Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

আল ইমরান

১০ বছর আগে

“যুদ্ধপুরাণ” বাঁধ ভাঙার প্রয়াস

মার্চ মহান স্বাধীনতার মাস। এই স্বাধীনতা খুব সহজে আসেনি। স্বাধীনতা এসেছে অনেক আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে। স্বাধীনতা আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে এযাবৎ রচিত হয়েছে অনেক গান, কবিতা, নাটক, উপন্যাস, সিনেমা এবং গল্প। প্রতিটি প্রয়াসই ছিল অনেক চেষ্টা এবং গবেষণার ফসল। কিন্তু এদের মধ্যে ছিল সীমারেখা। “যুদ্ধপুরাণ” সেই সীমারেখা বা বাঁধ ভেঙ্গে দেয়ার এক ভিন্নধর্মী প্রয়াস।

নাটকটি নির্মিত হয়েছে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের পুর্ববর্তী সময়ে মিরপুর এলাকায় পাকিস্তানি আর্মি এবং পাকিস্তান পন্থী অবাঙ্গালী দের দ্বারা সংঘটিত নারকীয় হত্যা যজ্ঞের প্রতিচ্ছবির পটভূমিতে।

নাটকটির মুল আকর্ষন হচ্ছে এর উপস্থাপন। তথাকথিত নাটকের মত আপনি শুধু বসে বসে দেখলেন আর শুনলেন ব্যাপারটা এমন নয়। নাটকটি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে অনুভব করার মত। একটু ধারনা দিলে হয়ত বুঝতে পারবেন, ধরুন আপনি রাতের আধারে কোন এক বধ্যভূমির পাশ দিয়ে খালি পায়ে হাঁটছেন, হঠাৎ আপনার নাকে ভেসে এল কর্পুর আর ধূপের মিশ্র গন্ধ। পায়ের নিচে মাটি হয়ে উঠল শীতল ও স্যাঁতস্যাঁতে। লক্ষ করলেন, আপনার আশেপাশে হাঁটছে লম্বা আলখেল্লা পরিহিত আরও কিছু কায়া, চাঁদের আবছা আলোয় মুখগুলো স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে না। এর মধ্যে কোন একটা কায়া এগিয়ে এলো আপনার দিকে, বলে উঠল, আমাকে চিনতে পারছেন কি, চেনার কথাও নয়, আমি আবু তালেব। বলেই হাতটা এগিয়ে দিল, ঘটনার আকস্মিকতায় আপনি কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না। অজান্তেই হাতটা বাড়িয়ে ধরলেন সেই হাতটিকে। মৃত মানুষের হাতের মত হিমশীতল হাতের স্পর্শ লাগল আপনার হাতে। চমকে কায়ার মুখের দিকে তাকালেন, চাঁদের অস্পষ্ট আলো আধারিতে ফুটে উঠল ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া লাশের মুখ। আপনার অনুভূতি তখন কেমন হবে একটু ভাবুন তো। এই নাটকে আপনি এই ধরনেরই কিছু অনুভূতি পাবেন। এখানে দেখা হবে সেই নারকীয় হত্যাযজ্ঞে শহীদ হওয়া কিছু নিরপরাধ বাংলাদেশির আত্মার সাথে। আত্মারা আপনার সাথে হাঁটবে। তাদের সাথে ঘটে যাওয়া সেই হত্যাযজ্ঞের বর্ননা দেবে। এখানে আপনি দেখা পাবেন সাংবাদিক আবুতালেব, লেখিকা মেহেরুন নেসা সহ বিভিন্ন পেশাজীবীর আত্মার সাথে। উনারা আপনাকে নিয়ে যাবে সেই জল্লাদখানায়, দেখাবে সেই গণকবর। যেখানে আজো ঘুমিয়ে আছে সেই সব শহীদেরা।নাটকের সময়কাল মাত্র ২০ মিনিট। কিন্তু আমি আত্মবিশ্বাসের সাথে বলতে পারি। এই ২০ মিনিট আপনাকে স্বাধীনতা নিয়ে নতুন করে ভাবতে শেখাবে। আপনার চেতনাকে নাড়া দেবে। গত ২৬ শে মার্চ শিল্পকলা একাডেমীর এক্সপেরিমেন্টাল হলে পরপর ছয়বার মঞ্চায়িত হয় নাটকটি। প্রতিটি শো ছিল হাউসফুল। আমি নিজে খুব বেশি মঞ্চ নাটক দেখেছি তা নয়, খুব কম দেখেছি ব্যাপারটা তা ও নয়। নতুন নতুন প্রচুর আইডিয়ার দেখা পেয়েছি। অনেক ধরনের প্রেজেন্টেশন দেখেছি। কিন্তু“যুদ্ধপুরাণ” ছিল আমার দেখা সুবিন্যস্ত ভাবে এক্সিকিউটেড একটা সেরা প্রেজেন্টেশন। যেটা বর্ননার চেয়ে বাস্তবে আরও অনেক বেশি অসাধারন। বাঁধ ভাঙার এই প্রয়াস সফল হোক এই কামনা করি। এবং "যুদ্ধপুরাণের" পুরো টিমের প্রতি রইল আমার শ্রদ্ধা এবং অভিনন্দন। স্পেশাল ধন্যবাদ বরুন দা কে, আমাকে এমন একটা উপস্থাপন এর সাক্ষী করার জন্য। 

নাটকটির মুল পরিকল্পনা ও নির্দেশনাঃ আনিসুল হক বরুন।

এবং কলাকুশলীরা বিভিন্ন নাট্য গোষ্ঠীর সাথে সম্পৃক্ত। যেমন নাট্য বিন্দু, নাট্য শৈলী, পদাতিক, দেশ নাটক। থিয়েটার রুপান্তর ইত্যাদি।সার্বিক সহযোগিতায়ঃ শিল্পকলা একাডেমি এবং মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। 

১ Likes ৫ Comments ০ Share ৬২৮ Views

Comments (5)

  • - লুৎফুর রহমান পাশা

    সুন্দর আইডিয়া তো।

    - আলমগীর সরকার লিটন

    নতুন সৃষ্টিধারার কবিতা

    অভিনন্দন দাদা---

    • - মো: মালেক জোমাদ্দার

      আলমগীর ভাই ধন্যবাদ ।

    - সুখেন্দু বিশ্বাস

    বাহ! চমৎকার কবিতা। ধারনাটা ও সুন্দর।

     

    শুভেচ্ছা সতত মালেক ভাই।  

    • - মো: মালেক জোমাদ্দার

      ভাই ধন্যবাদ,শুভকামনা। 

    Load more comments...