Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা

মুক্তিযুদ্ধের বিষয়ে আমরা কম বেশি জানলেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিষয়ে খুব একটা জানি না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করতে হবে- এমন কথা আমরা প্রায়ই শুনি। কেউ কেউ বুঝি কিন্তুই বেশির ভাগই বুঝি না। বুঝলেও বলতে পারি না কিংবা অন্যকে বোঝাতে পারি না। কথায় আছে সহজ বিষয়কে যায় না সহজে বোঝা। তাহলে প্রশ্ন এসে যায়- যা সহজে বোঝা যায় না তা সহজ হয় কিভাবে?তা হলো শুনতে শুনতে সহজ,কিন্তু তার অর্থ জানার চেষ্টা করা হয়নি। অনেকটা আজান শোনার মতো। প্রতিদিন শুনতে শুনতে তা সহজ মনে হয় কিন্তু তার অর্থ জানার জন্য কেউ চেষ্টা করেছে বলে মনে হয় না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিষয়টিও তেমনি সহজ হয়েও সহজ নয়। তাই তো তা জীবনে প্রভাব বিস্তার করতে পারে না। বিধায় চর্চাও হয় না। আর তখনি বোদ্ধা মহল চিৎকার করে বলতে থাকেন- মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে বাংলাপিডিয়া উল্লেখ করে- “১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয় এবং ঐ বছর ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের স্বাধীনতা  লাভের মধ্য দিয়ে এর পরিসমাপ্তি ঘটে। এই সশস্ত্র মুক্তি সংগ্রাম ছিল বহুবিধ ঘটনা,বিরূপ পরিস্থিতি,অসম আর্থিক বন্টন ব্যবস্থা ও প্রশাসনিক কর্তৃত্বের বঞ্চনাসহ গুরুত্বর বিষয়ে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্কের ক্রমাবনতির চুড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ। ১৯৪৭ সালের ব্রিটিশ শাসনের অবসানের পর থেকেই পাকিস্তানের দুই অংশের মধ্যে যেসব ইস্যুতে সম্পর্কের অবনতি ঘটে,তার মধ্যে ছিল ভুমি সংস্কার,রাষ্ট্রভাষা অর্থনীতি ও প্রশাসনের ক্ষেত্রে দুই প্রদেশের মধ্যে বৈষম্য। প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন, পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং এতদসংশ্লিস্ট অন্যান্য বিষয়।”মুক্তিযুদ্ধ আমাদের কেন করতে হয়েছিল;শুধুই কি ক্ষমতা দখল নাকি আরো অন্য বিষয় ছিল। বাংলাপিডিয়ার উপরোক্ত কোটেশন বিশ্লেষণে তা স্পষ্ট হয়। রাষ্ট্রভাষা,অর্থনৈতিক বৈষম্য,শোষণ এগুলোই ছিল মূল বিষয়। এগুলো থেকে মুক্তি পেতেই মুক্তিযুদ্ধ জরুরি হয়ে পড়ে ছিল। রাষ্ট্রভাষা নিয়ে যদি বলি,তবে রাষ্ট্রের উচিত সর্বত্র বাংলা ভাষা চালু করা। যা আজও আমাদের দেশে সম্ভব হয়নি। উচ্চ আদালত,চিকিৎসা শাস্ত্র,প্রকৌশল শাস্ত্র,উচ্চ বিত্ত,বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার ক্ষেত্রে যা আজও চালু করা সম্ভব হয়নি। রাষ্ট্র এখনো নাগরিকদের বুঝাতে পারেনি যে,মনের ভাব আমার,ভাষা সকলের। তাই তুমি মাতৃভাষার যা ইচ্ছে তাই ব্যবহার করতে পারো না। অর্থনৈতিক বৈষম্য আরো প্রকট আকার ধারণ করেছে। দেশের মোট সম্পদের আশি ভাগ এখনো মুষ্টিমেয় মানুষের হাতে। ব্যাংকের ঋণের নব্বই ভাগ তাদের দখলে। এখনো শার্টপ্যান্ট পরা ভদ্রলোকেরা হাসপাতালে যে সুবিধা পায়- লুঙ্গি পড়া মানুষ সে সুবিধা থেকে বঞ্চিত। সামগ্রিক অর্থনৈতিক সুষম ব্যবস্থা রাষ্ট্র এখনো ব্যবস্থা করতে পারেনি। সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে শাসন ব্যবস্থা। রাষ্ট্র এখনো শাসনের নামে শোষণ করে চলেছে। সবার জন্য একই শাসন ব্যবস্থা চালু করা যায়নি। থানায়,ব্যাংকে,চিকিৎসা ব্যবস্থায়,শিক্ষা ব্যবস্থায়,ভুমি ব্যবস্থাপনায়-পরিসংখ্যান গত পরিবর্তন দেখালেও সাধারণ মানুষ আজও শোষনের স্বীকার | অর্থাৎ অপরাধী যেই হোক শাসন ব্যবস্থায় সকলের একই সাজা পাবে;কিন্তু বাস্তবে তা হচ্ছে না। মুক্তিযুদ্ধের উদ্দেশ্যের মধ্যেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লুকায়িত রয়েছে। সাধারণ মানুষ ইয়াহিয়া খান,টিক্কা খানকে ঘৃণাভরে স্মরণ করে এবং বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে এটাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। নয় মাসের বর্বরতাকে স্মরণ করে সেই দিন আর চাই না এটাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। শ্রদ্ধাভরে শহীদ দিবস, স্বাধীনতা  দিবস,বিজয় দিবস উৎযাপন করে সর্বস্তরের মানুষ-এটাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। যদিও সীমিত সম্পদ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের উদ্দেশ্য সফল করতে না পারলেও - যদি জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করা যায় তবেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে আর চিৎকার করতে হবে না। যেমন সরকার যদি বিদ্যুতের চাহিদা পুরণ করতে পারে তবে জনগনই দেশকে ডিজিটাল করে ফেলবে। সরকারকে কলকারখানা তৈরি করতে হবে না- যদি রাস্তাঘাট এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করে। আমরা টেলিফোন ব্যবস্থার কথা বলতে পারি। এই একটি ব্যবস্থা যেমন লাখ লাখ মানুষের কর্ম সংস্থানের সৃষ্টি করেছে। তেমনি বিভিন্ন সেকটরের দক্ষ জনসংখ্যা তৈরির মাধ্যমে চালু করে জনগনকে কর্মমূখী করতে হবে। তবেই স্বাধীনতার  চেতনা, বুদ্ধিজীবীর বাণী থেকে সরে গিয়ে বইয়ের পাতা থেকে বাস্তবে দেখা যাবে। যেমন আমার মতো সাধারণ মানুষ,যে কিনা মুক্তিযুদ্ধের অনেক পরে জন্মগ্রহণ করেও মুক্তিযুদ্ধকে স্মরণ করি। যেহেতু একটি ভালো উদ্দেশ্যে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল সেহেতু আমি তা ভুলতে পারি না। আমি লেখনির মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করি - এটাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। তবে কোন সরকারই এককভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বাস্তবায়ন করতে পারবে না,যদি না জনগন মুক্তিযুদ্ধের মতো একত্রিত না হয়ে সরকারকে চাপ প্রয়োগ না করে। মুখ্য ভুমিকাটা নাগরিককেই পালন করতে হবে- মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে অক্ষন্ন রাখতে।

 

০ Likes ০ Comments ০ Share ২৮৩ Views

Comments (0)

  • - এই মেঘ এই রোদ্দুর

    ভোট দিলাম কিন্তু

    • - টি.আই.সরকার (তৌহিদ)

      অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা আপু ।