Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.
Health Image

কৃমি রোগের আক্রমন, চিকিৎসা এবং প্রতিরোধ




কৃমি আমাদের দেশে একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা। যে কোনো বয়সের মানুষের কৃমি হতে পারে। তবে শিশু কিশোরদের মাঝে কৃমির সংক্রমণ বেশি দেখা যায়৷ অবশ্য ছোট শিশু যেমন : পাঁচ মাস বয়স পর্যন্ত, যখন শুধু মাত্র মায়ের বুকের দুধই পান করে, তখন সাধারণত কৃমি হয় না৷ আমাদের দেশের মানুষের সুতা কৃমি, কেঁচো ও হুক কৃমির সংক্রমণ বেশি হলেও ফিতা কৃমির সংক্রমণ ও দেখা যায়৷

কৃমি

কৃমি হচ্ছে মানুষের সবচেয়ে ক্ষতিকর ও বৃহৎ পরজীবী। এটি মানুষের দেহে বাস করে এবং শরীর থেকে খাবার গ্রহণ করে বেঁচে থাকে ও বংশ বৃদ্ধি করে৷ কৃমি অনেক ধরনের আছে৷ তবে আমাদের দেশে কেঁচো কৃমি, বক্র কৃমি ও সুতা কৃমিতে আক্রান্তের হার বেশি৷

এরা সাধারণত মানুষের অন্ত্রে বসবাস করে এবং দেখতে কেঁচোর মতো এবং এই কৃমির রঙ হালকা হলুদ হয়ে থাকে যা পরিণত অবস্থায় ৬ থেকে ১৪ ইঞ্চি লম্বা হতে দেখা যায় ।

কিভাবে মানুষ কে আক্রমন করে

সাধারণত অপরিষ্কার শাকসবজি ফলমূল, নোংরা খাবার, দূষিত পানির মাধ্যমে কেঁচো কৃমির ডিম আমাদের মুখে প্রবেশ করে অথবা আক্রান্ত ব্যাক্তির কাপড় চোপর, হাত-পা ঠিকমতো না ধুলে নখের মধ্যে বা আঙুলের ভাঁজে লেগে থাকা ডিম খাদ্যের মাধ্যমে আমাদের পেটে চলে যায়। সেখান থেকে খাদ্যনালীর ক্ষুদ্রান্তে এ ডিম চলে যায় এবং ক্ষুদ্রান্তের এনজাইম বা পাচকরসের মাধ্যমে ডিম থেকে লার্ভা বের হয়৷

লার্ভাগুলো রক্তের মাধ্যমে যকৃত, হৃদপিণ্ড এবং ফুসফুসে প্রবেশ করে৷ এরপর ফুসফুসের এলভিওলাই ছিদ্র করে শ্বাসনালী দিয়ে অন্ননালী পার হয়ে পাকস্থলীতে প্রবেশ করে ক্ষুদ্রান্ত্রে এসে পূর্ণতা লাভ করে এবং ডিম পাড়ে৷

একটা স্ত্রী কৃমি দৈনিক প্রায় ২ লাখ ডিম পারে মানুষের অন্ত্রে এবং ১০-৪০ দিনের মধ্যে ডিমের ভেতর বাচ্চা কৃমি তৈরী হয় এবং পরে তা মলের সাথে নিষ্কাশন করে , আবার পুনরায় সেই মল থেকে খাদ্য বা অন্যান্য পর্যায়ে সুস্থ মানুষের পেটে ঢোকে পরে (Foeco-oral route )। এতে শিশুরাই এর বেশি শিকার হয়ে থাকে।

চিকিৎসা

কৃমির চিকিৎসা দেবার আগে মল পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া ভালো৷ যদি রোগীর মলে বা বমির সঙ্গে কেঁচো কৃমি বের হয়, রোগী যদি বলে যে রাতে তার মল দ্বার চুলকায়, মল পরীক্ষার সুযোগ ও সামর্থ্যের অভাব, কিন্তু কৃমি আছে বলে সন্দেহ হয় তবে মল পরীক্ষা না করেও কৃমির ঔষধ দেওয়া যায়৷ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বয়স অনুযায়ী আলাদা আলাদা মাত্রায় ঔষধ খেতে হবে৷

কারো কারো কৃমির ঔষধ খাওয়া সম্পূর্ণ নিষেধ, যেমন গর্ভবতী মহিলা, জ্বর ও ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী৷

প্রতিরোধ

যেহেতু প্রতিরোধ চিকিৎসা অপেক্ষা অধিকতর ভালো তাই প্রতিরোধে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া উচিৎ
জন্মের পর প্রথম ৫ মাস বয়স পর্যন্ত শিশুকে শুধু বুকের দুধ খাওয়াতে হবে
মল নিষ্কাশনের সুষ্ঠু ব্যবস্থা করতে হবে
খাবার তৈরি, পরিবেশন এবং খাওয়ার পূর্বে সাবান দিয়ে অবশ্যই হাত ধুয়ে ফেলতে হবে
মল ত্যাগের পর সাবান বা ছাই দিয়ে অবশ্যই হাত ধুয়ে ফেলতে হবে
নিয়মিত গোসল করা, পরিষ্কার জামা-কাপড় পড়া এবং নখ বড় হবার আগেই অবশ্যই কেটে ফেলা কারণ বড় নখের ভেতর কৃমির ডিম ঢুকে থাকে
প্রতি চার মাস পর পর পরিবারের সকলকে বয়স অনুযায়ী নির্দিষ্ট মাত্রার কৃমির ঔষধ খাওয়ানো উচিৎ
বাড়ির একজনের কৃমি থাকলে সকলেরই সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে বাড়ির সবাইকে কৃমির ঔষধ খেতে হবে, বাড়ির কাজের মানুষটিও যেন বাদ না পরে।