Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

বর্ণ হীন

১০ বছর আগে

সোনাবউ

বাংলাদেশের প্রায় বেশির ভাগ এলাকাতেই এক সময় সোনাবউ নামের এই পাখিদের দেখা যেত। এখন সিলেট এবং চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকা ছাড়া অন্য কোথাও এদের খুব একটা দেখা যায় না। বেনেবউ-এর সঙ্গে সোনাবউ-এর স্বভাবের ফারাক খুব কম। শুধু রঙ দেখেই এ দুটি পাখিকে আলাদা করা যায়। 

পুরুষ সোনাবউয়ের গায়ের রঙ উজ্জ্বল সোনালি হলুদ। ঠোঁটের গোড়া থেকে একটি টানা কালো দাগ চোখের উপর দিয়ে চলে গেছে কান পর্যন্ত। দেখলে মনে হয়, কাজলটানা দুটি চোখ। ডানার পালক ও লেজ কালো। অন্যদিকে মেয়ে সোনাবউয়ের গায়ের উপরের অংশ সবুজাভ হলুদ। পেটের হলুদ অংশটা একটু ফিকে-হয়ে-আসা। ডানার পালকের ডগায় সবুজাভ হলুদ রং থাকে। আর ঘাড়ে আছে সামান্য বাদামি ছোপ।

গ্রীষ্ম থেকে শরৎ-- মূলত এই ছয় মাস সে থাকে তার আবাসস্থলে। বাকি ছয় মাস খুব কমই দেখা যায় এদের। তখন ওরা দলে দলে শীত কাটাতে চলে যায় আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চলে। অর্থাৎ তাপমাত্রা একটু কম হলেই সহ্য করতে পারে না। যে দেশে তাপমাত্রা বেশি, চলে যায় তেমন দেশে। আর এ কারণেই এই পাখিদের বেশি দেখা যায় সিংহল বা শ্রীলঙ্কা, ভারতের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ আর পাকিস্তানের উত্তর-পূর্ব বেলুচিস্তানে। এছাড়া ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, মহীশুর, বিহার এবং রাজস্থানেও ওদের দেখা পাওয়া যায়।

ওদের মধ্যে একটা প্রবণতা আছে যে, ওরা লোকালয়ের আশেপাশে খুব একটা আসে না। তাই ওদের দেখাও মেলে কম। এ থেকেই অনেকে ধারণা করেন, ওরা আমাদের দেশ থেকে হারিয়ে গেছে। আসলে ওরা কখনও-ই খুব বেশি পরিমাণে ছিল না। আর যাও-বা আছে, তারাও লোকালয়ে আসে না বলে দেখা পাওয়া-ই ভার। মাঝেমধ্যে ভুল করে লোকালয়ে চলে আসলেই ওদের দেখা যায়।

ওরা লোকালয় এড়িয়ে চলে ওদের লাজুক প্রকৃতির জন্য। মূলত বড় বড় গাছের মগডালে ঘোরাঘুরি করে। পাতা বা ঘন ঝোপের আড়ালে বসে মিষ্টি সুরে ডাকে-- ‘পি-নো-লো ওয়াও’। এমনকি মাটিতে নামে না বললেও ভুল হবে, ওরা ছোট ছোট গাছ বা ঝোপঝাড়েও নামতে চায় না।

যারা এ পাখিকে দেখেছে, তারা জানে, ওকে দীর্ঘ সময় ধরে পর্যবেক্ষণ করা এক রকম অসম্ভব। সে এমন ভাবে উঁচু গাছের ডালে-ডালে পাতার আড়ালে চলাফেরা করে যে, তাকে ভালো করে এক নজর দেখাও ভাগ্যের ব্যাপার। দীর্ঘক্ষণ কোথাও থাকে না। পাতার আড়ালে আড়ালে মগডাল দিয়েই চলে যায় অন্য গাছে। খুব যে বেশি ওড়ে তাও নয়, কিন্তু উড়বার ভঙ্গিই বলে দেয়, চাইলে সে ভালোই উড়তে পারে। পাখায় বেশ জোড় আছে। এক গাছ থেকে অন্য গাছে যাওয়ার সময় মনে হয়, বাতাসে হলুদ রঙের ঢেউ তুলছে সে।

বেশ উপরে দোলনার মতো বাসা বানায় সে। বাসার বাইরে থাকে কাগজ ও কাপড়ের টুকরো। সুতা ও সাপের খোলস পেলে তাও বাসার চারদিকে জড়িয়ে রাখে। অন্য পাখির বাসা থেকে আলাদা করে চেনার জন্যই হয়তো তারা এ কাণ্ড করে। কারণ সে বাসা বানায় এমন গাছে, যেখানে বুলবুলি, ছাতারে এবং ঘুঘুর বাসাও আছে। অবশ্য যে গাছে ফিঙের রাজত্ব বেশি, তেমন গাছই ওদের বেশি পছন্দ। কারণ, ফিঙেরা তাদের পাহারা দিয়ে রাখে। কোনো শিকারি পাখিকে ত্রিসীমানায় ঘেঁষতে দেয় না ফিঙেরা।

সোনাবউয়ের প্রজননের সময় গ্রীষ্ককাল। তখন সে ডিম পাড়ে, বাচ্চা ফোটায়। ওরা ডিম পাড়ে দুই থেকে তিনটি। স্ত্রী ও পুরুষ দুজনে মিলেই ঘরগেরস্থালির কাজে নিয়োজিত থাকে। ডিমের রঙ সাদা। তার উপর কালো ছিটছিট দাগ থাকে।

১ Likes ৭ Comments ০ Share ১১৬৪ Views

Comments (7)

  • - মোহাম্মদ জমির হায়দার বাবলা

    নক্ষত্র ব্লগ: একুশে সংকলনএর সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ।

    আশা করি ছড়া, কবিতা, স্মৃতিচারণ, গল্প,  প্রবন্ধ ইত্যাদি নিয়ে একটি দারুন সংকলন হবে।

    ব্লগারদের পক্ষ থেকে নীলদাকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

    এ ধরনের সৃজনশীল কাজ অব্যাহত থাকবে এ প্রত্যাশা।

    শুভকামনা।

    • - নীল সাধু

      ইনশাল্লাহ

    - মোহাম্মদ জমির হায়দার বাবলা

    নক্ষত্র ব্লগ: একুশে সংকলনএর সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ।

    আশা করি ছড়া, কবিতা, স্মৃতিচারণ, গল্প,  প্রবন্ধ ইত্যাদি নিয়ে একটি দারুন সংকলন হবে।

    ব্লগারদের পক্ষ থেকে নীলদাকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

    এ ধরনের সৃজনশীল কাজ অব্যাহত থাকবে এ প্রত্যাশা।

    শুভকামনা।

    - আলভী

    দারুন! সফলতা কামনা করছি।

    • - নীল সাধু

    Load more comments...