Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.
Sports Image

ক্রিকেট নিয়ে কিছু কথা পর্ব - ০১



ক্রিকেট একটি খেলার নাম। ক্রিকেট খেলা নিয়ে আমাদের তথা সারাবিশ্বে মাতামাতি। অনেক দেশ এই খেলাটি পছন্দ করে না আবার এমন কিছু দেশ আছে যে দেশে এই খেলাটিই এখন আনন্দের খোরাক। তার মধ্যে বাংলাদেশ আমি এক বাক্যে বলতে পারি। আমরা সবাই ক্রিকেট খেলা নিয়ে অনেক মাতামাতি করি কিন্তু এই খেলা কোনদিন থেকে শুরু আর কিভাবে এই খেলার উৎপত্তি সেটা কি আমরা কেউ জানি ? অনেকে হয়তো অনেকটা জানে আবার বেশির ভাগ ক্রিকেটপ্রেমী মানুষ এই খেলার উৎপত্তি সম্পর্কে নূন্যতম ধারণাও মনে রাখেন না কিংবা জানেন না। তাই আজ আপনাদের মাঝে আমি ক্রিকেটের উৎপত্তি নিয়ে কিছু আলোচনা করব।

১৭২৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ক্রিকেটের ইতিহাস শিরোনামের এই নিবন্ধে মূলত ক্রিকেটের উৎপত্তি থেকে শুরু করে ইংল্যান্ডে একটি প্রধান ক্রীড়ায় এর উত্তরণ। এ পর্যন্ত প্রাপ্ত ক্রিকেট-বিষয়ক সবচেয়ে পুরনো তথ্যসূত্রটি ঘেটে পাওয়া যায় ১৫৯৮ সালে এই খেলাটির নাম প্রকাশিত হয়েছিল এবং সেটি অনুসারে ১৫৫০ সালের দিকেও ক্রীড়াটি প্রচলিত ছিল বলে জানা যায়। কিন্তু ক্রিকেটের আসল উৎপত্তি এখনও এক রহস্যের ভেতর রয়ে গেছে। তবে মোটামুটি দৃঢ়ভাবেই বলা যায় যে ১৫৫০ সালের আগেও দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডের কেন্ট, সাসেক্স ও সারি দেশগুলিতে, বিশেষ করে Weald নামের অঞ্চলটিতে, ক্রিকেটের প্রচলন ছিল। ব্যাট-বল-ফিল্ডার দিয়ে খেলা হয়, এমন অন্যান্য ক্রীড়ার থেকে ক্রিকেটের একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল এই যে, এটি খেলার জন্য অপেক্ষাকৃত ছোট দৈর্ঘ্যে ঘাসবিশিষ্ট মাঠের প্রয়োজন হত, কেন না, ১৭৬০-এর দশকের আগ পর্যন্তও ব্যাটসম্যানকে মাটিতে গড়িয়ে বল করা হত। এ কারণে যে সমস্ত জায়গায় বনাঞ্চল সাফ করা হয়েছিল, কিংবা ভেড়া চরানো হত, সেই সমস্ত জায়গাই ক্রিকেট খেলার জন্য উপযোগী ছিল।

ক্রিকেটের শুরুর দিকের বছরগুলির উপর তথ্যের অভাব দেখে বোঝা যায়, এটি আসলে সম্ভবত ছোট বাচ্চাদের খেলা ছিল। ১৭শ শতকে এসে শ্রমিকেরা এটি খেলা শুরু করে। রাজা ১ম চার্লসের সময় অভিজাত শ্রেণী খেলাটির প্রতি আকৃষ্ট হতে শুরু করে। সবচেয়ে বড় কথা হলো আজও দেখা যায় ক্রিকেট নিয়ে মিলিয়ন মিলিয়ন টাকার জুয়ার আসর বসায় বিশ্বের বড় বড় জুয়ারি গুলো। আসলে এটা সেই প্রথম থেকেই ক্রিকেট খেলার চেয়ে ক্রিকেটকে কেন্দ্র করে জুয়া খেলার সুযোগই তাদের বেশি আকৃষ্ট করেছিল। দিনে দিনে ক্রিকেটে প্রচুর বিনিয়োগ হওয়া শুরু হয় এবং লন্ডন ও দক্ষিণ ইংল্যান্ডে এটি একটি জনপ্রিয় বিনোদনে পরিণত হয়। এসময় বড় বড় ক্লাব ও পেশাদার ক্রিকেট খেলোয়াড়ের আবির্ভাব ঘটে।

এভাবেই চলতে থাকে ক্রিকেটের অগ্রগতি। কিন্তু খেলার নিয়মকানুন নিয়ে নানান সংশয় তৈরী হয়। মাটিতে গড়িয়ে বল দেয়া হলে নানান সমস্যার সৃষ্টি হতো, মাটি কামড়ে বলগুলো অনেক সময় বিরক্তির সৃষ্টি করত। আর এই সমস্যা থেকে রেহাই পেতেই বোলিং-এ বল ছুঁড়ে মারার নিয়মের উপস্থাপন ও হ্যাম্বলডন ক্লাবের প্রতিষ্ঠা । চাহিদার প্রেক্ষিতে বিনোদনের কথা বিবেচনা করে দিনে দিনে ক্রিকেট জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। আর সেকারনেই ১৭২৭ সালে ক্রিকেট লন্ডন ও দক্ষিণ ইংল্যান্ডের একটি প্রধান ক্রীড়া হয়ে আবির্ভাব হয়। ঐ শতাব্দীতে বাজিকরদের আগ্রহের কারণে ক্রীড়াটিতে প্রচুর অর্থলগ্নি করা হয়। ধনী ব্যক্তিদের অনুদানে ও বিনিয়োগে কাউন্টি দল, পেশাদার খেলোয়াড় এবং প্রথম বড় ক্লাবগুলির আবির্ভাব ঘটে। ১৭২৬ সালে লন্ডন ও ডার্টফোর্ড ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ক্লাব। কেন্ট, মিডলসেক্স, সারি ও সাসেক্সের কাউন্টি দলগুলি ছিল প্রথম সারির ক্রিকেট দল। আর্টিলারি গ্রাউন্ড, ডার্টফোর্ড ব্রেন্ট, কেনিংটন কমন, মুলজি হার্স্ট এবং রিচমন্ড গ্রিন ছিল তখনকার দিনের সুপরিচিত ক্রিকেট মাঠ।

১৬৯৭ সালের আগে সংবাদপত্রগুলিতে ক্রিকেটের কোন উল্লেখ নেই। কিন্তু ১৭২০-এর দশকের মাঝামাঝি নাগাদ ক্রিকেট-সংক্রান্ত রিপোর্ট বাড়তে থাকে। তবে এই রিপোর্টগুলি বহুদিন যাবৎ পূর্ণাঙ্গ ছিল না। আসল খেলার বিবরণের চেয়ে খেলার সময়সূচি কিংবা খেলার উপর বাজির দর নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনাই ছিল এগুলির মূল বিষয়বস্তু।

ক্রিকেট আবিষ্কারকদের সবচেয়ে আসর হতো অস্ট্রেলিয়া আর ইংল্যান্ডের মাঝে। আ্যাশেজ নামের টেস্ট সিরিজ।

.........চলবে।