ভারতীয় বাংলা সিনেমার কিংবদন্তী অভিনেত্রী সুচিত্রা সেনের শরীরিক অবস্থার আরো অবনতি হয়েছে। ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, কলকাতার বেলভিউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সুচিত্রার অবস্থা আগের দিন কিছুটা স্থিতিশীল বলে মনে হলেও শনিবার বিকাল থেকে পরিস্থিতির আরো আবনতি হয়। ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে কৃত্রিমভাবে তার শ্বাসপ্রশ্বাস চলছে। ওই হাসপাতালের চিকিৎসক সুব্রত মৈত্র বরাত দিয়ে ভারতের ইংরেজি দৈনিক হিন্দুর খবরে বলা হয়, সুচিত্রা সেনের শারীরিক অবস্থা অনিয়মিত হয়ে উঠেছে। রক্তে অক্সিজেন কমে যাওয়ায় তার চিকিৎসা পদ্ধতিতেও কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। “সুচিত্রাদেবীর শ্বাসনালিতে জমে থাকা কফ বের করার জন্য একটি বিশেষ নল (এন্ডোট্র্যাকিয়াল টিউব) লাগানো হয়েছে। নল লাগানোর সময় সামান্য রক্তক্ষরণ হয়েছিল, পরে ওষুধ দিয়ে তা বন্ধ করা হয়েছে। আপাতত নন-ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনেই রয়েছেন। ওষুধ দিয়ে তাকে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছে।”
সুব্রত মৈত্র ছাড়াও কলকাতার একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক শনিবার সুচিত্রাকে দেখেছেন। তাকে খাবার দেয়ার হচ্ছে নলের মাধ্যমে। অবস্থার অবনতির খবর পেয়ে শনিবার সন্ধ্যার দিকে পাঁচ মিনিটের জন্য হাসপাতালে ছুটে যান পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। হাসপাতাল থেকে বের হয়ে মমতা সাংবাদিকদের বলেন, “সারা পৃথিবী জুড়ে সুচিত্রা সেনের অগণিত ভক্ত উৎকণ্ঠায়। মুনমুন-রিয়া-রাইমা রয়েছে, ওর পরিবার-পরিজন-বন্ধুরাও রয়েছেন। এখন সবারই মন খারাপ। এখন এমন কোনও খবর ছড়ানো উচিত নয়, যাতে কেউ দুঃখ পায়।” সুচিত্রার স্বাস্থ্য ঝুঁকিপূর্ণ জানিয়ে গত শুক্রবার তার আরেক চিকিৎসক সুবীর মণ্ডল বলেছিলেন, যতদিন না তিনি ভেন্টিলেশন ছাড়া অক্সিজেন নিতে পারছেন, ততোদিন তার অবস্থা সংকটাপন্ন। ফুসফুসে পানি জমে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে গত ২৩ ডিসেম্বর কলকাতার বেলভিউ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ৮২ বছর বয়সী সুচিত্রাকে।
১৯৭৮ সালে চলচ্চিত্র থেকে অবসর নেয়ার পর সংবাদ মাধ্যম এবং ভক্তদের কাছ থেকে নিজেকে আড়াল করেই রেখেছিলেন এই ‘মহানায়িকা’। ‘সাত পাকে বাঁধা’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য ১৯৬৩ সালে মস্কো চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা অভিনেত্রীর সম্মাননা পান সুচিত্রা। ভারতীয় কোনো অভিনেত্রীর সেটিই প্রথম আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন। উত্তম কুমারের সঙ্গে জুটি বেঁধে দর্শকদের একের পর এক জনপ্রীয় চলচ্চিত্র উপহার দিয়ে গেছেন তিনি, যা এখনও অনেক তারকার জন্য ঈর্ষনীয়। তার আলোচিত সিনেমার তালিকায় রয়েছে ‘হারানো সুর’, ‘সাগরিকা’, ‘দীপ জ্বেলে যাই’, ‘উত্তর ফাল্গুনী’, ‘মমতা’, ‘দেবদাস’ ইত্যাদি। হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেও সমান দক্ষতা দেখিয়েছেন বাংলা ছবির এই অভিনেত্রী।
Comments (8)
ধন্যবাদ ইকু ভাই...
লেখাটা আমার খুব ভালো লাগলো।
আমার ফ্যামিলিতেও বোরকা বা হিজাবের বাড়াবাড়ি আছে। কিন্তু সেই সাথে দুরকম হিজাবী আছে। একরকম আছে-নিজের মুখকে হিজাবে বাধলে চেহারায় গালের চাপা'র অংশ ঢেকে যায় বলে মুখটাকে গোলমোলা দেখায়, সোজা ভাষায় তার মুখের শুকনা ভাব ঢেকে গিয়ে সুন্দর মুখশ্রী হয়ে উঠে। তাই সে, আমার এক কাজিন, নিয়মিত স্টাইল করে একেক দিন একেক রকম ওড়না দিয়ে হিজাব করে চুলটাকে ঢেকে সুন্দর মুখশ্রীর ফ্যাশন করে। আবার তাকেই আমি দেখছি-টাইট ফিটিংস কামিজ আর পাজামার ভেতরে পড়ার জন্য যে 'টাইডস (চিকন গায়ের সাথে একেবারে ঠেসে থাকা আটোসাটো গেঞ্জি কাপড়ের পায়জামা)' আছে সেটা পাজামা হিসেবে পরে বাইরে যাতায়াত করছে। তনু দেহের বঙ্কিমের প্রতিটি খাঁজ এমনকি পা থেকে কোমরের সমস্তটাই স্পষ্ট করে উঠে। এরকম করে হিজাব করে লাভ কি?? আমি বাসার বাইরে গেলে চুল ঢেকে বের হই। মাথায় ঘোমটা পরতেই আমার ভালো লাগে, হিজাব নয়। কিন্তু আমাকে মাঝেমাঝে এই মেয়ের কাছেই শুনতে হয়-"তুমি কেন হিজাব করোনা? বাসাতেও তো চুল ঘোমটা ছাড়া খুলে রাখো!"
হিজাব অথবা, বোরখা কোনটাই আমার ভালো লাগে না। আর, আমি আটোসাটো পোশাকও পরি না। কারণ আমি জানি তাতে আমার নিজেরই ক্ষতি। পরকালের আগেই, আমার ক্ষতি। কেননা- আমি যে পথে যাতায়াত করি, সে পথে ছেলেদের মাথা ঘুরিয়ে তাদেরও ক্ষতি করা প্লাস নিজেরও নিরাপত্তা বিনাশ করার কোন মানেই হয় না! মাথা ঘুরাতে হয় তো মাত্র একজনের ঘুরলেই চলবে, হাজারো ছেলের চোখে নিজেকে লোভনীয় করাটা বিকৃত রুচির ব্যাপার হতে পারে। অন্য মেয়েদেরকে নিচু করছি না। শুধু নিজের ব্যাপারে বললাম, নিজের অভিজ্ঞতা!
ভালো লিখেছেন।
ঠিক আপনার মতই আমি ভাবি। চাপে পরে পর্দা অথবা স্টাইলের জন্য বিকৃতভাবে পর্দা করা উচিৎ নয়।
আর সাধারণ পোশাক দিয়েও অনায়াসেই পর্দা করা যায়। বোরকা অথবা মাথা ঢেকে রাখার জন্যে আলাদা কাপড় পরার রীতি চালু করা এক ধরণের বাড়াবাড়িই। তবে কেউ ভালোবেসে পরলে আপত্তিও থাকা উচিৎ না।
আপনার মন্তব্যটা ভালো লাগলো। অনেক ধন্যবাদ জাকিয়া জেসমিন যূথী...
অসাধারণ লিখেছেন দাদা