ধানমন্ডির ছোট বোনের বাসা থেকে স্টাফ কোয়ার্টারে ফিরেছি। বাসায় ঢোকার আগে কিছু দরকারী জিনিস কেনার জন্য মাঠের ভেতর দিয়ে কোয়ার্টারের দোকানের দিকে যাচ্ছি। তখনই ফোন।  ‘হ্যালো...ফোন আমার ব্যাগে ছিল বুঝতে পরিনি। কী হয়েছে বল।’  শুনে আমি স্তব্ধ! আমি দাঁড়িয়ে  পড়লাম। আমার পায়ের নিচে বর্ষায় গজানো মায়ার মতো নতুন সবুজ ঘাস, আর মাথার ভেতরে উপকূলের ধূসর সুনামি! ‘আমি আসছি...’ বলার পর ওপাশ থেকে ফোনের লাইনটা কেটে দিল। আমি দাঁড়িয়েই রইলাম। সামনে থেকে আসা শীতল বাতাসে যেন আগুনের আঁচ আর ভাঙা সর্ষে দানার মতো বৃষ্টির ফোঁটাগুলো যেন আগুনের ফুলকি! সহ্য হচ্ছে না! অথচ অন্য সময় হলে বাতাস আর বৃষ্টির ফোঁটায় নিজেকে সঁপে দিতাম। অবোধ বালিকার মতো উপর দিকে হা করে দু-চার ফোঁটা পুড়ে নিতাম মুখেও।  আমি দাঁড়িয়েই আছি মাঠের মধ্যে। আমার ডান হাতের মুঠোয় মোবাইল। বাম হাতটা নিজের অজান্তেই শাড়ির ফোঁকর দিয়ে স্পর্শ করলো আমার পেট। আত্মস্পর্শে আমি কেঁপে উঠলাম যেন। নিমীলীত চোখে ওপরের দিকে তাকালাম। আগুনের ফুলকিগুলো এখন আস্ত সর্ষে দানার রূপ নিয়েছে। শীতের বিকেল। বসে আছি গ্রামের বাড়ির বারান্দায়। আমি একাই। আচমকা তলটেটে ঢুঁস খেয়ে আমি আঁৎকে উঠলাম! ঢুঁসের প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে এক অদ্ভত ভালোলাগায় বুঁদ হয়ে রইলাম গোটা বিকেল। সেদিনের পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই ঢুঁস খেয়েছি। বুঝলাম, এ বড় দুষ্টু! আমার হাড় জ্বালাবে!  এরপর থেকে তার সাথে আমার বন্ধুত্ব হয়ে গেল। কতো রকমের গল্প করতাম, গান শোনাতাম, ছড়া শোনাতাম, রূপকথার গল্প শোনাতাম! আর মাঝে মাঝেই সে ভেতর থেকে হাত-পা ছুঁড়ে, মাথা দিয়ে মৃদু ঢুঁস দিয়ে আমার কথায় সায় দিতো। পরপর দু’বার ঢুঁস দিলে বুঝতাম, সে... continue reading
Likes ১২ Comments
০ Shares

Comments (12)

  • - পিয়ালী দত্ত

    valo laglo

    - টোকাই

    প্রকৃতির এ কেমন খেলা?
    বার বার নতুন রুপ; বিস্ময় অপার
    অথচ যাপিত জীবন!

Load more writings...