আকাশে ওড়ার স্বপ্ন কমবেশি আমাদের সবারই আছে। পাখির মতো আকাশে ভেসে বেড়াতে না পারলেও এখন উড়োজাহাজে করে মানুষ আকাশে উড়তে পারে।
তবে উড়োজাহাজে করে ঘুরে বেড়ানো, উড়োজাহাজকে কাছ থেকে দেখার সাধ ছোট-বড় সবার থাকলেও সে সাধ্য আমাদের কয়জনের আছে?
উড়োজাহাজকে কাছ থেকে দেখার এবং আপনার বিমান ভ্রমণের ইচ্ছাটাকে একটু হলেও পূরণ করতে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী নির্মাণ করেছে দেশের প্রথম বিমান বাহিনী জাদুঘর।
যেখানে সবুজ ঘাসে আচ্ছাদিত বিশাল উন্মুক্ত প্রান্তর। দুই দিকেই বড় প্রাচীর। মাঝখানে মাঠের ওপর সাজানো আছে নানা আকৃতির বিমান, হেলিকপ্টার, রাডারসহ নানা সরঞ্জাম। কোনোটা বিশাল আকৃতির যুদ্ধবিমান, কোনোটা আবার যাত্রী পরিবহনের হেলিকপ্টার। দু-চারটি নয়, ২১টি যুদ্ধবিমান!
জাদুঘরের প্রবেশ মূল্য মাত্র ২০ টাকা। টিকিট কাউন্টার অতিক্রম করলেই বামপাশে চোখে পড়বে নীলাদ্রি। এই দোকানে পাওয়া যাবে বিমান বাহিনীর স্মারকসহ আরো অনেক কিছু। ডান পাশে জাদুঘরের অফিস পেরুলে একটু সামনেই চোখে পড়বে একটি মানচিত্র। এক নজর মানচিত্রে চোখ বুলালেই আপনার ধারণা হয়ে যাবে পুরো জাদুঘরের কোথায় কী আছে।
সামনের দিকে এগোতেই চোখ আটকে যাবে দৃষ্টিনন্দন পানির ফোয়ারায়। ফোয়ারার পাশেই দাঁড়িয়ে বিশাল আকৃতির এক বিমান এন-২৪ পরিবহন বিমান। বাংলাদেশের সর্বপ্রথম যাত্রীবাহী বিমান। রাশিয়ায় তৈরি এই বিমান ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে বলাকা নামে সংযোজিত হয়। ৪৪ জন যাত্রী ধারণক্ষমতার এই বিমান তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ব্যবহার করতেন। আপনি চাইলে চড়ে দেখতে পারেন বিমানটিতে। মাত্র ৩০ টাকার টিকিট সংগ্রহ করে ঘুরে দেখতে পারেন পুরো বিমানটি। বিমানে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের সুব্যবস্থা রয়েছে।
রাজধানীর তেজগাঁও বিমানবন্দরের পশ্চিম রানওয়েতে (আইডিবি ভবনের বিপরীত পাশে) সবার জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে বিমানবাহিনীর এ নতুন জাদুঘর। এতে স্থান পেয়েছে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত ডাকোটা বিমানটিসহ বেশ কিছু ঐতিহাসিক নিদর্শন।
এ জাদুঘর ঘুরে দেখা যায় নানা শ্রেণির মানুষের সমাগম। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে বয়সী নানা মানুষ কৌতূহল নিয়ে দেখছিল বিমান। আকাশে ওড়ার ডানা হাতের কাছে দেখতে পেয়ে অনেকেই শিশুদের মতো আনন্দ-উচ্ছ্বাসে আত্মহারা হয়ে যায়।
জাদুঘরের দায়িত্বে থাকা বিমানবাহিনীর বাশার ঘাঁটির ওআইসি উইং কমান্ডার মিজানুর রহমান বলেন, ‘বিমানবাহিনীর ইতিহাস, ঐতিহ্য, সাফল্য ও উন্নয়ন পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে এ জাদুঘরের গোড়াপত্তন করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে তরুণরা উৎসাহী হবে।’
প্রতি সোম থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এবং শুক্র ও শনিবার সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত জাদুঘরটি সর্ব সাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। রবিবার রক্ষণাবেক্ষণের জন্য জাদুঘর বন্ধ থাকবে।