Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

সৃজনশীলচর্চায় সাহিত্য-ব্লগ

~এক~
লেখালেখি মানুষের মজ্জাগত একটা বিষয়। এটা ভেতর থেকে আসে। আমরা মনের টানে লিখে থাকি। মনের ভালোলাগা বা মন্দলাগাটুকু আমাদের লেখায় ওঠে আসে। ওঠে আসে কষ্টবোধ বা সুখবোধ। তাই জোর করে লেখালেখি করা প্রায় অসম্ভব। তাই লেখালেখির এই প্রয়াস- একে বলা হয় সৃজনশীল কাজ। সৃজনশীল কাজে স্বভাবিকভাবেই থাকে - স্বতন্ত্র চিন্তা, বোধ ও চেতনার হৃদ্য প্রকাশ। জোর করে সৃজনশীল এই কাজ করা সম্ভব না হলেও, অনুশীলন ও শেখার আগ্রহ ভালো লেখক হতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।  তাছাড়া, পাঠকের পাঠ-প্রতিক্রিয়া এবং লেখক-পাঠক মিথস্ক্রিয়ার মধ্য দিয়ে লেখার মান উন্নত করা সম্ভব। আগেকার দিনে, পাঠকের প্রতিক্রিয়া এবং লেখক-পাঠক মিথস্ক্রিয়ার বিষয়টি সাধারণত আড্ডা/আলোচনা আর চিঠিপত্রের মাধ্যমে হয়ে থাকতো।

~দুই~
তথ্য-প্রযুক্তির ব্যাপক প্রসারলাভ করায় লেখালেখির মেজাজ ও মাধ্যমেও এসেছে (আসছে) অনেক পরিবর্তন। আগে নতুন কবি-লেখকগণের জন্য লেখা প্রকাশের মাধ্যম ছিলো খুব সীমিত। দৈনিক পত্রিকার সাহিত্যপাতা, হাতেগোনা সাপ্তাহিক পত্রিকা ছিলো লেখা প্রকাশের মূল মাধ্যম। ঈদ-পার্বণের বিশেষ সংখ্যাগুলোও বড় লক্ষ্য থাকতো অনেক লেখা প্রকাশের জন্য। এর বাইরে বিভিন্ন বিশেষ দিবসে স্মরণিকা বা ম্যাগাজিন বেরুতো তখন। স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস বা একুশে ফেব্রুয়ারিতে এসব ম্যাগাজিন প্রকাশিত হতো নতুন ও পুরনোদের লেখা নিয়ে।  সপ্তাহের সাহিত্যপাতা কিংবা ম্যাগাজিন প্রকাশের জন্য কবি-লেখকদের অধীর আগ্রহে প্রতীক্ষা করতে হতো।

~তিন~
প্রযুক্তির উৎকর্ষের এই দিনে অনেককিছুর সাথে পরিবর্তন ও নতুন সংযোজন এসেছে- লেখালেখি ও লেখা প্রকাশেও। আগে লেখালেখির ড্রাফট বা প্রাথমিক হতো কাগজে কলমে। আরএখন তা হচ্ছে ফিঙ্গারটিপে- কীবোর্ডে। লেখালেখির জন্য এখন প্রিন্ট মিডিয়ার পাশাপাশি এসেছে বিভিন্ন অনলাইন মিডিয়া। সাহিত্য-আশ্রয়ী ব্লগ এদের মধ্যে অন্যতম। লেখালেখির জন্য এসবব্লগ একটি অত্যন্ত সুন্দর মাধ্যম- যেখানে পাঠকের পর্যবেক্ষণমূলক প্রতক্রিয়া, লেখক-পাঠক মতবিনিময় এবং গঠনমূলক সমালোচনার মাধ্যমে লেখার উৎকর্ষ সাধন করার যথেষ্ঠ সুযোগ রয়েছে। ব্লগিং বা লেখালেখি/ মতপ্রকাশের অনলাইন এই মাধ্যমকে তাই ছোট করে দেখার কোনো কারণ নেই।

~চার~
স্বীকার্য যে, পত্রিকায় আর ব্লগে লেখার মধ্যে বেশ পার্থক্য রয়েছে। পত্রিকা বা প্রিন্ট মিডিয়ায় লেখা প্রকাশের আগে সম্পাদকের হাতে তা পরিমার্জিত হয়ে যায়। কিন্তু ব্লগে সেই ফিল্টারটা নেই। তাই অনেক কাঁচা ও অপরিপক্ক লেখা ব্লগে প্রকাশ হবার সুযোগ থেকে যায়। তবে ব্লগে লেখালেখির কিছু ভালো দিকও আছে যা এখানে উল্লেখ করাটা প্রাসঙ্গিকভাবেই জরুরি। তাহলো - মত প্রকাশের স্বাধীনতা।  ব্লগ বা অনলাইন মিডিয়াতে, যে কেউ তার লেখাটি প্রকাশ করতে পারেন। আর সেই লেখায় -অন্যলেখক বা যেকোনো পাঠক মন্তব্য করতে পারেন। লেখক-পাঠকদের মধ্যে যারা অপেক্ষাকৃত ভালো জানেন, তাঁদের গঠনমূলক মন্তব্য/সমালোচনা লেখার মান উন্নত করতে পারে সহজেই। লেখার ভুলগুলো ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে মার্জিতভাবে (কখনোই অন্যের অনুভুতিতে আঘাত দিয়ে নয় ) ধরিয়ে দেবার  মধ্য দিয়েই সম্ভব অনলাইন লেখালেখির সুফলটা পাওয়া যেতে পারে।

~পাঁচ~
প্রযুক্তির কল্যাণে সৃজনশীল-চর্চার এই সুযোগকে সুস্থভাবে কাজে লাগানো উচিত। ভিন্ন ভিন্ন মত নিতে না না মতবাদের ধারক-বাহক হয়ে অনেক ব্লগের অস্তিত্ব দেখা যায়। সেসব ব্লগ বা ওয়েবসাইট বাদ দিয়ে, শুধু সাহিত্য- ঘেঁষা ব্লগগুলোর কথা মাথায় রেখে বলা যায়- সৃজনশীলতার চর্চায় এই ব্লগ/অনলাইন মিডিয়ার কার্যক্রমকে সুন্দর মানসিকতা নিয়ে মননশীল অবদানের মধ্যদিয়ে পারস্পারিক উৎকর্ষ সাধনে সবার এগিয়ে আসা উচিত।
--
১৮ মার্চ ২০১৫
৪ Likes ২০ Comments ০ Share ৬৯৯ Views