Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

রাজীব নূর খান

১০ বছর আগে

ভবিষ্যৎ ভাবনা

বর্তমানে দেশের অবস্থা ভালো না। সারা বাংলাদেশের অবস্থাই ভালো না। অল্প কিছু নোংরা মানুষ মিলে দেশের অবস্থা খারাপ করে রেখেছে। তাদের বিচার করবেন আল্লাহ। খবরের কাগজ পড়া বাদ দিয়ে দিয়েছি। টিভি দেখা বাদ দিয়েছি। পত্রিকা এবং টিভি- মন মেজাজ আরও বেশী বিক্ষিপ্ত করে দেয়। আমি থাকতে চাই- সহজ সরল শান্ত হয়ে থাকতে। টিভির খবর আর পত্রিকার খবর পড়লে- মুহূর্তেই মেজাজ চরম বিক্ষিপ্ত হয়ে যায়। কারো সঙ্গ ভালো লাগে না। ওই...মেজাজ বিক্ষিপ্ত হয়ে যায়।

কাজেই ঠিক করেছি গ্রামে চলে যাব। যদিও সারা জীবন ঢাকায় থেকেছি। গ্রামে যাবো, চাষবাস করবো। মূরগী পালব,পুকুরে মাছ চাষ করবো। একদন টাটকা শাক সবজি খাবো। অলরেডী আমি কৃষিকাজ নিয়ে ব্যাপক পড়াশোনা শুরু করেছি। আমার নিজের কোনো জমিজমা নেই। অন্যের জমি বর্গা নিবো। যদি আমার সাথে বউ গ্রামে যেতে রাজী না হয়- তাহলে আমি একাই যাবো। আমার ধারনা বউ রাজী হবে। সে আমাকে প্রচন্ড ভালোবাসা। 

ফজরের আযানের পর-পর ঘুম থেকে উঠেই, পানি ভাত লবন আর মরিচ দিয়ে খেয়ে-  গলায় গামছা বেঁধে নেমে যাবো জমিতে। আমন ধান লাগাবো। ধানক্ষেতের খুব যত্ন নিবো। অনেক ফসল হবে। নিজের জন্য রেখে বাকিটা বাজারে বিক্রি করে দেব। একটু একটু করে টাকা জমিয়ে- দুইটা গরু কিনব। প্রতিদিন সকালে গরুর দুধ বাজারে বিক্রি করবো। অন্যের পুকুর লিজ নিয়ে বিসমিল্লাহ বলে মাছ চাষ শুরু করবো। আমার বিশ্বাস আমি কৃ্ষি কাজে অনেক ভালো করবো।

জমিতে কাজ করতে-করতে দুপুর হয়ে যাবে। দুপুরবেলা বউ খাবার নিয়ে আসবে। একটা গাছের নীচে বসে খাবো। খাবার মেন্যু সামান্য গরম ভাত, আলু ভর্তা অথবা কোনো শাক বাজি। সাথে থাকবে কাচা মরিচ এবং এক টিকরো পেঁয়াজ। গাপ গাপ করে করে হাসি মুখে খেয়ে নিবো। বউ ছোট ধমক দিয়ে বলবে- এই আস্তে খাও তো। আমি বলব- আরে...না, জমিতে সেচ দিতে হবে। অনেক কাজ বাকি। খাওয়া শেষ করে বউ এর ছেঁড়া শাড়ির আঁচলে মুখ মুছতে মুছতে বলল- বউ সামনের বৈশাখে তোমাকে দু'টা নতুন শাড়ি কিনে দেব।
সারাদিন কাজ শেষ করে বারান্দায় বসবো। বউ চা বানিয়ে হাতে দিবো। টুকটাক কথা বার্তা বলব। নিজের পুকুরের মাছ এনে বউ কে বলব- আজ এই তেলাপিয়া মাছ ভালো করে ভেজে রান্না করো তো। বউ রান্না করবে, আমি বউ এর পাশে চুপ করে বসে থাকব। রান্না হবে মাটির চুলায়। রাতে দুইজন মিলে খুব আরাম করে খাবো। ঘুমানোর আগে বউ সুন্দর করে সাজবে। চোখে মোটা করে কাজল দিবে। কপালে টিপ পড়বে। আমি বউকে মন ভরে দেখব। তারপর ফু দিয়ে কুপি নিভিয়ে বউকে জড়িয়ে ধরব।

এক বছর পর হাতে বেশ কিছু টাকা জমবে। অবশ্য ততদিনে সংসারে এক-দুইটা বাচ্চা এসে যাবে। ততদিনে একটা নিজের পুকুর হয়ে যাবে। দুইটা গরু হয়ে যাবে। অল্প পরিমান জমির মালিক হয়ে যাবো। সংসারে কোনো অভাব থাকবে না। তাছাড়া আমি বুদ্ধি করে বাড়ির চারপাশে- ভালো জাতের নানান ফলের গাছ লাগিয়ে দেব। কোনো কিছুই আর বাজার থেকে কিনতে হবে না। একদম ফরমালিন মুক্ত- মাছ দুধ ফল। আহ ! ভুলেও আর শহরে যাবো না। নো নেভার। কাউকে শহরে পাঠিয়ে প্রিয় বই গুলো কিনে আনব। অবসর সময়ে পড়বো।

ধানক্ষেত, পুকুর, গরু বাছুর আর নিজের বউ বাচ্চা নিয়ে খুব ব্যস্ত হয়ে পড়ব। পত্রিকা পড়ব না, টিভিতে খবর দেখব না। মন-মেজাজও বিক্ষিপ্ত হবে না। শান্তি আর শান্তি। যখন কোনো কাজ থাকবে না, উঠানে পাটি বিছিয়ে বউ বাচ্চা নিয়ে গল্প করব। আমি অনেক গল্প জানি। বউ বাচ্চারা অবাক বিস্ময়ে আমার গল্প শুনবে- অনেকদিন আগে একটা গাছ ছিল। একটা ছোট ছেলে প্রতিদিন সেই গাছের কাছে আসত। আর গাছতলায় পরে থাকা পাতা কুড়িয়ে সে নানান ধরনের খেলনা বানাত। কখনো বানাত চশমা, কখনো ঘড়ি, কখনো মুকুট। ছেলেটা সেই পাতার মুকুট মাথায় দিয়ে রাজা সাজত। যেন সে মাঠের রাজা, আর গাছটা তার রাজপ্রাসাদ। কখনো কখনো ছেলেটা গাছ বেয়ে উপরে উঠত, খেলত, আবার কখনো গাছের ডাল ধরে দোল খেত। আর ক্লান্ত হয়ে পড়লে সে গাছের ছায়ায় ঘুমাত।

০ Likes ৩ Comments ০ Share ৪১৮ Views

Comments (3)

  • - ইকবাল মাহমুদ ইকু

    অনেক ভালো লাগলো শাহআজিজ ভাই... শুভেচ্ছা জানবেন 

    - তৌফিক মাসুদ

    ভাল লাগল গল্প। খুবই মর্মান্তিক। আমাদের দেশে এমন ঘটনা আর দেখতে চাইনা। যার রক্ষক দাবী করে  তারা যেন আর ভক্ষক না হয়। ভাল লাগল গল্প। খুবই মর্মান্তিক। আমাদের দেশে এমন ঘটনা আর দেখতে চাইনা। যার রক্ষক দাবী করে  তারা যেন আর ভক্ষক না হয়।