Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.
Travel Image

ট্যুরঃ- হুমায়ূন অাহমেদ স্যারের নুহাশপল্লী


মজার বিষয় হলো, এই ইউনিয়নে শুধুমাত্র একটি গ্রাম, নাম পিরুজালি। খুব সম্ভবত দেশের অন্যতম বড় গ্রাম এটি।
ঢাকার কোলাহল থেকে একটু দূরে শান্ত-নিরিবিলি পরিবেশ বলেই মনে হয় বাংলা উপন্যাসের অন্যতম লেখক এইখানে এসে মাঝে মাঝে সময় কাটাতেন। কখনো নিজে একা একাই আসতেন, কখনো আবার বন্ধুবান্ধব নিয়ে আসতেন। আর এখানে বৈশাখে তো নিয়মিত মেলা বসাতেন তিনি।
-
-
গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে হোতাপাড়া বাজার। সেখান থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে পিরুজালী গ্রামে অবস্থিত নুহাশ পল্লী যা ৪০ বিঘা জায়গা নিয়ে তৈরি। একেবারে জঙ্গলের ভিতরে হঠাৎ করে এক টুকরো পরিচ্ছন্ন উদ্যান। শান্ত সৌম্য পরিবেশ। উপরে লিচু, জাম আর জলপাই গাছ। নিচে সবুজ ঘাসের গালিচা। যেন এক টুকরো শান্তি নিকেতন।
-
যাওয়ার ইচ্ছা ছিল অনেক আগে থেকেই। আর সেই ইচ্ছাটা আরও প্রকট হয়েছিল তিনি মারা যাবার সময়। তখন কতই না লোক এসেছিল দেশে-বিদেশে থেকে কিন্তু নিজের ব্যক্তিগত কারণেই যেতে পারি নাই। যাই হোক এইবার সেই সুযোগ এসছিল কিন্তু এবার আর হাত ছাড়া করি নাই। এক বন্ধুকে সাথে নিয়ে বৃষ্টি মাথায় করে বেরিয়ে পরেছিলাম নুহাশপল্লির উদ্দেশে।
-
মেইন গেইট দিয়ে ঢুকতেই মনে হয়েছিল যেন সবুজ কার্পেটে মোড়ানো কোনও এক শিল্পীর রং তুলির আঁচরে আঁকা একখানা ছবি। চারিদিকে শুধুই সবুজের মিলন মেলা। এক নজরে এইদিক ওইদিক তাকাতেই চোখে পড়লো একটা সুইমিং পুল যেখানে নাকি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় এবং হুমায়ূন আহমেদ একসঙ্গে জলে নেমেছিলেন, দাবার গুটির প্রতিকৃতি, টি-হাউসসহ নানা রকম দৃষ্টিনন্দন সব স্থাপত্য। এছাড়াও শত প্রজাতির দূর্লভ ঔষধি, মসলা জাতীয়, ফলজ ও বনজ গাছপালা। প্রতিটি গাছের গায়ে লাগিয়ে দেয়া আছে পরিচিতি ফলক, যা দেখে গাছ চেনা যায় সহজেই। সবুজ মাঠের মাঝখানে একটি বড় গাছের উপর ছোট ছোট ২টি ঘর তৈরি করা হয়েছে। উদ্যানের পূর্ব দিকে রয়েছে খেজুর বাগান। বাগানের এক পাশে “বৃষ্টি বিলাস” নামে অত্যাধুনিক একটি বাড়ি রয়েছে। আরও একটু সামনে আগালেই নুহাশ পল্লীর আরেক আকর্ষণ “লীলাবতী দীঘি। যার মাঝখানে আছে একটি দ্বীপ। সেখানে যাওয়ার জন্য একটা কাঠের ব্রিজ আছে, যেটা দীঘির পরিবেশকে সুন্দর থেকে সুন্দরতর করেছে। দীঘির চারপাশ জুড়ে নানা রকমের গাছ। রয়েছে শানবাঁধানো ঘাট। সেখানে অনেকগুলো নারিকেল গাছ আছে।
আর দীঘির এক পাশে আছে স্যারের “ভুতবিলাস” নামের আরও একটা বাংলো। আসলেই ভুত বিলাস করার মতই একটা জায়গা। আর শেষ প্রান্তে আছে অবসর কাটানোর মত দোলনা। সত্যি কি অপরূপ সমন্বয়!!!
-
-
বাসায় ফেরার পথে অনেকের মুখে শুনলাম কেউ বলছে ছোট জায়গা, কেউ বলছে যথেষ্ট বড়, কেউ বলছে সুন্দর জায়গা, কেউ বলছে ততটা না। তবে বাংলা সাহিত্যকে যিনি দুহাত ভরে দিয়ে গেলেন, তার চলে যাওয়ার কি এতো তাড়া ছিলো?? আর কটা দিন বাঁচলে কি এমন ক্ষতি হত স্যার!!!
-
-
#কিছু_প্রয়োজনীয়_তথ্যাদিঃ-
১। ভিতরে প্রবেশ ফি মাত্র ২০০ টাকা, তবে ১২ বছরের নিচে হলে তার টিকেট ফি লাগবেনা।
২। বৃষ্টি বিলাস নামের বাংলোতে বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ আছে সকলের।
৩। তবে ভুত বিলাস নামের বাংলোতে সময় কাটানোর জন্য ৩০০০ থেকে ৫০০০ টাকা লাগবে।
৪। রাত কাটানোর কোনো সিস্টেম নাই
৫। যেহেতু এইটা কোনও পার্ক নয়, তাই এখানের পরিবেশটা শান্ত-নিরিবিলি রাখা আমাদের সকলেরই দায়িত্ব।
৬। আর সবাই নিজ দায়িত্বে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখবেন।
-
-
(বিঃ দ্রঃ- কিছু তথ্য এবং ছবি ইন্টারনেট থেকে নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে লেখা। ভুল-ত্রুটি মার্জনীও)