Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

সেই মিথিলা (ধারাবাহিক গল্পঃ ১)

একটি ছোট গল্প লিখেছিলাম 'এক হৃদয়হীনা' নামে। গল্পটি পড়ে বিশেষ করে নিচের লাইনগুলো সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে, আমার শ্রদ্ধেয় এক শিক্ষক (গুরুজন) কিছু মন্তব্য করেছিলেন, তার প্রেক্ষিতে আমি বলেছিলাম- পরবর্তীতে সময় সুযোগ হলে আমি গল্পটির আরও একটি পর্ব লিখবো। এবং  হয়ত সেখানে অনুচ্চারিত প্রশ্নটির একটি উত্তর পাবো আশা করছি।

লাইনগুলো হলো-

..." সেই মিথিলাকে শেষবার দেখি এক আলোকোজ্জ্বল রাতে! রঙ বে-রঙের পোশাক পড়া অতিথিদের ভিড়ে... অপ্সরী সেজে বসে আছে সে! চারিদিকে এতো আলোর ভিতরে আমাকে নিকষ কালো আঁধারে ডুবিয়ে সে চলে গেলো অন্য একজনের হাত ধরে! সানাই বেজে চলেছে... সেই সানাইয়ের সুরে সুরে সে চলে গেলো... ফিরে এলোনা! ওর হৃদয়ে তখন সানাইয়ের মধুর রাগিনী! আর আমি কয়েক শবিষাক্ত সাপের ছোবল হৃদয়ে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি... আমার কানে বেজে চলছিল সানাইয়ের করুণ সুর। আমার কষ্টকে তা আরো বাড়িয়ে দিচ্ছিল। আমাকে যেন ধারালো তরবারী দিয়ে কয়েক শবার আঘাত করা হয়েছে... একটা জ্বলন্ত তীর আমার হৃদয়টাকে এফোঁড় ওফোঁড় করে দিয়ে গেলো মিথিলার সামনে দিয়ে।

মিথিলা একবারও পিছনে আমার দিকে ফিরে তাকালো না!

আসলে মিথিলারা কখনো-ই পিছু ফিরতে চায় না... মিথিলারা এক একজন হৃদয়হীনা!

ওরা কখনোই কারো হয় না।। ..."

মিথিলা কেন চলে গেলো? ... আসলেই কি ওদের হৃদয় নেই? কিংবা আদতেই মিথিলারা কারও হয় কিনা?

আজ গল্পটির  ২য় পর্বের শুরুটা করা যাক-

  সেই মিথিলা

১.

সচিবালয়ের পুর্ব পাশের রাস্তার ওপর পাশ। দীর্ঘক্ষণ ধরে একটি লাল রঙের প্রাইভেট কার অলস সময় ক্ষেপন করছে। কালো গ্লাসের ভিতর দিয়ে আরোহী কাউকে দেখার কথা নয়, সেখাও যাচ্ছে না। দর্শকের নিজের চেহারাই নিজেকে ব্যঙ্গ করতে থাকে যেন।আদৌ কেউ আছে কিনা তাও জানার উপায় নেই। কালোগ্লাস না এখন নিষিদ্ধ? তবে সবার জন্য হয়ত না।

পুলিশের টহল টিমটা প্রথম যখন গাড়িটিকে অতিক্রম করেছিল, কেন যেন ওদের সন্দেহ হল। আশেপাশে পার্কিং করা (বেশীর ভাগই 'নো-পার্কিং' লিখা সাইনের সাথেই) আরও অনেক গাড়ি রয়েছে। তবে ওগুলোর অলস ড্রাইভারদের কেউ সীটে হেলান দিয়ে ঘুমে, দু'একজন কানে হেডফোন দিয়ে 'সঙ্গীত-শ্রবণ-সাধনায়' বিভোর, একজন সিগ্রেট টানছে দরোজার বাইরে কুৎসিত ভঙ্গীতে- কিছুটা চোরের মতো। যদিও প্রকাশ্যে ধুমপান করা আইনত দন্ডনীয়। কিন্তু অন্য আরও কিছু কিছু ব্যাপারের মতো এই স্পর্শকাতর বিষয়টি ঘিরেও চলছে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শনের হীনমনোবৃত্তি। আমরা বাঙালী বা বাংলাদেশী বলে কথা।

ঘন্টা দেড়েক পরে ঐ একই দলটি আবার ফিরতি পথে এলো, একই জায়গায় একই ভঙ্গীতে ছিল গাড়িটি। নিশ্চুপ... পরিবেশ ও যেন কেমন বিব্রত... মনের ভিতর কাটা বেঁধা অনুভূতি। কেমন এক সন্দেহপ্রবণ ভ্যাপসা আবহাওয়া উৎকট রুপে প্রকট হয়ে পড়ল টহল দলটির হাবিলদারের বোবা অনুভূতিতে।তার মনে হল, মেঘলা আকাশ গুমোট আবহাওয়া নিয়ে নগরজীবনে ভ্যাপসা পরশ বইয়ে দিচ্ছে। দিনের গরম অস্বস্তি এবং কালো গ্লাসে ঢাকা কটকটে লাল একটি গাড়ি এক অশরীরী আত্মার অপচ্ছায়া হয়ে টলহল পুলিশের প্রধানকে হঠাৎ থামতে বাধ্য করে।ত

ড্রাইভারের দরোজার গ্লাসে মৃদু করাঘাত করে। এবং একদলা থুথু ফেলে জানালার কাচ ঘেঁষে মাটিতে। কিন্তু তাকে সচকিত করে জানালার কাঁচ তুলে কেউ মুখ বাড়ায় না। আরও কয়েকবার নক করেও কোনো ফল না হলে, সাথের কন্সটেবল দুজন একে অন্যের মুখপানে একবার তাকায়। ওদের 'ওস্তাদ' হাবিলদারের ভ্রুযুগল কুচকে উঠে। কিছুদিন আগে দেখা এক বীভৎস দৃশ্যের কথা তার মনে পড়ে। এরকমই নির্জন একটি গাড়িতে স্রেফ জবাই করা একজনের লাশ দেখেছিল সে।

কি করবে ভাবছে, এমন সময় পাশের রাস্তা দিয়ে একজন এস,আই মটরবাইকে করে ওদেরকে পাশ কাটাতে উদ্যত হয়। হাবিলদার তাকে থমতে ইশারা করে এবং নিজ সন্দেহের কথা জানায়। বাইক থামিয়ে কর্মকর্তা নিজেও কয়েকবার নক করে। সেও ব্যর্থ হয় কাঁচের ওপাশের  স্বরূপ উদঘাটনের। পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে তার উপরস্থ কারও কাছ থেকে নির্দেশনা নিতে ওয়াকিটকি কেবল হাতে নিয়েছে, তখুনি পিছনের কালো গ্লাস নামার রিনরিনে পরিচিত শব্দ শুনতে পাওয়া যায়।

(ক্রমশঃ)

 

১ Likes ২ Comments ০ Share ৪৯০ Views

Comments (2)

  • - মাসুম বাদল

    শুভকামনা রইলো, ভাই... emoticons

    • - সোহেল আহমেদ পরান

      অনেক ধন্যবাদ

    - সকাল রয়

    দারুন লিখেছেন

    • - সোহেল আহমেদ পরান

      ধন্যবাদ সকালদা। কষ্টবোধ থেকে লেখা ... 

      শুভেচ্ছা emoticons

    - প্রলয় সাহা

    বাহ্‌ কবি বাহ্‌। খুব ভালো লেগেছে দাদাভাই। 

    • - সোহেল আহমেদ পরান

      ধন্যবাদ প্রিয়। ভালো থাকুন emoticons

    Load more comments...