Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

ওমর ফারুক কোমল

৮ বছর আগে লিখেছেন

‘দেবদাস’-একটি অসমাপ্ত প্রেমের কথন

শৈশবকাল থেকেই ডানপিটে এক বালক দেবদাসের সাথে মায়াবতী, সোহাগিনী এক বালিকা পার্বতীর বন্ধুত্ব। নিজের দুরন্তপনার কারণে যতবারই দেবদাস মুখোমুখি হয়েছে বিপদের ততবারই তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করে যায় পার্বতী। শাস্তির ভয়ে দেব বাবু যখন ক্ষুদা ভরা পেটে জঙ্গলে বসে কাতরায়, পার্বতী তখন আঁচলে করে অন্ন বয়ে নিয়ে দেবার খোঁজে যায়। বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে মধুর এই বন্ধুত্ব কখন যে ভালোবাসায় রুপ নেয় বুঝতে পারেনা কেউই। তবে হ্যাঁ, পারুর মা বিষয়টি আন্দাজ করে। দেবদাসকে তার ভালোই লাগে, মেয়ের বর বানাতে নেই কোনও আপত্তিও। কিন্তু....! কিন্তু দেবদাস যে জমিদার বংশের ছেলে আর পারু যে বেচা-কেনা চক্রবর্তী বাড়ির মেয়ে, এ সম্পর্কের কথাকি তারা মেনে নিবে?

উপন্যাসটির প্লট শুরু হয় এভাবেই। সদ্য যৌবনে পা রাখা দুটি ছেলে-মেয়ে যখন বুঝতে পারে তারা একে ওপরকে প্রচণ্ড রকমভাবে ভালোবাসে, ঠিক তখনই পারিবারিক সীমাবদ্ধতায় আটকে যেতে থাকে তাদের ভালোবাসা। ভালোবাসা নামক সুখকর অনুভূতি তখন যেন অনেকটা বিষমাখা তীরের মত পীড়া দিতে লাগল তাদেরকে। এক পর্যায়ে যখন দেবদাসের জীবন থেকে ইতি টেনে অন্য কারো ঘরের গিন্নী হল পার্বতী, তখন যেন দেবদাসের ধরণী বলতে রইল না আর কিছুই। চারিদিক যেন শূন্য আর অন্ধকার হয়ে গেল। মদই তখন হয়ে গেল দেব বাবুর একমাত্র সঙ্গী।

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়_এর অন্যতম জনপ্রিয় একটি উপন্যাস হচ্ছে এই ‘দেবদাস’। এটি প্রকাশিত হয় ১৯১৭ সালে। মূলত তখনকার আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটকে কেন্দ্র করেই এমন অসমাপ্ত প্রেমের উপন্যাস নির্মাণ করেন বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই ঔপন্যাসিক।
শরৎচন্দ্রের জন্ম ১৮৭৬ সালে পশ্চিমবঙ্গের হুগলী জেলার দেবানন্দপুর গ্রামে। চব্বিশ বছর বয়সে গৃহত্যাগ করে হয়েছিলেন সন্ন্যাসী। জীবিকার সন্ধানে হয়েছিলেন দেশান্তরও। পরবর্তীতে তার জীবনের এতসব অভিজ্ঞতাকে পুঁজি করেই শুরু করেন লেখালেখি। ১৯১৩ সালে তার প্রথম মুদ্রিত গ্রন্থ ‘বড়দিদি’ প্রকাশিত হয়। একে একে তিনি সৃষ্টি করেন বহু কালজয়ী রচনা। ১৯৬১ সালে কলকাতায় এই মহান ঔপন্যাসিক মৃত্যুবরণ করেন।
উপন্যাসটি যখন পড়ছিলাম আমার ভেতর একটা ঘোর কাজ করছিল। সবকিছু যেন জীবন্তভাবে আমার চোখের সামনে ভাসছিল। উপন্যাসটির শেষাংশ ছিল সবচেয়ে বেদনাদায়ক। ঠিক যখন উপন্যাসটি পড়ে শেষ করলাম তখনই যেন বুঝতে পারলাম আমার চোখের কোণে বিন্দু বিন্দু জল বাসা বেঁধেছে। অন্তরের মধ্যে এক অসমাপ্ত হাহাকার বোধ করছিলাম। বোধ করছিলাম এক অপূর্ণতা।
উপন্যাসটি নিয়ে এ পর্যন্ত একাধিক ভাষায় একাধিক চলচিত্রও নির্মিত হয়েছে। বাংলাদেশে এ পর্যন্ত দুটি ‘দেবদাস’ নির্মিত হয়েছে। দুটি সিনেমাই পরিচালনা করেছেন চাষি নজরুল ইসলাম।
না পড়া থাকলে পড়ে ফেলতে পারেন কালজয়ী এই উপন্যাসটি। আমার ভালো লেগেছে, আশা করি আপনাদেরও ভালো লাগবে।
Likes Comments
০ Share

Comments (0)

  • - সুমন সাহা

    ভালো লাগলো লেখা। emoticons

    • - মুহম্মদ ফরহাদ ইমরান

      emoticons

    - মাসুম বাদল

    লেখাটা ভালো লাগল। 

    কিন্তু 

    অসমাপ্ত মনে হল... 

    • - মুহম্মদ ফরহাদ ইমরান

      শ্রদ্ধা জানবেন । আসলে বিচিত্র গাছ আর ফলের কথাই বলতে চেয়েছিলাম । তাই.........আর টানতে ইচ্ছে করেনি । 

    - মাইদুল আলম সিদ্দিকী

    দারুণ! emoticons

    • - মুহম্মদ ফরহাদ ইমরান

      emoticons জানালাম

    Load more comments...