আমাদের দেশের রাজনীতির একটা স্বর্নযুগ ছিলো ।রাজনীতি বলতে মানুষ দেশপ্রেকিতাই বুঝত ।একজনের ডাকে ঘর থেকে বের হত ।একটা সম্মিলিত সামষ্টিক শক্তির নাম ছিলো রাজনীতি ।আর এ সামষ্টিক রাজনৈতিক শক্তির কারনেই আমরা পেয়েছি আমাদের মাতৃভাষা এবং স্বাধীনতা ।এমন একটি সামষ্টিক শক্তি আজ আমাদের দেশে অনীহার কারন হয়ে দাঁড়াচ্ছে ।রাজনৈতিক সরকারগুলো গনতান্ত্রিক অধিকারকে ফিরিয়ে দেওয়ার নাম করে ক্ষমতায় আসলেও বিরোধী দল এবং সরকার দলের মুখোমুখি অবস্থানের কারনে মানুষের গনতন্ত্র চরম হতাশার দিকে ধাবিত হয় ।গত কয়েকটি নির্বাচনই এর সাক্ষী রেখে গেছে ।নির্বাচনের আগে অনেক মারামারি কাটাকাটি হলেও মানুষ আশায় বুক বেধে আবার ভোট দিতে যায় ।কিন্তু সরকার গঠনের পরই আবার সেই একই রুপ দেখতে পায় জনগন ।এভাবেই চলছে ।আবার নির্বাচন সমাগত ।মানুষ এবার আশায় বুক বাধার আগেই নিরশার অন্ধকার এমনভাবে ঘিরে ধরছে যে, মানুষের মনে আজ শুধুই হাহাকার ।প্রত্যেকটা দলই তাদের মত করে কথা বলতে গিয়ে শেষে বলে যাচ্ছে “জনগন এটা মেনে নেবেনা ওটা মেনে নেবেনা” ইত্যাদি, ইত্যাদি ।কিন্তু যে জনগনের কথা বার বারই বলা হচ্ছে সেই জনগন কতটুকু আছে তাদের এই কথার সাথে ?
আপনি একজন দিনমজুর, একজন বড় ব্যবসায়ী এবং একজন চাকুরীজীর কাছে জিজ্ঞেস করুন দেশ বা রাজনীতি নিয়ে তার ভাবনা কি ? বেশীরভাগ উত্তরদাতার কাছ থেকে উত্তর পাবেন, আমরা রাজনীতি এত বুঝিনা সরকার বিরোধী দল একসাথে হয়ে একটা সুষ্ঠ নির্বাচন দিক আমরা বেচেঁ থাকতে যাই এবং সর্বপরি ভালো থাকতে চাই ।এই কথার পিছনে অনেকগুলো অভিমান লুপ্ত অবস্থায় আছে ।ককটেল বাজি, বোমা বাজি, খুন, রাহাজানি, গুম, ডাকাতি সব কিছু মানুষের খুব যন্তনার বিষয় হয়ে দাড়িয়েঁছে ।এর সাথে যুক্ত হয়েছে শিক্ষিতদের চাকুরী বিরম্বনা ।ঘুষ, দুর্নীতির কারনে শিক্ষিত ছেলেমেয়েরা আজ চাকুরী থেকে বঞ্চিত ।আর ভাঘ্যহত ভাবে কেনই যেন এগুলিও রাজনীতির সাথে জড়িয়ে গেছে ।মানুষ রাজনীতি বলতেই বুঝতে শিখছে ক্ষমতার অপব্যবহার আর দাম্ভিকতা ।খুব বেশী দূরে যাবার দরকার নেই সাম্প্রতিক সময়ের হরতালগুলোর দিকে খেয়াল করলে দেখা যায় একদিকে হরতাল চলছে আর অন্যদিকে মানুষ তার স্বাভাবিক কাজগুলো চালানোর আপ্রান চেষ্টা করে যাচ্চে ।রিকশা চালকেরা অলিতে গলিতে জীবনকে বাজি রেখেই রিকশা রাস্তায় নামাচ্ছে, ব্যংকের পিছনের দরজা দিয়ে লেনদেন হচ্ছে, বড় গেটে তালা দিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাথা হচ্ছে, গার্মেন্টস শ্রমিকরা উদ্যমতার সহিত কাজ চালিয়ে যাবার আপ্রান চেষ্টা চালাচ্ছে ।মানুষ কিন্তু তার দৈন্দিন কাজগুলো করেই যাচ্ছে এবং তা জীবনের ঝুকি নিয়ে হলেও ।এখন মানুষ সবাই চাচ্ছে শুধু তাদের নিজেদের জীবিকা, জীবন এবং চলাফেরার স্বাধীনতা নিয়ে ।মানুষের মধ্যে এ প্রবনতা চলে আসার একটাই কারন তা হল রাজনীতিকে শুধুই একটি ক্ষমতার দাম্ভিকতার মাধ্যম হিসাবে ভাবার ফলাফল ।
এই অবস্থায় স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে বেশীর ভাগ মানুষই রাজনীতি থেকে দূরে সরে যেতে চাইছে ।তাহলে প্রশ্ন আসতে পারে ককটেল মারে কে, মিছিল দেয় কে অথবা মিটিংএ এত লোক হয় কিভাবে ? হ্যা লোকও হয়, হরতালও পালন করা হয় এবং পিকেটিংও হয় কিন্তু এগুলো সবই একটি নির্দিষ্ট পরিমান টাকার বিনিময়ে ।যারাই এগুলি করছে তারাই সুবিধা বঞ্চিত সমাজের কিছু বখে যাওয়া মানুষ ।আর যারা খেটে খাওয়া মানুষ অথবা শিক্ষিত মানুষ তারা বেশীর ভাগই রাজনীতি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে ।এর ফলে দিনদিনই রাজনীতি থেকে মানুষের আস্থা কমে যাচ্ছে ।আর এর ফলেই রাজনীতিতেফাক গলে ঢুকে পড়ছে অপরাধীরা ।রাজনীতি হচ্ছে কুলশিত ।একশ্রেনীর শিক্ষিত মূল্যবোধ সম্পন্ন মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে রাজনীতি থেকে ।একঘরে হয়ে যাচেছ রাজনীতি ।
কিন্তু এমনটা চলতেই থাকলে অর্থাৎ যদি মেধাহীনদের হাতে ক্ষমতা যেতেই থাকে তবে দেশের সকল অবকাঠামোই ভেঙ্গে যাবে ।সবাই একসাথে হলেই এ থেকে পরিত্রান সম্ভব ।তাই একঘরে হওয়া থেকে মুক্তি আনার ভারটা আমি সবাইকেই দিতে চাই ।পাঠক সবাই মিলে ভাবুন কিভাবে আবার এ দেশের রাজনীতিকে সৃজনশীল কাজের একটি বড় মাধ্যম হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারি।এ ভাবনাটা ভাবা আমাদের সারা জাতির জন্যই আজ খুব দরকারি হয়ে পড়েছে ।
Comments (0)
বড্ড ভাবনায় ফেলে দিলে, মামু !!!
মামু ভাবনার কথাই বটে । কেউ যে ভাবে বলে মনে হয় না ।
আর ধৈর্য বাড়িয়ে লাভ নেই।
ধানমন্ডি লেকে পানির দুর্গন্ধ,
রমনা পার্কে দখল নিয়েছে দেহজীবি,
বিমান বন্দরের ঝোপ ঝাড়ে অস্পৃশ্য রাবার,
সিনেট ভবনের আড়াল গুলিতে সমন্বয় নিয়ে ব্যস্ত মানবতাবাদী!
নির্মম সত্যিটাই তুলে ধরেছেন। ভাল লাগা রেখে গেলাম -------
অনেক ধন্যবাদ । শুভেচ্ছা জানবেন ।
হুম ......... ধৈর্য্যচ্যুতি সেই কবেই ঘটেছে
কবিতা ভাল লাগিচ্ছে
শুভকামনা নিরন্তর ।