Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

ভালোবাসি

কখনো সম্পর্কগুলো হয়তো বোঝা হয়ে উঠেনা কোনদিকে গড়াচ্ছে। হয়তো ভালোবাসা, গুরুত্ব, অনুভূতি এসব কিছুর কোন ঘাটতি নেই। তবুও কোন এক অজানা কারণে, অজানা ভয়ের কারণে হয়তো বলা হয়ে উঠেনা তখন অনেক কথাই। অথচ বুঝতে পারে তারা অনেক কিছুই তার। শুধু বলা হয়েই উঠেনা কেউ কাউকে। এই না বলাটাই কখনো কখনো সম্পর্কগুলোকে টিকিয়ে রাখে নতুবা হারানোর সেই আশংকা থেকে মুক্তি দেয়।

মাঝ রাতে মোবাইলের রিং বাজছিল। হিমেল ঘুমিয়ে ছিলো তাই বুঝতেছিলো না। দুই/তিন বার রিং বাজার পর হিমেলের বোঝে আসলো কেউ রিং দিচ্ছে। তবুও রিসিভ করতে পারলোনা। অপরপ্রান্তে অহনার তাই খুব রাগ উঠছিল। হিমেল মেসেজ দেখলো। "এই কি হলো? কথা কওনা কেন? " অহনা মেসেজে বললো। হিমেল তখন মেসেজ দিয়ে বললো "আমি কোথায় ছিলাম? তোমার সাথেই তো কথা বলছিলাম, তাহলে তুমি আবার এসব বলছো কেন? ""এই তোমার মাথা খারাপ হয়ে গেছে, তুমি ঘুমাও ", অহনা মেসেজ করে বললো। এরপর হিমেল ঘুমিয়ে পরলো।

ছুটির দিন আজ। সকাল নয়টা/দশটা বেজে গেল এখনো অহনা হিমেলের কোন খবর নিচ্ছেনা। হিমেল বারবার ফোনের দিকে তাকাচ্ছে অহনার একটি মেসেজের জন্য। হঠাতই তখন অহনা ফোন দিয়ে বসলো।

-হ্যালো (অহনা)
-হুমম (হিমেল)
-কি করো?
-কিছুনা, বসে আছি। তুমি?
-আমি ঘুম থেকে উঠলাম।
-রাতে আমার কি হইছিলো বলো তো?
-কি জানি উল্টাপাল্টা বলছিলে!
-আমার আসলে একটু চোখ লেগে গেছিল আর স্বপ্নও দেখা শুরু করলাম। আর স্বপ্নে আমি তোমার সাথেই কথা বলছিলাম তাই পার্থক্য করতে পারছিলাম না।
-ওয়াও তুমি আমাকে স্বপ্নে দেখছো?
-হুমম, কেন তুমি দেখোনা আমাকে?
-না, আমি স্বপ্নই দেখিনা। স্বপ্ন না দেখার জন্য দোয়া পড়ে ঘুমাই।
-কেন?
-আমি শুধু খারাপ স্বপ্ন দেখি তাই।
-হুমম
-তুমি কোথায় আছ এখন?
-বাসায়, কেন?
-দেখা করতে পারবে এখন আমার সাথে?
-কোথায়?
-পারবে কিনা বলো আগে।
-পারবো, কোথায় আসতে হবে তাতো বলবে!
-ঐদিন যেখানে দেখা করছিলাম সেখানেই।
-আচ্ছা আসতেছি।

হিমেল আর অহনার পরিচয় অনেক আগে থেকেই। আগে এতোটা সখ্যতা ছিলোনা তাদের মধ্যে। কিন্তু ইদানিং তাদের মধ্যে বেশ ভালোই সখ্যতা সৃষ্টি হয়ে গেছে। পারলে সারাদিনই যেন তারা একজন অপরজনের সাথে কথা বলে। ইদানিং তো প্রায়ই একজন আরেকজনকে " ভালোবাসি " বলাও শুরু করে দিয়েছে। হিমেলের ভালোই লাগে অহনার মুখে "ভালোবাসি তোমাকে " শুনতে। তারা দুইজন দুইজনকে ভালোবাসে, বলাও হচ্ছে। শুধু মনের মধ্যে একটা কথাই দুইজনই লুকিয়ে রাখছে। হয়তো সেটা বলার সময় এখনো হয়নি নতুবা হারানোর ভয়ে।

হিমেল অহনার সাথে দেখা করতে গেল। আজ অহনাকে খুব সুন্দরী লাগছে। কালো রংয়ের একটা জামা তার সাথে কালো রংয়ের ওড়না আর ঠোঁটে হালকা পিংক রংয়ের লিপস্টিক। আজ অন্য দিনের চেয়ে অনেক সুন্দরী লাগছে অহনাকে। অহনার হাসি, তাকানো সবকিছুই হিমেলের খুব ভালো লাগে। হিমেল অহনার সবকিছুই ভালোবাসতে শুরু করেছে এখন। অহনাও হিমেলের সবকিছুই ভালোবাসতে শুরু করেছে। শুধু তাদের মধ্যে বলাটাই হচ্ছেনা শুধু।

-এই যে তুমি কি ঠিক আছো?
(অহনা)
-হুমম
(হিমেল
-তাহলে আমি কথা বলতেছি, তুমি চুপচাপ ঐদিকে তাকিয়ে আছ কেন?
-ভাবতেছি তোমার হাতটা আবার ধরবো ) কিনা?
-বাহ! সাহস বেড়ে গেছে। আমি ভাবলাম শক খেয়ে জ্ঞান হারালে নাকি আবার।
-এই যে আবার হাত ধরলাম, জ্ঞান হারাইছি?
-হি হি হি

হিমেল আর অহনা আজ রিকশা দিয়ে একটু ঘুরাঘুরি করছে। অহনা ভাবতো হিমেল ওর হাত ধরতে ভয় পায় তাই সে আজ ধরে প্রমাণ করে দিলো সে আর ভয় পায়না এখন অহনার হাত ধরতে। হিমেল অহনাকে সব সময় বলে "তোমার হাত আমি কখনো ছাড়বোনা। " অহনাও চায়না হিমেল কখনো ওর হাত ছেড়ে দিক।

একদিন হিমেল অহনার সাথে কথা বলতে পারছিল না দেখে খুব মন খারাপ হয়ে গেছিল তার। সে জানে অহনা ব্যস্ততার কারণে কথা বলতে পারছিল না। কিন্তু তবুও অভিমান করে বসে ছিল। হিমেল অহনাকে খুব ভালোবেসে ফেলেছিল তাই একটু সময় কথা না হলেই তার খুব কষ্ট হতো। অহনারো যে হয়না তা কিন্তু নয়। অহনা হিমেলকে মিস করলে কাঁদে কথা বলার সুযোগ পায়না দেখে। তাদের মাঝে ভালোবাসা এতোটাই গভীর হওয়ার পরও দুইজনই চুপ হয়ে ছিল শুধু হারানোর ভয়েই।

সেদিন হিমেল খুব অভিমান করছে শুনে অহনারও খুব রাগ উঠছিল তার উপর। কারণ অহনাও তো হিমেলকে মিস করে খুব। তাই চুপ থেকে শুধু কাঁদছিল। হিমেল তা বুঝতে পেরে অনেক অনুনয় করছিল আর না কাঁদার জন্য। অনেক্ষণ পর অহনা হিমেলের সাথে কথা বললো।

-শুনো তোমাকে আই লাভ ইউ বললে আমার কেমন যেন লাগে। মনে হয় হৃৎপিণ্ডের মধ্য দিয়ে গরম বাতাস বইয়ে যায় আর খুব কান্না পায়।
(অহনা)
-কি বলো এসব তুমি? দেখা হলে মনে করিয়ে দিও তো কথাটা।
(হিমেল)
-আচ্ছা বাদ দেও এখন। অন্য কথা বলো।
-আরে বাদ দিবো কেন? সিরিয়াস বিষয় এটা। আই লাভ ইউ তো শুনতেই হবে আমাকে।
-আচ্ছা শুনো।
-এরকম হলে কি হবে? যদি হৃৎপিণ্ড জ্বলে যায় বেশি গরমে তখন কি হবে?
-আরে কিছু হবেনা। এই যে শোন "আই লাভ ইউ "

সেদিন হিমেল আরও স্পষ্ট বুঝতে পারলো অহনাও তাকে খুব ভালোবেসে ফেলেছে। আর অহনার ভালোবাসাটা অনেক নিখুঁত, অনেক পবিত্র। হিমেল এই ভালোবাসাটাই চায় শুধু। হিমেলও এমনিভাবেই অহনাকে আজীবন পাশে পেতে চায় যেখানে শুধু ভালোবাসা আর ভালোবাসা থাকবে, থাকবে একে অপরের উপর বিশ্বাস আর ভরসা।

১ Likes ০ Comments ০ Share ৫৪০ Views