Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

আসাদুস জামান বাবু

১০ বছর আগে লিখেছেন

শয়তানের যম

 

খুবই দুষ্টু ছেলে আরিফ, প্রায়ই সে স্কুল ফাঁকি দিয়ে যেখানে সেখানে দুষ্টামি করে বেড়াত। সে গ্রামে এক হাই স্কুলে কাস এইটে লেখা পড়া করে। সে বাবা মায়ের দুই ছেলের সন্তানের মধ্যে ছোট। তার একটা দল আছে। যত রকম বদমাশী, কার বাড়ীতে আম আছে, লিচু আছে এগুলো দেখে বেড়াতো। আর চুরি করে খেত। কাস ফাকি দিয়ে খেলে বেড়াত, মেয়েদেরকে ইভটিজিং করত। গ্রামের লোকজনও তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ। অনেকে অভিযোগও করেছে তার বাবার কাছে। তার বাবা ওই গ্রামের প্রভাবশালী ব্যক্তি, তার কথায় গ্রামের লোকজন উঠে আর বসে। তাই গ্রামের লোকজন তার ছেলে আরিফের নামে অভিযোগ করলেও কোন লাভ হয় না। কামরান সাহেব শুধু তাদেরকে আশ্বাস দিত যে, সে ব্যাপারটা দেখবে। সে খুবই ব্যস্ত মানুষ। তাই আরিফ কখন বাসায় থাকে আর কখন থাকেনা সেটা দেখার সুযোগ হয় না। এদিকে আরিফের মা ফরিদা বানু ছোট ছেলের জ্বালায় অতিষ্ঠ। প্রায় সে তাকে বোকাবুকি করে মাঝে মধ্যে মারেও তারপরও তার এই বদমাশী কমছেনা।
আরিফের স্কুলের পাশে একটি বিরাট জঙ্গল ছিল। তো আরিফসহ তার বন্ধু শরিফ, খাদেমুল, সাজু ও জয়। এই ৫জন মিলে কাস শেষ করে ওই জঙ্গলের ভিতড়ে যায়। প্রতিদিন তাদের এটা রুটিন মাফিক কাজ, যে তারা এই জঙ্গলে বসে সিগারেট টানবে আর কোন ছেলে মেয়ে গেলে ভয় দেখাবে।
তো তারা একদিন ওই জঙ্গলে সিগারেট টানছিল আর ভাবছিল  আজ কি কি বদমাশী করা যায়। হঠাৎ তাদের কাছে এক বয়স্ক লোক আসলো। তারা কোন দিন এই লোকটিকে আগে এই গ্রামে দেখেনি।
লোকটি তাদেরকে বলল- তোমরাতো ছোট মানুষ, কেন বাবা সিগারেট খাচ্ছো?
আরিফ সাথে সাথে বলল -আমরা কি আপনার টাকা দিয়ে খাচ্ছি?
-এভাবে কেন বলছ বাবা, আমি তো তোমাদের ভালোর জন্যই বলছি।
জয় বলল- আমাদের  ভালো আপনাকে দেখতে হবেনা। আমরা ভালোই আছি। আপনাকে চিন্তা করতে হবে না। যান আপনি আপনার কাজে যান।
-আমি তোমাদের সবার বাবাকে চিনি। আর আমি তোমাদের বাবাকে বলে দিব তোমরা জঙ্গলে বসে সিগারেট খাচ্ছো। লোকটির কথায় আরিফ রেগে গেল। তার কাছে একটি ইটের টুকরো ছিল, সেই ইটের টুকরো দিয়ে আরিফ লোকটিকে মারতেই লোকটি সেখান থেকে অদৃশ্য হয়ে যায়। সাথে সাথে তারা ভয় পেয়ে যায়।
শরিফ বলল -লোকটি কে, আর এভাবে কেন অদৃশ্য হয়ে গেল।
খাদেমুল বলল - এটা আবার ভূত টুত নয়তো।
সাজুতো খাদেমুলের কথা শুনে বলল - ওরে বাবা ভূউ....ত আমি এখানে আর নাই বাবা। তোমরা থাক আমি পালায়।
এই কথা বলতে সাজু দৌড় দিল জঙ্গল থেকে তার সাথে সাথে খাদেমুল ও শরিফও দৌড় ছিল।
আরিফ বলল -জয় তুমি থাকো আমার সাথে চল ওই লোকটিকে খুজে বের করি। নয়তো বাবাকে বলে দিলে বিপদে পড়ে যাব আমরা।
-ঠিক আছে।
তারা দুজন ওই লোকটিকে জঙ্গলে অনেক খুজাখুজি করলো। কিন্তু লোকটিকে কোথাও খুজে পেল না তারা।
জয় বলল- চল এখন আর তাকে খুজে লাভ নেই। সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে, বাড়ীতে আমাদেরকে খুঁজবে।
-বলল চল যাই।
এই বলে তারা জঙ্গল থেকে বের হতে লাগলো। হঠাৎ তাদের পথের সামনে ওই লোকটি এসে হাজির। আরিফ ও জয় থমকে দাড়ালো। আর তারা ভাবছে এতণ ধরে যাকে আমরা খুজে বেড়ালাম, সে এখন নাকি আমাদের সামনে হাজির। লোকটি তাদেরকে বলল তোমাদের অত্যাচারে গ্রামবাসী অতিষ্ঠ, কমলমতি মেয়েরাও তোদের কাছ থেকে রেহায় পায়না। তোদের আজ আমি এমন শিা দেব যে জীবনে আর তোমরা এই কাজ করবে না।
লোকটি কথা বলতে বলতে সে এক ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করল। তার মাথায় শিং গোজালো, নাকটি পাখির ঠোটের মত বড় হলো, নখগুলি বড় হতে লাগলো সাথে তার মুখে দুইটি দাত বেড় হলো। ঠিক যেন রাক্ষুসের মত দেখতে। তাদের আর বুঝতে বাকি থাকলো না যে, তারা এক রাক্ষুসের পাল্লায় পড়েছে। তাদেরকে সামনে পেলে সে খেয়ে ফেলবে।  আরিফ ও জয় তার এই ভয়ঙ্কর রূপ দেখে ভয়ে পালাতে লাগলো। তারা যেদিকে যাচ্ছে রাক্ষুটি তাদের সামনে আসছে, এভাবে অনেকণ পালাতে চেষ্টা করল কিন্তু পারলো না। এক সময় রাক্ষুসটির সামনে তারা পড়ে যায়। আর তাদের দেখে রাক্ষুসটি বলতে লাগলো-
আমার সাথে কর ফাজলমি
শয়তানের যম আমি
সাহস থাকলে দাঁড়াও একটু খানি!
আমার এলাকায় বদমাশী
ধরতে পারলে করব তোদের কুরবানী!
এই বয়সে সিগারেট টানা
খেয়ে ফেলবো তোমাদের কলিজা খানা!
সময় থাকতে সাবধান হও
আজ থেকে তোমরা শিা নাও।
আরিফ ও জয় আবার দৌড়াতে লাগলো, দৌড়াতে দৌড়াতে এক গর্তের ভিতড়ে আলিফ পড়ে যায়। জয় অনেক চেষ্টা করল কিন্তু তাকে গর্ত থেকে উঠাতে পারলো না। এদিকে আরিফ চিৎকার করছে আর বলছে জয় আমাকে বাঁচাও, আমাকে বাঁচাও। গর্তের ভিতড় আমার নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। জয় নিরুপায় হয়ে দাড়িয়ে আছে। আর ভাবছে আরিফের যদি কিছু হয়, তাহলে আরিফের বাবা আমাকে আস্ত ছাড়বেনা। সে এই কথা ভাবতে ভাবতে কে যেন, পিছন থেকে তাকে ধাক্কা দেয়। অমনি জয়ও গর্তের ভিতড়ে পড়ে যায়। তারা দুজনই অনেক চিৎকার করছে আর কান্না করছে কিন্তু কেউ তাদের ডাকে সাড়া দিচ্ছে না। আর সাড়া দিবে বা কেন জঙ্গলেতো মানুষের আনাগোনা কম। প্রায় ৩ ঘন্টা পর আরিফ ও জয় এক লোকের কণ্ঠ শুনতে পেল। আরিফ সাথে সাথে বলল কাকুগো আমাদের বাঁচান আমরা গর্তের ভিতড় পড়ে আছি। লোকটি তাদের কথার জবাব দিয়ে বলল তোমাদের শিা হয়েছেতো। আরিফ বলল হ্যা কাকু আমাদের আজ শিা হয়েছে আমরা কোন দিন আর কাস ফাঁকি দিয়ে সিগারেট টানবো না, কোন মেয়েকে ইফটিজিং করব না। কারো বাড়ীতে আম চুরি করে খাবো না। জীবনে আর কোন দুষ্টামী করবো না। লোকটি বলল ঠিক আছে তোমরা চোখ বন্ধ কর আর কান ধরে ৩ বার বলতে থাকো “আজ থেকে তোওবা করছি আর কোন এইসব বদমাশী করবনা” সিগারেট টানবো না ।
আরিফ ও জয় লোকটির কথায় চোখ বন্ধ করে এই কথাগুলো ৩ বার বলতেই চোখ খুলে দেখে তারা তাদের স্কুলের মাঠে পড়ে আছে।

Likes Comments
০ Share

Comments (2)

  • - সুলতানা সাদিয়া

    সাদা মনের মানুষই বোধহয় এতো ঘুরতে পারে!

    • - কামাল উদ্দিন

      আপনি ঠিক ধরেছেন আপু

    - শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

    আহারে কি সুন্দর ফুল, কি সুন্দর ছবি, মন ভইরা গেল!

    • - কামাল উদ্দিন

      হে হে হে

    - মোঃসরোয়ার জাহান

    valo laglo

    • - কামাল উদ্দিন