বিষয়টা খুবই দুঃখজনক যে আমরা এমন একটা দেশে বাস করছি যেটা আসলেই গণতান্ত্রিক কিন্তু বিবেচনার বিষয় হচ্ছে প্রকৃত অর্থেই সেটা সত্যি কিনা! যেখানে অরাজনৈতিকতায় মুখ ফুটে কিছু বলতেও শতবার চিন্তা করতে হয় মানুষকে। বিষয়টা সত্যিই খুব প্যাথেটিক যে এখানে শিক্ষার জন্যেও আন্দোলন করতে হয় যেখানে বলাই হয়েছে যে "সবার জন্যে শিক্ষা"! শিক্ষা একজন ব্যাক্তির মৌলিক অধিকার। এটার উপর কর আরোপ করাটা সত্যি অনৈতিক এবং অবিবেচনীয়। তবে এটা খুবই চমৎকার যে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মুখ বুজে অন্যায় মেনে নেয়নি বরং তাদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে সোচ্চার হয়েছে। তাদের প্রতিবাদী হয়ে উঠাটা সত্যই বাহবা পাবার মতই।
কিন্তু অন্যায়ের প্রতি প্রতিবাদমুখী সৈনিকদেরকে উৎসাহিত করার পরিবর্তে সামাজিক যোগাযোগের কিছু মাধ্যমগুলোতে কিছু কিছু মানুষের মন্তব্য দেখে অনেক ব্যাথিত হলাম। বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ। এখানে অধিকাংশ পরিবারই মধ্যবিত্ত এবং নিম্নমধ্যবিত্ত। তবুও অনেকেই যেই বখাট্য যুক্তিটা প্রকাশ করে তা হল-"যেহেতু সে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে, সেহেতু তার বাবা একজন কোটিপতি! নয়ত বেসরকারিতে ভর্তি হইসে কেন?!" এটা খুবই লেইম একটা যুক্তি। এবং তাদের অধিকাংশ যুক্তিই নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিকে ঘিরে। অথচ বাংলাদেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬০-৭০+ এবং তাদের সবাই নিশ্চয় নর্থ সাউথে পড়ে না। অথবা মন্তব্য করছে, রাজস্ব তো দেশের কল্যাণের জন্য, খাদ্য থেকে শুরু করে বস্ত্র, এমনকি হাসপাতালে গেলেও তো ভ্যাট নেয়, তাহলে শিক্ষাতে নয় কেন?"
তাদের এইসব সস্তা যুক্তি দেখে হাসব নাকি কাঁদব ভুলে গেছি। তারা কি শিক্ষাকে পন্য মনে করে?! আর অদ্ভুত হাসপাতালের সাথে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তুলনা তারা দেয় কিভাবে? তারা কি জানেন না, ৫/৬ঘন্টা দেরি করলেও, বড় লাইনে দাঁড়াতে হলেও সরকারি হাসপাতাল থেকে তারা চিকিৎসা নিতে পারবেন। তো এতটুকু অপেক্ষা করতে না পেরে বেসরকারিতে দৌড়াচ্ছেন কেন? এটা অনেকটা তাদের ইচ্ছার উপরেও ছিল। কিন্তু তাদের অনুরোধ করব বেঃবিঃ এর শিক্ষার্থীদের একটিবার জিজ্ঞেস করুক তো কেউ এখানে শখের বশে ভর্তি হয়েছে নাকি!
তবে কি তারা আবার বলে বসবেন মেধা নাই, সরকারিতে চান্স পাও নাই তো পড়তে আসছ কেন! কি অদ্ভুত! শত শত গোল্ডেন, এ+ জন্ম দিতে পারেন আর তাদের জন্য সরকারিতে আসন সংখ্যা বাড়াতে পারেন না? এটা কি তাদের মেধার দোষ নাকি এই দেশের কথিত শিক্ষা ব্যাবস্থার দোষ!? প্রতিবছর যতজন গোল্ডেন/এ+ পায় সেই তুলনায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আসন সংখ্যা বিবেচনা করেছেন? আর এখানে দুর্ভাগ্যের বশে চান্স না পেলেই তারা মেধাহীন হয়ে গেল? তাদের পড়ালেখা বন্ধ? আর যদি এইটাই বলেন, তবে আমি জানতে চাই চাকরি খুঁজতে গেলে সার্টিফিকেট চান কেন! বলেন কেন!-এক হাতে ডিগ্রী দাও অন্যহাতে চাকরি নাও! আর অধিকারের প্রশ্ন যদি আসে তবে শিক্ষা তো শিক্ষাই। শিক্ষার উপরেই যখন ভ্যাট ধরা হবে তবে কেবল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েই কেন? শিক্ষা কি তাহলে কেবল সরকারি শিক্ষার্থীদের জন্য? এবার হয়ত তারা বলে বসবে, টাকা আছে বলেই তো বেসরকারিতে ভর্তি হয়েছে! কতটা হাস্যকর তাদের যুক্তি। আচ্ছা, তারা কি বেঃ বিঃ বলতে খালি nsuকেই চিনছেন? এই দেশে বেঃবিঃ এ কিন্তু মধ্য আর নিম্ন আয়ের ছেলে মেয়েরাও পড়ে এবং ধনীর দুলালদের চাইতে এদের সংখ্যাটাই বেশি। এমন অনেক বাবা-মা আছেন যারা নিজেরা অতি কষ্টে জীবনযাপন করেও সন্তানকে শহরে শিক্ষা নিতে পাঠায় এই জন্যে না যে তাদের অনেক টাকা হইসে বরং এই জন্যে যে তার ছেলেটা/মেয়েটা ডিগ্রী নিয়ে ভালো একটা চাকরি পেয়ে তাদের কষ্ট দূর করবে। তাদের সমস্যাগুলো লাঘব হবে, বেঁচে থাকাটা নমনীয় হবে এই জন্য।
আবার অনেকের মনে এই ধরনেরও প্রশ্ন আসে যে এই আন্দোলন কেবল সরকারের বিরুদ্ধেই কেন? সেই সব বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কেন নয় যারা টিউশন ফি'র নামে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। আর এখানে আমার প্রশ্ন হচ্ছে, এইসব কর্তৃপক্ষরা তো শুরু থেকেই শাসকশ্রেণী, সাধারন মানুষকে শোষণ করাটাই তো এদের কাজ কিন্তু সরকার! সরকার তো জনগণের বন্ধু, তবে তার করণীয় কি ছিল! বেঃবিঃ এর উপর অতিরিক্ত টিউশন ফির হাত থেকে শিক্ষার্থীদের রক্ষা করা নাকি অতিরিক্ত কর আরোপ করে তাদের উল্টো অনিশ্চয়তার পথে ঠেলে দেয়া?! বিষয়টা কি তবে সেই কথিত বন্ধু(!)র মত হয়ে গেল না যে বন্ধুত্বের নামে এসে বলবে"দোস্ত, একটু রক্ত দিসিস, আরেকটু দে, আরেকটু রক্ত দে দোস্ত!। রক্ত দিতে দিতে তুই শেষ হয়ে যা আমি বেঁচে থাকি। আমরা আমরাই তো!"
শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড, জাতির যেটুকুইবা মেরুদন্ড আছে সেটা ভেঙ্গে দেবার জন্য নয়। অন্যদিকে নিত্যসামগ্রীর মুল্য বাড়িয়ে এখন যাতায়াত ভাড়া! সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়? তারউপর শিক্ষার উপর এই অতিরিক্ত ভ্যাট! এর থেকে একটা মধ্যবিত্ত পরিবারের বাবা-মায়ের অবস্থার কথা তো চিন্তাই করা যাচ্ছে না। বিষয়টা এসির বাতাসে বসে হাওয়া খাওয়া অর্থমন্ত্রীর বিবেচনায় নেয়া উচিত।
আর সেই সব পাবলিক যারা এই কর আরোপের পক্ষে মন্তব্য জানায়, তারা নিজেরা অন্যায়ের প্রতিবাদ না করুক, অন্তত এইসব লেইম যুক্তি দেখিয়ে সত্যের দিক, মানবতার দিক থেকে চিন্তা করুন এবং যারা অধিকার আদায়ে সোচ্চার, প্রতিবাদমুখর তাদের অন্তত দমিয়ে দেবার ব্যার্থ চেষ্টা থেকে বিরত থাকুন।
কিন্তু অন্যায়ের প্রতি প্রতিবাদমুখী সৈনিকদেরকে উৎসাহিত করার পরিবর্তে সামাজিক যোগাযোগের কিছু মাধ্যমগুলোতে কিছু কিছু মানুষের মন্তব্য দেখে অনেক ব্যাথিত হলাম। বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ। এখানে অধিকাংশ পরিবারই মধ্যবিত্ত এবং নিম্নমধ্যবিত্ত। তবুও অনেকেই যেই বখাট্য যুক্তিটা প্রকাশ করে তা হল-"যেহেতু সে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে, সেহেতু তার বাবা একজন কোটিপতি! নয়ত বেসরকারিতে ভর্তি হইসে কেন?!" এটা খুবই লেইম একটা যুক্তি। এবং তাদের অধিকাংশ যুক্তিই নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিকে ঘিরে। অথচ বাংলাদেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬০-৭০+ এবং তাদের সবাই নিশ্চয় নর্থ সাউথে পড়ে না। অথবা মন্তব্য করছে, রাজস্ব তো দেশের কল্যাণের জন্য, খাদ্য থেকে শুরু করে বস্ত্র, এমনকি হাসপাতালে গেলেও তো ভ্যাট নেয়, তাহলে শিক্ষাতে নয় কেন?"
তাদের এইসব সস্তা যুক্তি দেখে হাসব নাকি কাঁদব ভুলে গেছি। তারা কি শিক্ষাকে পন্য মনে করে?! আর অদ্ভুত হাসপাতালের সাথে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তুলনা তারা দেয় কিভাবে? তারা কি জানেন না, ৫/৬ঘন্টা দেরি করলেও, বড় লাইনে দাঁড়াতে হলেও সরকারি হাসপাতাল থেকে তারা চিকিৎসা নিতে পারবেন। তো এতটুকু অপেক্ষা করতে না পেরে বেসরকারিতে দৌড়াচ্ছেন কেন? এটা অনেকটা তাদের ইচ্ছার উপরেও ছিল। কিন্তু তাদের অনুরোধ করব বেঃবিঃ এর শিক্ষার্থীদের একটিবার জিজ্ঞেস করুক তো কেউ এখানে শখের বশে ভর্তি হয়েছে নাকি!
তবে কি তারা আবার বলে বসবেন মেধা নাই, সরকারিতে চান্স পাও নাই তো পড়তে আসছ কেন! কি অদ্ভুত! শত শত গোল্ডেন, এ+ জন্ম দিতে পারেন আর তাদের জন্য সরকারিতে আসন সংখ্যা বাড়াতে পারেন না? এটা কি তাদের মেধার দোষ নাকি এই দেশের কথিত শিক্ষা ব্যাবস্থার দোষ!? প্রতিবছর যতজন গোল্ডেন/এ+ পায় সেই তুলনায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আসন সংখ্যা বিবেচনা করেছেন? আর এখানে দুর্ভাগ্যের বশে চান্স না পেলেই তারা মেধাহীন হয়ে গেল? তাদের পড়ালেখা বন্ধ? আর যদি এইটাই বলেন, তবে আমি জানতে চাই চাকরি খুঁজতে গেলে সার্টিফিকেট চান কেন! বলেন কেন!-এক হাতে ডিগ্রী দাও অন্যহাতে চাকরি নাও! আর অধিকারের প্রশ্ন যদি আসে তবে শিক্ষা তো শিক্ষাই। শিক্ষার উপরেই যখন ভ্যাট ধরা হবে তবে কেবল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েই কেন? শিক্ষা কি তাহলে কেবল সরকারি শিক্ষার্থীদের জন্য? এবার হয়ত তারা বলে বসবে, টাকা আছে বলেই তো বেসরকারিতে ভর্তি হয়েছে! কতটা হাস্যকর তাদের যুক্তি। আচ্ছা, তারা কি বেঃ বিঃ বলতে খালি nsuকেই চিনছেন? এই দেশে বেঃবিঃ এ কিন্তু মধ্য আর নিম্ন আয়ের ছেলে মেয়েরাও পড়ে এবং ধনীর দুলালদের চাইতে এদের সংখ্যাটাই বেশি। এমন অনেক বাবা-মা আছেন যারা নিজেরা অতি কষ্টে জীবনযাপন করেও সন্তানকে শহরে শিক্ষা নিতে পাঠায় এই জন্যে না যে তাদের অনেক টাকা হইসে বরং এই জন্যে যে তার ছেলেটা/মেয়েটা ডিগ্রী নিয়ে ভালো একটা চাকরি পেয়ে তাদের কষ্ট দূর করবে। তাদের সমস্যাগুলো লাঘব হবে, বেঁচে থাকাটা নমনীয় হবে এই জন্য।
আবার অনেকের মনে এই ধরনেরও প্রশ্ন আসে যে এই আন্দোলন কেবল সরকারের বিরুদ্ধেই কেন? সেই সব বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কেন নয় যারা টিউশন ফি'র নামে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। আর এখানে আমার প্রশ্ন হচ্ছে, এইসব কর্তৃপক্ষরা তো শুরু থেকেই শাসকশ্রেণী, সাধারন মানুষকে শোষণ করাটাই তো এদের কাজ কিন্তু সরকার! সরকার তো জনগণের বন্ধু, তবে তার করণীয় কি ছিল! বেঃবিঃ এর উপর অতিরিক্ত টিউশন ফির হাত থেকে শিক্ষার্থীদের রক্ষা করা নাকি অতিরিক্ত কর আরোপ করে তাদের উল্টো অনিশ্চয়তার পথে ঠেলে দেয়া?! বিষয়টা কি তবে সেই কথিত বন্ধু(!)র মত হয়ে গেল না যে বন্ধুত্বের নামে এসে বলবে"দোস্ত, একটু রক্ত দিসিস, আরেকটু দে, আরেকটু রক্ত দে দোস্ত!। রক্ত দিতে দিতে তুই শেষ হয়ে যা আমি বেঁচে থাকি। আমরা আমরাই তো!"
শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড, জাতির যেটুকুইবা মেরুদন্ড আছে সেটা ভেঙ্গে দেবার জন্য নয়। অন্যদিকে নিত্যসামগ্রীর মুল্য বাড়িয়ে এখন যাতায়াত ভাড়া! সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়? তারউপর শিক্ষার উপর এই অতিরিক্ত ভ্যাট! এর থেকে একটা মধ্যবিত্ত পরিবারের বাবা-মায়ের অবস্থার কথা তো চিন্তাই করা যাচ্ছে না। বিষয়টা এসির বাতাসে বসে হাওয়া খাওয়া অর্থমন্ত্রীর বিবেচনায় নেয়া উচিত।
আর সেই সব পাবলিক যারা এই কর আরোপের পক্ষে মন্তব্য জানায়, তারা নিজেরা অন্যায়ের প্রতিবাদ না করুক, অন্তত এইসব লেইম যুক্তি দেখিয়ে সত্যের দিক, মানবতার দিক থেকে চিন্তা করুন এবং যারা অধিকার আদায়ে সোচ্চার, প্রতিবাদমুখর তাদের অন্তত দমিয়ে দেবার ব্যার্থ চেষ্টা থেকে বিরত থাকুন।