Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.
Lifestyle Image

সেরা বাবা হতে যে সমস্যাগুলোর মুখোমুখি হতে হবে আপনাকে



সাধারনত সন্তানকে জন্ম দেওয়া, বড় করে তোলা থেকে শুরু করে খুটিনাটি সব কাজের জন্যে সবসময়ে মায়েরাই পেয়ে থাকেন বেশিরভাগ কৃতিত্বটা। সত্যি বলতে কি, একটি মানুষের পরিপূর্ণ মানুষ হয়ে ওঠার পেছনের অনেকটা অংশই জুড়ে থাকে তার মায়ের সাথে। ছোটবেলা থেকেই সন্তান মায়ের কাছে তার বেশিরভাগ সময়টা কাটায়, মা তাকে শেখায় কোনটা ঠিক কোনটা ভুল, অন্ধকার আর আলোর ভেতরের পার্থক্যটা মাই চেনায় সন্তানকে। শেখায় পৃথিবীর সাথে যোগাযোগ করবার অন্যতম মাধ্যম- ভাষা। আর তাই একজন মা কি করে আরো ভালো মা হয়ে উঠতে পারবেন, এতে তার কতটা সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে এসব নিয়ে প্রায়ই নানারকমের আলোচনা চলে। কিন্তু একটু খেয়াল করলেই লক্ষ্য করবেন যে কেবল মা নয়, একটি শিশুর জীবন ভরিয়ে তুলতে মায়ের সাথে দরকার হয় একজন ভালো বাবারও।
প্রত্যেক বাবাই চান নিজের সন্তানের চোখে সেরা হয়ে উঠতে। আরো একটু অন্যরকম হয়ে উঠতে, ভালো বন্ধু হয়ে উঠতে। কিন্তু ভালো মা হওয়ার মতন সেরা বাবা হওয়ার এই পথটাও কিন্তু বেশ বন্ধুর। নানারকম সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় একজন পুরুষকে নিজের সন্তানের কাছে সেরা বাবা হয়ে উঠতে। আর সেই সমস্যাগুলোর কথাই নিচে দেওয়া হল।

১. পরিবারকে অগ্রাধিকার দেওয়া
অনেক সময়ই একজন মানুষের আলাদা কোন স্বপ্ন থাকতে পারে। থাকতে পারে আলাদা কোন ইচ্ছে। সেটা কেবল জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারেই নয়, হতে পারে সকালবেলা ঘুম থেকে না ওঠার মতন ছোটখাটো ব্যাপারেও। কিন্তু একজন সেরা বাবা কেবল নিজের কথাই ভাবেন না। ভাবেন নিজের সন্তান আর পরিবারের কথাও। আর তাই সেরা বাবা হয়ে উঠতে গেলে আপনাকে এগিয়ে রাখতে হবে আপনার পরিবারের মতামত আর ইচ্ছে-অনিচ্ছাকে।

২. ছেলেমানুষী করা
বাবা তো অনেকেই হয়। কিন্তু সন্তানের সবচাইতে কাছের বন্ধু হিসেবে কয়জনই বা নিজেকে তুলে ধরতে পারে। আর এক্ষেত্রে আপনার সন্তান আপনাকে তখনি কাছের বলে ভাবতে শুরু করবে যখন সে আপনার সাথে নিজের মিল খুঁজে পাবে। আর তাই সেরা বাবা হতে হলে অনেক সময়ই সন্তানকে খুশি রাখতে করতে হতে পারে অনেক ছেলেমানুষী।

৩. লুকোনো ভালোবাসা
বাচ্চারা অনেক সময় মায়ের কাছে সব জিনিসের জন্যে আবদার করতে পারেনা। হয়তো আপনার সন্তানের কোন একটা খেলনা বা বই পছন্দ হয়েছে। অথচ মাকে সে বলতে পারছেনা। পাছে বকা খায়। আর তাই সে চুপিচুপি আপনার সাহায্য চাইছে। সাহায্য করুন সন্তানকে। হয়তো পুরো ব্যাপারটাই সাধারন। কিন্তু এই অল্প একটু লুকিয়ে দেখানো ভালোবাসাটাও হয়ে উঠতে পারে অসাধারন। বিশেষ করে আপনার সন্তানের কাছে। আর তাই সেরা বাবা হয়ে উঠতে হলে করতে হতে পারে আপনাকে এই কাজটাও।

৪. আদর্শ হিসেবে তৈরি করা
প্রত্যেকটি সন্তানই চায় অন্যের কাছে নিজের বাবাকে নিয়ে গর্ব করতে। তাকে আদর্শ হিসেবে মানতে। হয়তো আপনি দেখতে এমন কিছু আহামরী নন। কিন্তু তারপরেও যতটুকুই আপনি হোন না কেন আর যেমনটাই হোন না কেন, কিছু ক্ষেত্রে নিজেকে সন্তানের আদর্শ হিসেবে তৈরি করাটা আপনার অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজের ভেতরেই পড়ে। আর তাই সেরা বাবা হতে গেলে অনেকটা শুধরে ফেলতে হতে পারে আপনার নিজেকে।

৫. সন্তানকে বুঝতে পারা
সেরা বাবা হতে হলে আপনাকে সন্তানের মন বুঝতে পারতে হবে। তার ভয়, তার ভালোবাসা, তার আনন্দ সবটাই যেন সেকেন্ডের ভেতরেই ধরে ফেলতে পারেন আপনি।

৬. খোলাখুলি কথা বলা
সন্তানের সাথে খোলাখুলি কথা বলার মতন অভ্যাস ও পরিবেশ তৈরি করতে হবে আপনাকে। সেই সাথে মানসিক অবস্থার দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। সন্তান অনেক সময় অনেক কথা তার মাকে বলতে পারেনা। নিজের ভেতরে কষ্ট পায়। বিশেষ করে যৌনসংক্রান্ত বিষগুলোতে। সেক্ষেত্রে সেরা বাবা হতে হলে আপনাকে খুব সহজেই সন্তানের সেসব সমস্যাকে বোঝার ও মোকাবেলা করার মতো মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে।

৭. সাহায্য করা
ঘরের রান্না, সন্তানের কাপড় পাল্টানো, স্কুলে নিয়ে যাওয়া, রাতের বেলা গল্প শোনানোর মতন কাজগুলো করতে হবে আপনাকে। হয়তো সেটা আপনি না করলেও সমস্যা হবে না। কিন্তু আপনার এই সাহায্যকারী মনোভাব আপনার সন্তানের মনকেও পাল্টে দেবে। আপনার প্রতি তার ভালোবাসা বাড়বে। বাড়বে পরিবারের প্রতিও।

৮. মনে রাখতে পারা
এমনিতে অফিস আর বাসার নানারকম ব্যাপার ভুলে গেলেও সেরা বাবা হবার জন্যে আপনাকে সন্তানের বিশেষ দিনগুলোর কথা মনে রাখতেই হবে। সেটা হতে পারে তার জন্মদিন বা অন্যকিছু।

৯. ভেঙে না পড়া
খারাপ সময় মানুষের জীবনে বারবার আসে। কিন্তু এসময় ভেতরে ভেতরে কষ্ট বা ভয় পেলেও আপনাকে শান্ত থাকতে হবে সন্তানের সামনে। একজন সেরা বাবা হতে গেলে সন্তানের মাথার ওপর গাছের মতন ছায়া দিয়ে সবসময়ই তাকে বোঝাতে হবে যে আপনি তার সাথে আছেন। কোন ভয় নেই।

১০. গুরুত্বপূর্ণ অনুভব করানো
অন্য কারো অবহেলা মেনে নিতে পারলেও সন্তান তার বাবার কাছ থেকে পাওয়া অবহেলা সহ্য করতে পারেনা। আর তাই সেরা বাবা হতে হলে আপনাকে সবকিছুর ওপরে নিজের সন্তানকে প্রাধান্য দিতে হবে। তাকে মনে করাতে হবে যে আর কারো কাছে না হোক, আপনার কাছে সে কতটা গুরুত্বপূর্ণ।