Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

মানবতাবাদী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও ভাষা সৈনিক ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের ১২৭তম জন্মদিনে শুভেচ্ছা

ভাষা সৈনিক ও সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত) মহান ভাষা সৈনিক, অভিজ্ঞ সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত একজন বাঙালি আইনজীবী সমাজকর্মী ও রাজনীতিক। তাঁর পরিচিতি মূলত একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে। দেশ বিভাগের আগে ভারতীয় উপমহাদেশের ভারত অংশে এবং পরে পূর্ব পাকিস্তানে তিনি রাজনীতিবিদ হিসেবে সক্রিয় ছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রথমপর্বের শহীদ ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত ভাষা আন্দোলনের প্রথম নায়ক। আজ এই মহান মানবতাবাদী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের ১২৭তম জন্মদিন। জন্মদিনে তাঁর প্রতি আমাদের গভীর শ্রদ্ধা। 

(ধীরেন্দ্রনাথ দত্তেরবসত বাড়ির এ্খনকার অবস্থা)

ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ১৮৮৬ সালের ২ নভেম্বর তৎকালীন বেঙ্গল প্রদেশের ত্রিপুরা জেলার (বর্তমানের বাংলাদেশ) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার রামরাইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা জগবন্ধু দত্ত ছিলেন কসবা ও নবীনগর মুন্সেফ আদালতের সেরেস্তাদার। ধীরেন্দ্রনাথ পড়াশোনা করেছেন নবীনগর হাই স্কুল, কুমিল্লা কলেজ, এবং কলকাতার সুরেন্দ্রনাথ কলেজে। তিনি ১৯০৪ সালে নবীনগর হাই স্কুল হতে প্রবেশিকা, ১৯০৬ সালে কুমিল্লা কলেজ থেকে এফ.এ. ১৯০৮ সালে কলকাতা রিপন কলেজ হতে বি. এ এবং ১৯১০ সালে একই কলেজ হতে বি.এল পরীক্ষা পাস করেন। এর পর তিনি প্রায় একবছরকাল কুমিল্লার মুরাদনগর বাঙ্গুরা উমালোচন হাই স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে কাজ করেন। আইন ব্যবসা করার জন্য ১৯১১ সালে তিনি কুমিল্লা জেলা বারে যোগদান করেন। তিনি ১৯০৭ সালে ‘ত্রিপুরা হিতসাধনী সভা’র সেক্রেটারি নির্বাচিত হন এবং ১৯১৫ সালের ভয়াবহ বন্যার সময় বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণের কাজে অংশগ্রহণ করেন। মহাত্মা গান্ধীর আদর্শ অনুসরণে তিনি ‘মুক্তি সংঘ’ নামে একটি সমাজকল্যাণমূলক সংস্থা গঠন করেন। কুমিল্লার ‘অভয় আশ্রম’-এর কর্মকাণ্ডের সাথেও তিনি জড়িত ছিলেন এবং ১৯৩৬ সালে ত্রিপুরা (বর্তমানে কুমিল্লা) জেলা বোর্ডের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষের সময় ত্রাণসামগ্রী বিতরণে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। 

১৯৪৮ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পযর্ন্ত সকল আন্দোলনে ধীরন্দ্রেনাথ দত্তের ছিল অকুন্ঠ সমর্থন ও অগ্রনী ভূমিকা। পাকিস্তান গন পরিষদে প্রথম বাংলা ভাষার মর্যদা দাবির প্রস্তাব উত্থাপক ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত। ভাষা আন্দোলনের অন্যতম রূপকার ছিলেন ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ১৯৪৮ সালের ২৪শে জানুয়ারি তিনিই প্রথম পাকিস্তানের আইন পরিষদের অধিবেশনে সংখ্যাগরিষ্ঠের ভাষা বাংলাকে রাস্ট্র ভাষার মযার্দাদানের আহবান জানিয়েছিলেন। সেটা অনুষ্ঠিত হয়েছিল করাচিতে। সেদিন ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত সেই প্রস্তাবনাতে বলেছিলেন, 'Out of six crores and ninety lakhs people inhabiting this state, 4 crores and 40 lakhs of people speak Bengali language. So, sir, what should be the State language of the state? The state language of the state should be the language which is used by the majority of the people of the state, and for that, sir, I consider that Bengali language is a lingua franca of our state .' 

(সহযোদ্ধাদের সাথে ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত)

পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠি সেদিন ধীরেন্দ্র নাথ দত্তের প্রস্তাবে এবং এর সর্মথনে আইনসভায় তাঁর ভাষনে বিচ্ছিন্নতার গন্ধ আবিস্কার করেন এবং তাকে ভারতীয় দালাল হিসেবে চিহ্নিত করার অপপ্রয়াস চালায় । পাকিস্তানে সামরিক শাসন জারি হওয়ার পর ১৯৬০ সালে ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের উপর ‘এবডো’ (Elective Bodies Disqualification Order) প্রয়োগ করা হয়। ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় তাঁকে গৃহবন্দি করে রাখা হয় এবং তখন থেকে তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকেন। এতদসত্ত্বেও বাঙালি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত গুরুত্বপূর্ণ বাঙালি নেতৃবৃন্দের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক বজায় রাখতেন। ১৯৭১ সালে সীমান্ত পার হয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিল তাঁর। কিন্তু দেশের মানুষের কথা ভেবে তিনি তা করেননি। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর গণহত্যার সুচনা পর্বেই ১৯৭১ সালের ২৯ মার্চ রাতে পাক হানাদার বাহিনী তাঁকে ও তাঁর কনিষ্ঠ পুত্র দিলীপ দত্তকে ধরে নিয়ে যায়। কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখার অপরাধে তাঁর উপর নির্মম নির্যাতন চালানো হয়। হানাদার বাহিনী তাঁর হাঁটু ভেঙে দেয় এবং চোখ উপড়ে ফেলে। অবশেষে ১৪ এপ্রিল তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হয়। স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টা এই বীর দেখে যেতে পারেননি তাঁর রক্তের উপরে জন্ম নেয়া স্বাধীন বাংলাদেশকে। 

আজ এই মহান মানবতাবাদী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের ১২৭তম জন্মদিন। জন্মদিনে তাঁর প্রতি আমাদের গভীর শ্রদ্ধা

০ Likes ০ Comments ০ Share ৯৭৬ Views

Comments (0)

  • - লুব্ধক রয়

    ধন্যবাদ।

    ভালো লেগেছে কবিতাটি।

    ভাল থাকবেন। শুভকামনা রইলো।

    - রোদেলা

    সাবলীল সুন্দরের প্রকাশ।

    • - শামস রাসিদ শাওন

      ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।