Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.
Entertainment Image

রুচিহীন বাঙালি দর্শকদের জন্য ছবি বানান নি



কলকাতা বাংলা চলচ্চিত্র আজ একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বের সাথে তালমিলিয়ে এগিয়ে গেছে তাদের চলচ্চিত্র জগৎও। মাঝখানে ঘটে গেছে বিশাল এক পালাবদল। আর এই পালাবদল এমনি এমনি বা দৈবক্রমে হয়নি। এর পেছনে ছিলেন বেশ ক’জন মেধাবী ও সৃষ্টিশীল মানুষ; তাদের মধ্যে যুগস্রষ্ঠাতুল্য একজন হচ্ছেন নির্মাতা, অভিনেতা ও সম্পাদক বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব ঋতুপর্ণ ঘোষ।

গত সাত আট বছরের মধ্যে কলকাতা বাংলা সিনেমায় ঘটে গেছে বিশাল পালাবদল। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বদলেছে দর্শকের চাহিদা, ইমেজ আর দেখার চোখও! কিন্তু কখনোই নিজের কাজের সাথে দর্শকের চাহিদাকে মিশিয়ে দেননি। দর্শক তাঁর সিনেমা দেখবে না, এরজন্য তার কখনো আফসোস ছিলো না। প্রকৃতঅর্থে বলতে গেলে, রুচিহীন বাঙালি দর্শকের জন্য সিনেমা বানানি ঋতুপর্ণ ঘোষ। কাজের ক্ষেত্রে কোনো তিনি কম্প্রোমাজিং করেননি তিনি। কিন্তু তবুও দর্শকদের তিনি অভ্যস্ত করানোর চেষ্টা করেছেন চলচ্চিত্রের একটি ভিন্ন ধারার সাথে। তাই তার গল্পে দেখা যায় নাগরিক জীবনের প্রাপ্তি, অপ্রাপ্তি, প্রেম বিরহ আর অবদমন, আর সম্পর্কের জটিলতা।

নিউ এজ বাংলা সিনেমার প্রবর্তকও বলা হয় তাকে। যৌনতাকে শৈল্পিকভাবে কিভাবে উপস্থাপন করা যায়, এবং তা মেইনস্ট্রিম আর আর্টফর্মের সমন্বয়ের ভিতর দিয়ে চর্চা করা যায় তা ভীষণরকমভাবে পর্দায় তুলে ধরে দেখিয়েছেন ঋতুপর্ণ ঘোষ।
প্রায় ছবিতেই তিনি বিচিত্র সম্পর্কের গল্প বলে গেছেন। সাহিত্যের কতো চমৎকার চলচ্চিত্রায়ন হতে পারে, তা নিউ এজ বাংলা চলচ্চিত্রে ঋতপর্ণের চেয়ে আর কে ভালো দেখাতে পেরেছে। তিনি বলা যায় বাংলা চলচ্চিত্রে পায়োনিওর। চোখের বালি, নৌকাডুবি, অন্তরমহলের মতোন সিনেমায় ঋতুপর্ণ যে প্রভাব দেখিয়েছেন, তার তুলনা হয় না। সমকামিতা এবং লিঙ্গান্তর বা রূপান্তরিত নারী পুরুষের গল্প দেখিছি। তার ছবির ভিতর দিয়ে সমাজে সম্পর্কের রকমফের কতো অসাধারণভাবে ফুটে উঠেছে; চিত্রাঙ্গদা তার উৎকৃষ্ট উদাহারণ।


এক নজরে নির্মাতা ঋতুপর্ণ ঘোষ...
ঋতুপর্ণ ঘোষ (জন্ম:৩১শে অগস্ট, ১৯৬৩ - মৃত্যু:৩০শে মে, ২০১৩)

চলচ্চিত্র-
চোখেরবালি,অন্তরমহল,নৌকাডুবি, সত্যান্বেষী, আবহমান,হীরের আংটি,উনিশে এপ্রিল,দহন,অসুখ,উৎসব, তিতলি,শুভ মহরত,রেনকোট, দোসর,দ্য লাস্ট লিয়ার,সব চরিত্র কাল্পনিক,আরেকটি প্রেমের গল্প,মেমরিজ ইন মার্চ।

পুরস্কার...
নিজের মেধা আর সৃষ্টিশীলতা দিয়ে ঋতুপর্ণ ঘোষ যেমন অসাধারণ সব চলচ্চিত্র নির্মাণ করে গেছেন, তেমনি তার এসব কাজের জন্য পেয়েছেন প্রচুর জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও। তিনি ১৯৯৫ সাল থেকে ২০১২ পর্যন্ত অন্তত ১১বার ভারতীয় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হন। এছাড়াও বহু আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র পুরস্কারেও সম্মানিত করা হয় তাকে।

লোকার্নো ইন্টারন্যাশানাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল -চোখের বালি - ২০০৫

কেরল আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎযব -অন্তরমহল -২০০৫

কারলোভি ভ্যারি ইন্টারন্যাশানাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল –দহন -১৯৯৮

কারলোভি ভ্যারি ইন্টারন্যাশানাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল –রেনকোট -২০০৪

লোকার্নো ইন্টারন্যাশানাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল -অন্তরমহল -২০০৫

ডউভিল এশিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল -আবহমান -২০১০

শিকাগো ইন্টারন্যাশানাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল -চোখের বালি -২০০৩

পুসান ইন্টারন্যাশানাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল -উনিশে এপ্রিল -১৯৯৬

বার্লিন ইন্টারন্যাশানাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল -বাড়িওয়ালি